বাংলাদেশ রিপোর্ট | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
গতকাল বুধবার (২৭ মার্চ) বিকেলে ওজোন পার্কে উন রোজারিও (১৯) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক বাংলাদেশী কিশোর পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। এনওয়াইপিডি’র ভাষ্য অনুসারে উক্ত যুবক কুইন্সের এক অ্যাপার্টমেন্টে পুলিশ অফিসারদের দিকে কাঁচি হাতে হামলা চালাতে এলে পুলিশ তাকে গুলি করে। ওজোন পার্কের ১০১-১২ ১০৩ স্ট্রিটের এক অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিং এর দোতলার এক অ্যাপার্টমেন্টে এ দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। এনওয়াইপিডির চিফ অফ পেট্টল জন শেল জানান, ৯১১ এ কল পেয়ে দুই মিনিটের মধ্যে বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে পুলিশ অফিসাররা ঘটনাস্থলে পৌছেন এবং প্রাথমিকভাবে টিজার ব্যবহার করে তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকে নিরস্ত করতে না পেরে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়েন।
পুলিশ প্রধান বলেন, টিনেজার ৯১১ এ কল করে, যদিও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার খবরে তার মা ৯১১ ফোন করে জানায় যে, তার পুত্র মাদক সেবন করে বেপরোয়া আচরণ শুরু করেছে। শেল বলেন, কিশোরটি মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় ছিল এবং পুলিশ ও তার মধ্যে পরিস্থিতি বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌছেছিল। তারা তাকে আয়ত্তে আনার চেষ্টা করলে তিনি ড্রয়ার থেকে কাঁচি বের করে পুলিশের দিকে তেড়ে আসেন। অফিসাররা টিজার ব্যবহার করে। এ সময়ে কিশোরের মা তার ছেলের সহায়তায় এগিয়ে আসেন এবং দুর্ঘটনাবশত টিজার তার শরীর থেকে পড়ে যায়। এ সময় কিশোরটি আবার কাঁচি তুলে নেয় এবং অফিসারদের আক্রমণ করতে উদ্যত হয়। এ পরিস্থিতিতে তাদের পক্ষে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করা ছাড়া উপায় ছিল না বলে শেল জানান। ঘটনাস্থল থেকে তাকে হাসপাতালে নেয়ার পর তার মৃত্যু হয়।
উইন রোজারিও’র মা ইভা কস্টা (৪৯) বিলাপ করে বলছিলেন, “আমার ছেলে মরে গেছে। সে নিস্পাপ ছিল। সে পুলিশকে ভয় করেনি। সে তাদের ওপর হামলা করেনি।” তিনি তার পুত্রের প্রাণহানি তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেন। তার অপর পুত্র তাকে সান্তনা দিতে চেষ্টা করছিল। উল্লেখ্য, পরিবারটি ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসার পর কুইন্সে বসবাস করছিল।
উইন রোজারিও’র পিতা ফ্রান্সিস রোজারিও (৫২) বলেন, “আমরা সুবিচার চাই। আমার ছেলের কিছু মানসিক সমস্যা ছিল। কিন্তু পুলিশ আমাদের কথায় কান দেয়নি।” ফ্রান্সিস জেএফকে এয়ারপোর্টে কাজ করেন। ঘটনার খবর পেয়ে তিনি পরিবারের সঙ্গে যোগ দেন। তাদের এক প্রতিবেশি সাংবাদিকদের জানান, মানসিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য উইন রোজারিওকে ছয় মাস আগে জ্যামাইকা হসপিটালে ভর্তি করা হয়েছিল। হাসপাতাল থেকে আসার পর সে ভালো ছিল এবং তার আচরণ ছিল বিনয়ী। সে কখনো মন্দ কাজে জড়ায়নি। উইনের ছোট ভাই উৎস রোজারিও’র মতে তার ভাইয়ের মানসিক অবস্থা মাসে একবার খারাপ থাকতো। অনেক সময় সে ওষুধ সেবন করতো না। এছাড়া সে খুব ভালো মানুষ ছিল। তার জীবনের বড় লক্ষ্য ছিল আমেরিকার সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়া।
Posted ১০:২৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh