বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
যারা যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন অথবা স্থায়ী বাসিন্দা বা গ্রীনকার্ডধারীও নন, তারা এখন থেকে প্রথমবারের মত এমপ্লয়মেন্ট অথরাইজেশন ডকুমেন্ট (ইএডি) বা ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করলে বৈধ অবস্থান সাপেক্ষে একই সঙ্গে নতুন সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড বা পুন:স্থাপিত কার্ড পাবেন। ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস গত ২৭ সেপ্টেম্বর সোমবার এ সম্পর্কে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে। এজন্য তাদেরকে সোস্যাল সিকিউরিটি অফিসে গিয়ে আবেদন করার প্রয়োজন পড়বে না। ইমিগ্রান্টদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রাথমিক অবস্থায় সবচেয়ে কাংখিত গুরুত্বপূর্ণ দুটি ডকুমেন্ট হচ্ছে সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড ও এমপ্লয়মেন্ট অথরাইজেশন ডকুমেন্ট, যার মাধ্যমে ইমিগ্রান্টরা বৈধভাবে আয় করে অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন। বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার আবেদনের মাধ্যমেও তারা সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন।
আমেরিকান ইমিগ্রেশন লইয়ার্স এসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটে পোস্ট করা ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিসের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বিদেশি নাগরিকরা যখন আই-৭৬৫ ফরমে এমপ্লয়মেন্ট অথরাইজেশনের জন্য আবেদন করেন তখন তারা সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। অথবা ইউএসসিআইএস এর মাধ্যমে আই-৪৮৫ ফরমে “অ্যাপ্লিকেশন টু রেজিস্টার পার্মানেন্ট রেসিডেন্স অর এডজাস্ট স্ট্যাটাস” আবেদন করতে পারেন। এই দুটি ফরমের মাধ্যমে সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ডের জন্য আবেদন করলে সোস্যাল সিকিউরিটি অফিসে ধর্না দেয়ার কোন প্রয়োজন পড়বে না।
ডিপার্টমেন্ট অফ জাস্টিস আরো জানিয়েছে যে, ইমিগ্রেশন ফরমের মাধ্যমে সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারেন যদি সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড না থাকে, হারিয়ে বা নষ্ট হয়ে যায়, ‘রেষ্ট্রিক্টেড’ সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ডকে ‘আররেষ্ট্রিক্টেড’ কার্ডে রূপান্তরিত করতে হয়, অথবা নাম পরিবর্তিত হলে কার্ডে নতুন নাম যুক্ত করার জন্য।
ইমিগ্রান্টরা নতুন প্রক্রিয়ায় সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ডের জন্য আবেদন করলে তারা তাদের ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যে সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড পেয়ে যাবেন বলে জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে। যেসব গ্রীনকার্ডধারী এন-৪০০ ফরমের মাধ্যমে ন্যাচারালাইজেশনের আবেদন করবেন, অদূর ভবিষ্যতে তারা একই ফরমে তাদের নতুন সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড অথকা পুন:স্থাপনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, এর আগে বাইডেন প্রশাসন ঘোষণা করেছে যে যুক্তরাষ্ট্রে সকল বৈধ স্থায়ী বাসিন্দারা এখন থেকে গ্রীনকার্ড ও সোস্যাল সিকিউরিটি নম্বর একসাথে পাবে। এর ফলে প্রথমবারের মত সকল নতুন বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা ও যারা তাদের বৈধ স্ট্যাটাস সমন্বয় করবে তারা এই দ্বৈত প্রক্রিয়া এড়ানোর সুযোগ পাবেন। এতদিন যাবত নিয়ম ছিল যে, কোনো বিদেশি নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার জন্য আবেদন করার বিভিন্ন শ্রেনির যে কোনো একটির আওতায় আবেদন করে বৈধতার অনুমোদন পাওয়ার পর সোস্যাল সিকিউরিটি এডমিনিষ্ট্রেশনের দফতরে গিয়ে নতুন সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড পাওয়ার জন্য অথবা পুরনো সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ডের পরিবর্তে আনরেষ্ট্রিক্টেড কার্ড ইস্যু করার জন্য আবেদন করতে হতো, যাতে তারা শর্তহীনভাবে যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো স্থানে কাজ করার সুযোগ পায়।
নতুন পদ্ধতি বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি গত আগস্ট মাসে গ্রীনকার্ডের জন্য আবেদন অথবা স্ট্যাটাস এডজাস্টমেন্টের জন্য আবেদন ফরম ‘আই-৪৮৫’ এর নতুন সংস্করণ প্রকাশ করেছে, যার মধ্যে এখন সোস্যাল সিকিউরিটি নাম্বার বা সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড প্রতিস্থাপন সম্পর্কিত প্রশ্ন অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস এর ডাইরেক্টর এম জাদো বলেছেন, সোস্যাল সিকিউরিটি এডমিনিষ্ট্রেশনের সঙ্গে আমাদের এই অংশীদারিত্ব যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন ব্যবস্থা পরিচালনায় আরো দক্ষতা নিশ্চিত করবে এবং আবেদনকারীদের আর সোস্যাল সেকিউরিটি অফিসে যেতে হবে না এবং তারা সময়ের অহেতুক অপচয় থেকে রক্ষা পাবেন। তিনি আরো বলেন, বাইডেন প্রশাসন এবং ইউএসসিআইএস এর প্রধান অগ্রাধিকার হলো, অপ্রয়োজনীয় আমলাতান্ত্রিকতার অবসান ও জনসেবামূলক এজেন্সিগুলোর মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয় ও সহযোগিতা গড়ে তোলা।
উল্লেখ্য, ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস বার্ষিক প্রায় ৫ লাখ ৭৬ হাজার ‘আই-৪৮৫ ফরম’ প্রক্রিয়া করে এবং আবেদনকারীদের আবেদন অনুমোদিত হওয়ার পর তারা গ্রীনকার্ড পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে অবস্থান ও কাজ করার অধিকার লাভ করে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘আই-৪৮৫ ফরম’ প্রক্রিয়ার জন্য ফি এর পরিমাণ ১,১৪০ ডলার। নতুন পদ্ধতিতে সোস্যাল সিকিউরিটি কার্ড প্রক্রিয়া যুক্ত হলেও ফি এর হার বৃদ্ধি করা হবে না। আউএসসিআইএস আরো জানিয়েছে যে, আবেদনকারীদের ‘আই-৪৮৫ ফরম’ অনুমোদিত হওয়ার পর সোস্যাল সিকিউরিটি এডমিনিষ্ট্রেশনে তাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তথ্য ইলেট্রনিক্যালি পাঠিয়ে দেয়া হবে এবং প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে সোস্যাল সিকিউরিটি এডমিনিষ্ট্রেশন যার ক্ষেত্রে যা প্রযোজ্য- হয় মূল সোস্যাল সিকিউরিটি নম্বর দেবে অথবা নতুন কার্ড প্রতিস্থাপন করবে। এজন্য আবেদনকারীকে বাড়তি কোনো ঝামেলা পোহাতে হবে না।
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন “রেস্টোরিং ফেইথ ইন আওয়ার লিগ্যাল ইমিগ্রেশন সিস্টেম” অর্থ্যাৎ আমাদের বৈধ ইমিগ্রেশন ব্যবস্থায় আস্থা পুনরুদ্ধার’ শীর্ষক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করার পর থেকেই ইউএস সিটিজেনশিপ এন্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস ট্রাম্প প্রশাসনের মেয়াদে ইমিগ্রেশন ব্যবস্থাকে জটিল করার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল, সেগুলোকে পরিবর্তন করে যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশিদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়াকে সহজতর করার উদ্যোগ নিয়েছে। ট্রাম্পের সময় সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছিল ২০১৯ সালের পাবলিক চার্জ রুল, যার মাধ্যমে স্বল্প আয়ের ইমিগ্রান্টদের গ্রীনকার্ড পাওয়ার পথ রুদ্ধ করা হয়েছিল, বাইডেন প্রশাসন সেটিকে বাতিল করায় ২০১৯ সালের পাবলিক চার্জ রুল আর কার্যকর নেই।
Posted ১১:২৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh