বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২১
জর্জিয়ার ইউএস সিনেটের দু’টি আসনেই ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। গত ৫ জানুয়ারী, মঙ্গলবার বহুল আলোচিত রানঅফ ইলেকশনে রিপাবলিকানরা ধরাশায়ী হন ডেমোক্র্যাটদের নিকট।
একটি আসনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কংগ্রেসম্যান রাফায়েল ওয়ারনকের নিকট পরাজিত হন রিপাবলিকান প্রার্থী সিনেটর কেলী লোয়েফলার। সর্বশেষ প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী এ আসনে রাফায়েল ওয়ারনক পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৬ শতাংশ ভোট। তার প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ২২ লাখ ৩০ হাজার ২৩১। পক্ষান্তরে কেলী লোয়েফলার ভোট পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৪ শতাংশ। তিনি পেয়েছেন মোট ২১ লাখ ৭৬ হাজার ৪৮ ভোট। জর্জিয়ার ইউএস সিনেটের অপর আসনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জনওসফ হটিয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী সিনেটর ডেভিড পেডরুকে। জনওসফের পক্ষে ভোট পড়েছে ৫০দশমিক ১৯ শতাংশ। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন ২২লাখ ১১হাজার ৬০৩ ভোট। তার প্রতিদ¦ন্দ্বি ডেভিভ পেরডু পেয়েছেন ৪৯ দশমিক ৮শতাংশ ভোট। তার প্রাপ্ত মোট ভোটের সংখ্যা ২১ লাখ ৯৪ হাজার ৫৭৮। জর্জিয়া সিনেটে রানঅফ ইলেকশনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থীদ্বয়ের ঐতিহাসিক বিজয় ইউএস সিনেটে ভারসাম্যতা নিয়ে আসবে। ১১৭তম ইউএস কংগ্রেসের ১০০টি আসনের মধ্যে ইতোমধ্যেই ৫০টি আসনে রয়েছে রিপাবলিকান সিনেটর। পক্ষান্তরে ৪৮টি আসন রয়েছে ডেমোক্র্যাটদের দখলে। সিনেটে সংখ্যা গরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ৫১টি আসন। বিগত ইউএস কংগ্রেসের সিনেটে ছিলো রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা।
ফলে ডেমোক্র্যাটদের উত্থাপিত অনেক বিল মুখ দেখেনি আলোর। জর্জিয়ায় ডেমোক্র্যাটদের জয়লাভের ফলে সিনেটে উভয় দলের সদস্য সংখ্যা এখন সমান সমান হলো। বিল পাশের ক্ষেত্রে সমান ভোট হলে ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিস প্রয়োগ করতে পারবেন তার বিশেষ ভোটাধিকার। সেক্ষেত্রে ডেমোক্র্যাটদের পাল্লা হবে ভারী। আর যেকোন বিল সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাশ করানো সহজসাধ্য হবে ডেমোক্র্যাটদের জন্য।
জর্জিয়া সিনেটে যে দু’টি আসনে রানঅফ ইলেকশন অনুষ্ঠিত হলো এ গুলো ছিলো রিপাবলিকানদের দখলে। আর এ আসন দু’টো দখলে রাখার জন্য যারপরনাই চেষ্টা করেছে রিপাবলিকান পার্টি। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য চালিয়েছেন সবধরণের চেষ্টা তদবির। ব্যক্তিগতভাবে তিনি কয়েক দফা জর্জিয়া সফর করেন। নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে নিজ দলীয় প্রার্থীদের জয়লাভ নিশ্চিত করার প্রয়াস চালান। নানারকম কুটকৌশলের আশ্রয় নেয় রিপাবলিকান শিবির। নির্বাচনের আগের দিনও ট্রাম্পকে সরব দেখা যায় জর্জিয়ায়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয়ের তিনি গ্লানি কিছুটা হলেও মোচনের চেষ্টা চালান জর্জিয়ার আসন দু’টো ধরে রাখার মধ্য দিয়ে। জর্জিয়ার সিনেটে রানঅফ ইলেকশন ছিলো রিপাবরিকানদের জন্য “প্রেস্টিজ ইস্যু”।
জর্জিয়ার রিপাবলিকান সিনেটর জনি ইজাকসন-২০১৯ সালে অবসরে গেলে তার আসনটি শূণ্য হয়। অপর আসনটি রিপাবলিকান সিনেটর ডেভিড পেডরুর মেয়াদ শেষ চলতি গত বছর। ফলে দু’টি আসনেই গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় সাধারণ নির্বাচন। কিন্তু জর্জিয়ার নির্বাচনী জটিল প্রক্রিয়ার কারণে তা গড়ায় রানঅফ ইলেকশনে। জর্জিয়া রাজ্যেও নির্বাচনী নিয়মানুসারে প্রাইমারী বা সাধারণ নির্বাচনে কোন প্রার্থী ৫০শতাংশের কম ভোট পেলে তাদেরকে রান অফ ইলেকশনে অংশ নিতে হয়। এক্ষেত্রে যে সকল প্রার্থী তাদের দল থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে থাকেন শুধুমাত্র এমন প্রার্থীরাই রানঅফ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন। সেদিক থেকে সিনেটর ডেভিড পেডরু গত নভেম্বরের নির্বাচনে ভোট পান ৪৯ দশমিক ৭ শতাংশ। অপরদিকে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী পান ৪৭ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। ডকুমেন্টারি ফিল্ম এক্সিকিউটিভি এবং ৩৩ বছর বয়সী জনওসফ এর নিকট সিনেটর পেডরুর পরাজয় ভিন্নতর নজির সৃস্টি করেছে।
জর্জিয়া সিনেটের অপর আসনে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ নির্বাচন। সিনেটর জনি আইজেকশন ২০১৯ অবসর নিলে এ আসনে সিনেটর হিসেবে মনোনয়ন দেয়া হয় কেলী লোয়েফলারকে। এ আসনের মেয়াদ আছে ২০২২ সাল পর্যন্ত। ফলে এখানে অনুষ্ঠিত বিশেষ নির্বাচনে সিনেটর কেলীর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন কংগ্রেসম্যান রাফায়েল ওয়ারনক। তিনি দক্ষিণের কোন রাজ্যে নির্বাচিত প্রথম সিনেটর। গত ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে তিনি পান ৩২ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। পক্ষান্তরে রিপাবলিকান সিনেটর কেলী লোয়েফলার পান ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট। আর সে কারণেই তাদেরকে অংশ নিতে হয় রান অফ ইলেকশনে। ন ইতিহাস তৈরি করেছেন আটলান্টায় ইবেনেজার ব্যাপটিস্ট চার্চের সিনিয়র যাজক রেভারেন্ড রাফায়েল ওয়ার্নক। তিনি জর্জিয়া থেকে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সিনেটর নির্বাচিত হয়েছেন। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী কেলি লফলারের বিপরীতে জয় লাভ করেন ৫১ বছর বয়সী ওয়ার্নক। তার জয়কে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে সিবিএস নিউজ, এনবিসি, দ্য গার্ডিয়ানসহ অন্যান্য প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম।
নিজের বিজয় সম্পর্কে ইউটিউবের একটি ভিডিও বার্তায় ওয়ার্নক বুধবার বলেছেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল যে আমরা এই নির্বাচনটি জিততে পারব না। তবে আজ রাতে আমার প্রত্যাশা, কঠোর পরিশ্রম এবং আমাদের পাশে থাকা জনগণকে সাথে নিয়ে প্রমাণ করেছি, যেকোনও কিছুই সম্ভব। আমার গল্পটি এমন কিছু অল্প বয়স্ক ব্যক্তির অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক যিনি আমেরিকান স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন।’
ন ইতিহাস তৈরি করেছেন আটলান্টায় ইবেনেজার ব্যাপটিস্ট চার্চের সিনিয়র যাজক রেভারেন্ড রাফায়েল ওয়ার্নক। তিনি জর্জিয়া থেকে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ সিনেটর নির্বাচিত হয়েছেন। রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে রিপাবলিকান প্রার্থী কেলি লফলারের বিপরীতে জয় লাভ করেন ৫১ বছর বয়সী ওয়ার্নক। তার জয়কে ইতিমধ্যেই স্বীকৃতি দিয়েছে সিবিএস নিউজ, এনবিসি, দ্য গার্ডিয়ানসহ অন্যান্য প্রভাবশালী সংবাদ মাধ্যম।
নিজের বিজয় সম্পর্কে ইউটিউবের একটি ভিডিও বার্তায় ওয়ার্নক বুধবার বলেছেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল যে আমরা এই নির্বাচনটি জিততে পারব না। তবে আজ রাতে আমার প্রত্যাশা, কঠোর পরিশ্রম এবং আমাদের পাশে থাকা জনগণকে সাথে নিয়ে প্রমাণ করেছি, যেকোনও কিছুই সম্ভব। আমার গল্পটি এমন কিছু অল্প বয়স্ক ব্যক্তির অনুপ্রেরণা হয়ে উঠুক যিনি আমেরিকান স্বপ্নকে আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করছেন।’ উল্লেখ্য, জর্জিয়া রিপাবলিকানদের শক্ত ঘাঁটি হলেও এবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন এ রাজ্যে ট্রাম্পকে প্রায় ১২ হাজার ভোটে হারিয়েছেন এবং ১৯৯২ সালের পর গত বছর প্রথমবারের মতো রাজ্যটিতে ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে জয় লাভ করেছেন।
Posted ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৭ জানুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh