রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার পর মাস্ক না পরলেও চলবে : সিডিসি

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১

দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেয়ার পর মাস্ক না পরলেও চলবে : সিডিসি

যুক্তরাষ্ট্রে যাঁরা করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের দুই ডোজ নিয়েছেন, তাঁরা পরস্পরের মধ্যে সাক্ষাতের সময় মাস্ক না পরলেও চলবে। ছোট আকারে জমায়েতও করতে পারবেন তারা।

গত ৭ মার্চ সোমবার সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এ তথ্য জানিয়েছে। তবে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে সিডিসি। যুক্তরাষ্ট্রে পুরোদমে ভ্যাকসিন দেয়া কর্মসূচি চলছে। প্রতিদিন গড়ে ২০ লাখ লোককে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে এবং গত ৭ মার্চ পর্যন্ত ৯ কোটির বেশি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবী করা হয়েছে। সাড়ে ১১ কোটির বেশি ভ্যাকসিন ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিনেশন সেন্টারগুলোতে পাঠানো হয়েছে।


ভ্যাকসিন দেয়া শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের হারা ও মৃত্যু হার উভয়ই হ্রাস পেয়েছে। গত ৮ মার্চ সমাপ্ত ২৪ ঘন্টায় যুক্তরাষ্ট্রে ৭৪৯ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সবচেয়ে কম। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে ৪ হাজার ৪৭৩ জনের মৃত্যু হয়। যা গত কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সিডিসি নতুন নির্দেশনা প্রকাশ করেছে সিডিসি। সিডিসি বলছে, ফাইজার-বায়োএনটেক ও মর্ডানার ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে দুই ডোজ গ্রহণের পর এবং জনসনের ভ্যাকসিন একটি মাত্র ডোজ গ্রহণের দুই সপ্তাহ পর মাস্ক না পরলেও চলবে। ভ্যাকসিন গ্রহণকারী প্রবীণদের সঙ্গেও দেখাসাক্ষাৎ করতে পারবেন ভ্যাকসিন নেওয়া স্বজনেরা। যারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা পারস্পরিক দূরত্ব না মেনেই এক জায়গায় জড়ো হতে পারবেন। যেসব প্রবীণ ব্যক্তি ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা পরিবারের সদস্যদের আলিঙ্গনও করতে পারবেন। সিডিসির পরিচালক রোচেল ওয়ালেনস্কি বলেন, যারা দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন তারা ভ্যাকসিন না নেয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। ঝুঁকি কম এমন ব্যক্তিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন তাদের বাড়িতে গিয়ে। তবে এরপরও কিছু সতর্কবার্তা জারি রেখেছে সিডিসি। তারা বলছে, ভ্যাকসিন নেওয়া ব্যক্তিদের উচিত বড় কিংবা মাঝারি আকারের জনসমাবেশ এড়িয়ে চলা উচিত। এ ছাড়া যারা ঝুঁকিপূর্ণ তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। আর কোনো স্থানে যদি একধিক বাড়ি থেকে আসা মানুষ জড়ো হন তবে সে ক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা দিয়েছে সিডিসি। রোচেল ওয়ালেনস্কি বলেন, ‘এটা অনুধাবন করা জরুরি যে যুক্তরাষ্ট্রের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এখনো ভ্যাকসিন নেয়নি। আমাদের দায়িত্ব হলো তাদের সুরক্ষা দেওয়া।’ যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে; সেগুলো, ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিস, মডার্নার ভ্যাকসিন ও জনসনের ভ্যাকসিন।

ফাইজার ও মডার্না ভ্যাকসিনের এক ডোজ যথেষ্ট নয় : করোনাভাইরাস থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার জন্য ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন এক ডোজ যথেষ্ট নয় বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। গত ৬ মার্চ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, বিজ্ঞানীরা দেখেছেন করোনা প্রতিরোধে ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন এক ডোজ দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট প্রমাণ নেই। গত ২ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও মানবসেবা সচিব নরিস কোচরানকে লেখা চিঠিতে যুক্তরাষ্ট্রের ৭ জন চিকিৎসক ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনের দুই ডোজের পরিবর্তে এক ডোজ জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়ার বিষয় বিবেচনার অনুরোধ করেছিলেন। যার প্রেক্ষিতে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে দেখেন ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনের এক ডোজ করোনা প্রতিরোধে যথেষ্ট নয়।


এফডিএ-র জীববিজ্ঞান মূল্যায়ন এবং গবেষণা বিভাগের পরিচালক পিটার মার্কস ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, কোভিড -১৯ এবং এ সম্পর্কিত রোগে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যু প্রতিরোধের জন্য ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিষ্ট্রেশন জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দেয়। তবে এই ভ্যাকসিন দুটির এক ডোজ দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয়। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিনের পাশাপাশি নতুন জনসন অ্যান্ড জনসনের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। এর বৈশিষ্ট্য হলো, এক ডোজ ভ্যাকসিনই যথেষ্ট। দ্বিতীয় ডোজের দরকার নেই। কিন্তু ফাইজার, মডার্না বা অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন প্রথম ডোজ নেওয়ার ৪ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় ডোজ নিতে হয়। নাহলে পুরোপুরি সুরক্ষা পাওয়া যায় না। যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিজ্ঞানী এবং আইনবিদ সব ভ্যাকসিনের জন্য এক ডোজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেছিলেন, জনসনের মতো অন্য ভ্যাকসিনগুলোর এক ডোজ ভ্যাকসিন কার্যকর হতে পারে। তাই তারা দাবি করেন সব ভ্যাকসিনের জন্য এক ডোজ করা হলে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিন দেওয়ার গতি ত্বরান্বিত হবে।

করোনায় মৃত্যু হার কমেছে : তিন মাসের মধ্যে প্রথমবারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ৮ মার্চ ৭৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে গত ১২ জানুয়ারি দেশটিতে ৪ হাজার ৪৭৩ জনের মৃত্যু হয়। যা কয়েক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ছিল। গত নভেম্বরে হাজারের নিচে মৃত্যু দেখা যায়নি। গত ২৯ নভেম্বর ৮২২ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকেই মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। করোনা সংক্রমণে মৃত্যুর সংখ্যা কমার ঘটনা প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্য ভালো খবর হিসেবেই দেখা হচ্ছে। গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই দেশটিতে ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই দেশটির ১০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া সম্ভব হয়েছে। অর্থাৎ দেশটির প্রায় ৩ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। দেশটির সেন্টার্স ফর ডিজেজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনসন (সিডিসি) জানিয়েছে, যারা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন তারা একে অন্যের সঙ্গে মাস্ক ছাড়াই দেখা করতে পারবেন। অর্থাৎ ভ্যাকসিন নেয়ার পর মানুষের জীবন-যাপন এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।


সিডিসির নতুন স্বাস্থ্য বিষয়ক নির্দেশনা অনুযায়ী, যারা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেছেন তারা ভ্যাকসিন নিয়েছেন বা নেননি এমন লোকজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন। সিডিসি বলছে, ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ডোজ গ্রহণের দুই সপ্তাহ পর থেকেই লোকজনকে সুরক্ষিত বিবেচনা করা হয়। গত ৮ মার্চ হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস টাস্ক ফোর্সের এক ব্রিফিংয়ে নতুন স্বাস্থ্য নির্দেশিকা ঘোষণা করেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। সেখানে জানানো হয়েছে যে, যারা ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নিয়েছেন তারা অন্য ভ্যাকসিন গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে যে কোনো অভ্যন্তরীণ পরিবেশে মাস্ক ছাড়াই দেখা করতে পারবেন। এক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্বও জরুরি নয়।

পরিসংখ্যানভিত্তিক ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটার বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ২৯ কোটি ৭৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫২ জন। এর মধ্যে মারা গেছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬২৮ জন। তবে ইতোমধ্যেই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছে ২০ কোটি ৪৪ লাখ ৯ হাজার ৬৩৪ জন। দেশটিতে করোনার অ্যাক্টিভ কেসের সংখ্যা ৮৭ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯০। এছাড়া আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছে ১২ হাজার ৮৮২ জন। করোনা মহামারির এক বছরের বেশি সময় পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বের অনেক দেশই ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিন কার্যক্রম শুরু করায় মহামারি থেকে নিস্তারের আশা জাগাচ্ছে। অচিরেই হয়তো আমরা মহামারি পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পারব এমনটাই এখন সবার আশা।

advertisement

Posted ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.