মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ধনীদের ট্যাক্স বাড়িয়ে ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের বিলে বাইডেনের স্বাক্ষর

বাংলাদেশ ডেস্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২

ধনীদের ট্যাক্স বাড়িয়ে ৭৫০ বিলিয়ন ডলারের বিলে বাইডেনের স্বাক্ষর

প্রসিডেন্ট জো বাইডেন ৭৫০ বিলিয়ন বা ৭৫ হাজার কোটি ডলারের একটি বিলে সই করেছেন। এই বিলের লক্ষ্য মূলত ধনীদের ট্যাক্স বাড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় নির্বাহ করা। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সিএনএন। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বিলে প্রেসক্রিপশন ওষুধের দাম কমানোর জন্য কংগ্রেসের কয়েক দশকের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ডেমোক্র্যাটদের প্রথম পরিকল্পনা করা সাড়ে তিন লাখ কোটি ডলারের প্যাকেজের চেয়ে চূড়ান্ত সংস্করণটি আরও বেশি বিনয়ী। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষিত কর্মসূচির মধ্যে অন্যতম ছিল এই আইন। এই বিলে সই করার ফলে মধ্যবর্তী নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা আরও বেশি সুবিধা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। আগামী নভেম্বরে ভোট দেবেন মার্কিন ভোটাররা। এতে নির্ধারিত হবে আগামী দুই বছর কংগ্রেস কাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

গত ১৬ আগস্ট বিলটিতে সইয়ের পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, এটি তার অভ্যন্তরীণ কর্মসূচির ‘চূড়ান্ত অংশ’। বিলের প্যাকেজে রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ৩৭ হাজার পাঁচশ’ কোটি ডলারেরে বরাদ্দ। এই ইস্যুতে এটাই যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি কেন্দ্রীয় বিনিয়োগ। বিলটির আওতায় কোনও কোম্পানিকে কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে না। তবে যেসব কোম্পানি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করবে তারা প্রণোদনা পাবে। এছাড়া ইলেক্ট্রিক গাড়ির ক্রেতা কিংবা জ্বালানি সাশ্রয়ী বাড়ি তৈরিতে বিনিয়োগ করতে প্রণোদনা পাবে তারাও। এছাড়াও ওই বিলে ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের কাছে প্রেসক্রিপশন ওষুধের দাম কমানোর কথা বলা হয়েছে।


কংগ্রেসের নিম্নকক্ষে উতরে গেল জলবায়ু বিল : এদিকে কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে পাস হওয়া জলবায়ুসংক্রান্ত বিলটি গত ১২ আগস্ট নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদেও পাস হয়েছে। প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের জন্য ‘ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট’ শীর্ষক বিলটি হোয়াইট হাউসে পাঠানো হবে। আগামী সপ্তাহেই বিলটি আইনে পরিণত হতে পারে। এর মাধ্যমে বৈশ্বিক উষ্ণায়নের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ প্রস্তাব অনুমোদন পেল। এই প্রস্তাবে ৩৭ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যে গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ ৪০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর আগে গত ১৪ আগস্ট ৫১-৫০ ভোটে উচ্চকক্ষ সিনেটে বিলটি পাস হয়। বিলের পক্ষে-বিপক্ষে ৫০টি করে ভোট পড়ে।

শেষ পর্যন্ত ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের ভোটে নির্ধারিত হয় বিলটির ভাগ্য। গত ১২ আগস্ট ২২০-২০৭ ভোটে প্রতিনিধি পরিষদে বিলটি পাস হয়। বিল পাসের পর পরিবেশবাদীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। এদিকে রক্ষণশীল আইন প্রণেতারা বিলটির সমালোচনা করে বলেছেন, এটি অযথা খরচ। কোনো রিপাবলিকান আইন প্রণেতা ওই বিলে সমর্থন দেননি। প্রতিনিধি পরিষদে ভোটের পর এক টুইট বার্তায় বাইডেন বলেন, ‘আজ আমেরিকার মানুষের জয় হয়েছে। বিশেষ সুবিধাভোগীদের পরাজয় হয়েছে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘প্রতিনিধি পরিষদে ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট পাসের ফলে মার্কিন পরিবারগুলোর ওষুধের খরচ, স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং জ্বালানির ব্যয় কমবে। বিলটিকে আইনে পরিণত করতে আমি আগামী সপ্তাহে স্বাক্ষর করার প্রত্যাশা করছি। ’ বলা দরকার, ওই বিলে স্বাস্থ্যসেবা ও আর্থিক সহায়তার বিষয়ও রয়েছে। চলতি বছরের নভেম্বরে গুরুত্বপূর্ণ মধ্যবর্তী নির্বাচনের আগে এই বিল পাস হওয়াকে বাইডেন প্রশাসনের বড় জয় হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। ‘ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্টে’ স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাতের জন্য ছয় হাজার ৪০০ কোটি ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর ফলে ওষুধের দাম অনেক কমবে। বর্তমানে অনেক ধনী দেশের তুলনায় ১০ গুণ বেশি দাম দিয়ে ওষুধ কিনতে হয় মার্কিন নাগরিকদের।


মূল্যস্ফীতি ধীর তবুও সুদ বাড়বে : যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির হার গত চার দশকের সর্বোচ্চ উচ্চতায় রয়ে গিয়েছে। যদিও গত জুলাই মাসে মূল্যস্ফীতি জুনের তুলনায় ধীর হয়েছে। এর পরও ফেডারেল রিজার্ভ সুদহার বাড়ানো চালিয়ে যাবে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল্যস্ফীতি হারের প্রভাব না কমা পর্যন্ত মুদ্রানীতি কঠোর করতে বদ্ধপরিকর মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ জানায়, জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যসূচক জুনের মতো উচ্চহারে বাড়েনি। তবে শ্রমবাজারে এখনো প্রতিকূল পরিস্থিতি বিদ্যমান। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, অর্থনীতির গতি ফেরাতে ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদহার আরো বাড়ানোর প্রয়োজন হতে পারে।এ বিষয়ে মিনিয়াপলিস ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট নিল কাশকারি বলেন, বিজয় থেকে এখনো অনেক দূরে রয়েছে ফেড। এ বছরের শেষ নাগাদ ফেডের পলিসি হার বাড়িয়ে ৩ দশমিক ৯ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। আগামী বছরের শেষ নাগাদ সুদহার ৪ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হবে। বর্তমানে এ হার ২ দশমিক ২৫ থেকে ২ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে রয়েছে। একই মত সানফ্রান্সিসকো ফেডারেল রিজার্ভের প্রেসিডেন্ট ম্যারি ড্যালিরও। তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে এখনো বিজয় নিশ্চিত করেনি ফেডারেল রিজার্ভ। সেপ্টেম্বরে পলিসি মিটিংয়ে সুদহার তৃতীয়বারের মতো দশমিক ৭৫ শতাংশ বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
শিকাগোর ফেডারেল রিজার্ভের প্রেসিডেন্ট চার্লস ইভানস বলেন, মূল্যস্ফীতির হারের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত রয়েছে। এ বছর পলিসি হার ৩ দশমিক ২৫ থেকে ৩ দশমিক ৫ শতাংশে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


আগামী বছর এ হার ৩ দশমিক ৭৫ থেকে ৪ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। তবে মার্চে সুদহার বাড়ানো শুরু করার পর থেকে এই প্রথম ভোক্তা মূল্যসূচক আশাবাদী ছিল। চলতি বছরের ২০-২১ সেপ্টেম্বর ফেডারেল রিজার্ভের পলিসি মিটিং অনুষ্ঠিত হবে। সভায় বেঞ্চমার্ক সুদহার ৭৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। নিল কাশকারি জানান, এক অভিনব পরিস্থিতি চলছে। মূল্যস্ফীতির হার ফেডের ২ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রায় নামিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর নীতিনির্ধারকরা। অন্যদিকে রয়েছে আর্থিক মন্দার আশঙ্কাওএ বছরের জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যসূচক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে। গত জুনে এ হার ছিল ৯ দশমিক ১ শতাংশ। যদিও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির এ হারও রেকর্ড পরিমাণ। জুলাইয়ে খাদ্যপণ্যের দাম গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১১ শতাংশ বেশি ছিল। এর অভিঘাত এসে পড়েছে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মার্কিন পরিবারের ওপর। এদিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভোক্তা মূল্যসূচক বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণের প্রমাণস্বরূপ যথেষ্ট নয়।

ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ কারিম বাস্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে আসার প্রমাণ আরো পেতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে। তবে শুরু হিসেবে এটি মন্দ নয়। এ মাসে ভোক্তা মূল্যস্ফীতির হার আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর প্রকাশ করা হবে। এর কয়েক দিন পরই ফেডের পলিসি মিটিং। এরই মধ্যে গত মাসে কোর ভোক্তা মূল্যসূচক জুনের তুলনায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বৃদ্ধির হার ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। এ সত্ত্বেও অনিয়ন্ত্রিত মূল্যস্ফীতির বিরুদ্ধে বিজয় নিশ্চিত করতে আবারো এক দফা সুদহার বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের।

advertisement

Posted ৬:৫৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ আগস্ট ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.