বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে আসা ইমিগ্রান্টররা টেক্সাস থেকে সেখানকার গভর্নর গ্রেগরি অ্যালবটের ভাড়া করা বাসে গত মে মাস থেকে নিউইয়র্ক সিটিতে আসতে শুরু করলে সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস তাদের স্বাগত জানিয়েছিলেন। তিনি ইমিগ্রান্টদের জন্য নিউইয়র্ক সিটির ‘স্যাঙ্কচুয়ারি সিটির’ ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে নবাগত ইমিগ্রান্টদের সব ধরনের সহায়তা করার আশ্বাসও দিয়েছিলেন এবং তা করেছেন। ইমিগ্রান্টদের জন্য সিটির শেল্টার সেন্টারগুলোতে আশ্রয় এবং খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি এখন সিটির সাধ্যের বাইরে চলে গেছে। গত সাড়ে তিন মাসে এগার হাজারের বেশি ইমিগ্রান্ট নিউইয়র্ক সিটিতে এসে পৌছেছে।
সিটি তাদের কোভিড ভ্যাকসিনেশন, শিশুদের স্কুলে ভর্তির ব্যবস্থা, সিটির পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু সিটি নবাগত ইমিগ্রান্টদের প্রতি বাধ্যবাধকতার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার মূল দিক ‘আবাসন’ সংকটে তাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই দেওয়ার প্রশ্নে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। গত সপ্তাহে মেয়র অ্যাডামস বলেছেন, ‘আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন এবং আমরা একথা বলতে লজ্জিত নই। যারা মনে করছেন যে আমরা সঠিকভাবে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে পারছি না তাদের উচিত আমাদের সহায়তায় এগিয়ে আসার।’ শুধু টেক্সাসের গভর্নর নন, অ্যারিজোনা ও ফ্লোরিডার গভর্নররাও তাদের স্টেটে প্রবেশকারী ইমিগ্রান্টদের স্টেটের খরচে বাসে, এমনকি বিমানযোগে ডেমোক্রেট স্টেটগুলোর বড় বড় সিটিতে পাঠিয়ে দিচ্ছেন রিপাবলিকান ইমিগ্রেশন নীতি অনুসরণ করার জন্য ডেমোক্রেটদের ওপর চাপ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে। মেয়র এরিক অ্যাডামস উল্লিখিত তিনটি স্টেটের গভর্নরদের এ ধরনের পদক্ষেপকে রিপাবলিকান পার্টির অমানবিক নীলনকশা বলে বর্ণনা করে বলেছেন যে সিটি মানুষের আবাসনের অধিকার পূরণ করার লক্ষ্যে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং ইমিগ্রান্টদের জন্য ২৩টি জরুরী আশ্রয় কেন্দ্র চালু করতে যাচ্ছে।
তবে মেয়র প্রথমবারের মতো আভাস দিয়েছেন যে সিটির আইনে সিটি যেসব নবাগতের আবাসনের ব্যবস্থা করছে তাদের পুন:যাচাই করা আবশ্যক, কারণ ইতোমধ্যে প্রশ্ন ওঠেছে যে সিটির হোমলেস সার্ভিস যেখানে নাজুক, সে পরিস্থিতিতে উদ্ভুত ইমিগ্রান্ট সংকট একা সিটির পক্ষে কীভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। মেয়রের প্রধান পরামর্শক ব্রেনডেন ম্যাকগায়ার বলেছেন যে সিটি ‘আবাসনের অধিকারের’ বাধ্যবাধকতার আওতায় কাজ করছে, কিন্তু একই আইনে যাদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে তাদের যাচাই করার কথাও বলা হয়েছে। উল্লেখ্য, টেক্সাস থেকে নিউইয়র্ক সিটিতে আগত ১১ হাজারের অধিক ইমিগ্রান্টের একটি বড় অংশ ভেনিজুয়েলা এবং সেন্ট্রাল ও সাউথ আমেরিকান দেশগুলোর নাগরিক।
সিটির শেল্টার সেন্টারগুলোতে আশ্রয় গ্রহণকারী মানুষের সংখ্যা গত ৯ আগস্ট থেকে ৫ হাজার বেড়ে ৫৬,০০০ এ উন্নীত হয়েছে, অর্থ্যাৎ এক মাসে আশ্রয় গ্রহণকারীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ শতাংশ। এত অধিক সংখ্যক লোক সামলানোর মত জনশক্তি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে নেই। বিশেষ করে স্পেনিশভাষী কর্মী সংখ্যার ঘাটতিতে ইমিগ্রান্টদের কাগজপত্র পূরণ করতে সমস্যা হচ্ছে বেশি। তা সত্বেও তারা প্রশংসনীয়ভাবে কাজ করছে। সিটি কাউন্সিলম্যান শাহানা হানিফ, যিনি কাউন্সিলের ইমিগ্রেশন কমিটির চেয়ারপার্সন, তিনি বলেছেন, আবাসনে অধিকার নিয়ে কথমালার ফুলঝুড়ি ছড়ানো বিপজ্জনক, এ ব্যাপারে সিটিকে সহায়তা করার জন্য ক্যাথলিক চার্চগুলোর মতো প্রতিষ্ঠানের এগিয়ে আসা উচিত, যারা নবাগত ইমিগ্রান্টদের জন্য অভ্যর্থনা কেন্দ্র পরিচালনাসহ স্পেনিশভাষী ইন্টারপ্রেটার নিয়োগ করতে পারবে এবং খাদ্য সহযোগিতা করতে পারবে।
Posted ৩:০১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh