নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
গত শনিবার জ্যামাইকার ম্যারি লুইস একাডেমিতে আন্তর্জাতিক লালন ও লোক উৎসব অনুষ্ঠিত হয় লালন পরিষদ ইউএসএ আয়োজনের। বেলা ২টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত চলে এ অনুষ্ঠান। এবারের উৎসবে বাংলাদেশ ,ভারত, লন্ডন, ক্যানাডা ও অ্যামেরিকার বিভিন্ন স্টেইট থেকে প্রায় ২০০ শিল্পী ও কলা কুশলী অংশ নেন। দুপুরে উৎসবের উদ্বোধন করেন শিল্পী নীনা হামিদ।
এ সময় তাঁর সাথে ছিলেন একাত্তরের কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী, ড.সিদ্দিকুর রহমান. ডা: মাসুদুল হাসান, রাশেদ আহমেদ, মিনহাজ আহমেদ জাবেদ, কমরেড জাকির হোসেন, উৎসবের প্রধান উপদেষ্টা নুরুন আমিন বাবু, আহবায়ক আব্দুল হামিদ, গোপাল সান্যাল, স্বীকৃতি বড়ুয়া প্রমুখ। উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রবীণ শিল্পী নীনা হামিদ বলেন, প্রবাসে বাংলা সংস্কৃতির এই নান্দনিক বিকাশ দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। আয়োজকদের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন প্রজন্মকে আরো বেশি করে আমাদের বাংলা সংস্কৃতির সাথে সপৃক্ত করতে হবে।
এবারের উৎসবমুখর ও নান্দনিক এই অনুষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। উৎসবে বাংলাদেশ থেকে আসা লালন কন্যা খ্যাত লায়লা, নৃত্যশিল্পী মন্দিরা চক্রবর্তী, শিল্পী দিনাত জাহান মুন্নী, শাহ মাহবুব, আলভিন, মাইশা জেরিন ও সাগনিক মজুমদারদের পরিবেশনা দর্শকদের মুগ্ধ করে। উৎসবে ওয়াশিংটন ডিসি থেকে যোগ দেন দিনার মনি। লন্ডন থেকে আসা অদিতি রায়ের বিশেষ আলেখ্য ‘হু এম আই’ দর্শকরা উপভোগ করেন। উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো রোসড আইল্যাণ্ড থেকে যোগদানকারী মহিতোষ তালুকদার তাপস ও তার দলের বিশেষ পরিবেশনা। নিউ জার্সির চন্দ্রা ব্যানার্জির দলের দলীয় নৃত্য পরিবেশনা উৎসবটিকে ভিন্ন এক মাত্রা দেয়।
অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাদিয়া খন্দকার, স্বাধীন মজুমদার ও সেঁজুতি তালুকদার। লালন উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিল প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন এজ হোম কেয়ার। ওয়াহিদুজ্জামান লিটন, অ্যাস্টোরিয়া হোম কেযার।
বক্তারা বলেন, লালন কোনো জাতিভেদ মানতেন না। তিনি গেয়েছেন ‘সব লোকে কয় লালন কি জাত সংসারে/ লালন কয় জাতির কি রূপ দেখলাম না এ নজরে।’ এমন সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধিমুক্ত এক সর্বজনীন ভাবরসে সিক্ত বলে লালনের গান বাংলার হিন্দু- মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের নিকট সমান জনপ্রিয়। তাঁর ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’, ‘বাড়ির কাছে আরশী নগর’, ‘আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে’ ইত্যাদি গান বাউল তত্ত্ব সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ। লালনের গান এক সময় এতই জনপ্রিয় ছিল যে, তা সাধারণ মানুষ ও নৌকার মাঝি-মাল্লাদের মুখে মুখে শোনা যেত।
এমনকি বর্তমানেও সকল মহলে এ গানের কদর বাড়ছে। লালন ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী একজন বাঙালি, যিনি ফকির লালন, লালন সাঁই, লালন শাহ, মহাত্মা লালন ইত্যাদি নামে পরিচিত। তিনি একাধারে একজন আধ্যাত্মিক ফকির সাধক, মানবতাবাদী, সমাজ সংস্কারক এবং দার্শনিক।
Posted ১২:৩৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh