রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

‘পিপল আপ’র আলোচনায় ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধের আহবান

নিউইয়র্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৩

‘পিপল আপ’র আলোচনায় ফিলিস্তিন ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধের আহবান

বক্তব্য রাখছেন ড. আবু জাফর মাহমুদ। পাশে সাংবাদিকবৃন্দ। 

বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে নিউইয়র্কে গড়ে তোলা রাজনীতি ও সমাজ উন্নয়ন বিষয়ক সংগঠন পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস ‘পিপল আপ’ এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে মুক্ত আলোচনা অনুষ্ঠান। সোমবার সন্ধ্যায় জ্যামাইকা ১৪৭-১৪ হিলসাইড-এ বাংলা সিডিপ্যাপ সার্ভিসেস ও অ্যালেগ্রা হোম কেয়ারের শাখা অফিসে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের সভাপতিত্বে নিবিড় ও আনড়ম্বর ওই আলোচনায় অংশ নেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও আজকাল এর প্রধান সম্পাদক মনজুর আহমেদ, লেখক অনুবাদক ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু, সাংবাদিক মঈনউদ্দিন নাসের, সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান, পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, টাইম টিভি ইউএসএ’র সত্তাধিকারী ও বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক আবু তাহের, নিউইয়র্ক কাগজ এর সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, রাজনৈতিক সংগঠক মুশফিকুর রহমান মোহন প্রমুখ।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর আবু জাফর মাহমুদ পিপল আপ এর পক্ষ থেকে নিয়মিত আলোচনার সূচনা প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, একজন মুসলিম, দেশের রণাঙ্গনের যোদ্ধা, বাংলাদেশি আমেরিকান ও তৃণমূল রাজনীতির ভেতর দিয়ে উঠে আসা মানুষ হিসেবে বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিস্থিতির আলোকে সমাজের প্রকৃত গুণী, সাধক ও নেতৃত্বদানকারীদের সঙ্গে আলোচনা এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণের জন্যই এই উদ্যোগ।


মনজুর আহমেদ সমকালে মানুষের উন্নাসিকতা বা উদাসিনতা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা এখানে বসে আলোচনা করে বা লিখে তার কোনো ফলাফল আশা করা যায় না। কারণ, আমাদের কাজগুলো আন্তরিতার সঙ্গে দেখবার মানসিকতাই এখন নেই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাংবাদিকরা আজ বিভাজিত। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক পর্যন্ত মাইকে বক্তৃতায় বলছে, পিটার হাস তাকে নাকি আগেই বলেছিল ২৮ তারিখে দেশে কী কী ঘটতে যাচ্ছে। সাংবাদিকরা যতটা না সাংবাদিক তার চেয়ে বেশি দলীয় কর্মী। তিনি বাংলাদেশের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য কিছুদিনের জন্য হলেও একটি অন্তবর্তীকালীন সরকারের অপরিহার্যতার কথা তুলে ধরে বলেন, লক্ষ্য রাখতে হবে তা যেন কোনোভাবে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত না হয়। অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে শুধু নির্বাচনী দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে শাসনভার নয়।


ফিলিস্তিনী ও ইসরায়েল প্রসঙ্গে মনজুর আহমেদ বলেন, গাজাবাসীর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। তাদের আর পিছু হটবার জায়গা নেই। প্যালেস্টাইনীরা যদি তাদের মুক্তির জন্য লড়াই করে আমরা তার বিরোধীতা করতে পারি না। এই আমেরিকাতেই ফিলিস্তিনীদের পক্ষে আন্দোলন বিক্ষোভ হচ্ছে। আমি মনে করি মানবতা ও অধিকারের পক্ষে দাঁড়ানো প্রতিটি মানুষের কর্তব্য।

লেখক সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মনজু বলেন, জন্মের পর থেকে শুনছি দুটি জনপদের কথা। একটি হচ্ছে কাশ্মির অন্যটি ফিলিস্তিনী। জীবনের শেষ প্রান্তে এসেও দেখছি অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে এই দুটি জনপদের মানুষ। আজ ফিলিস্তিনী ইসরায়েল পরিস্থিতি নিরসন করতে পারে শুধু একজন। তিনি হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সাংবাদিক মঈনুদ্দিন নাসের বলেন, বাংলাদেশে যা চলছে আমি এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করতে পারি না। দেশে গণতন্ত্রকে ধংস করে ফ্যাসিবাদ কায়েমের যে প্রক্রিয়া চলছে, তা কায়েম হয়ে যাবে। এখান থেকে ফিরে আসার কোনোই পথ দেখি না। সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদ এ খান বলেন, সারা পৃথিবীর জন্যই সময়টি অত্যন্ত সংকটময়। সকল সংকটের যদি শান্তিপূর্ণ সমাধান না হয়, তাহলে গোটা পৃথিবী এক ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়াতে পারবে না। সবাইকেই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হবে। বর্তমান সময়ে বিশ্বের মুসলমানদের যেমন রক্তক্ষরণ হচ্ছে, একইভাবে বাংলাদেশের মানুষেরও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমাদের ধর্মের বাইরে যারা তাদেরও রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা বাংলাদেশি আমেরিকান হিসেবে ন্যায়, শান্তি, অগ্রগতি, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারের পাক্ষে থাকতে চাই। আমেরিকা যখথন এগুলোর পক্ষে কথা বলবে তখন আমরা আমেরিকাকে সমর্থন করি, তখন এগুলোর বিরুদ্ধে যায় তখন বিরোধীতা করি। বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে ডা. ওয়াজেদ বলেন, বাংলাদেশ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে অত্যন্ত খারাপ সময় যাচ্ছে। স্বাধীনতার বায়ান্ন বছর পর বাংলাদেশের মানুষ ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করছে। অধিকার রক্ষার জন্য রাস্তায় নামছে লাখ লাখ মানুষ। এখন গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সামাজিক শৃংখলা, আইনের শাসন কোনো কিছুর ওপরই মানুষের আর আস্থা নেই। দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতিতে মানুষের নাভিঃশ্বাস উঠে গেছে।


বিশিষ্ট সাংবাদিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান বলেন, আমরা বাংলাদেশের মানুষ যখন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখে প্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি তখন কিছু কিছু বিষয় আমাদেরকে প্রতিবন্ধকতার মুখে ঠেলে দেয়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বসে বাংলাদেশের রাজনীতি। এটি আমাদের জন্য এখন আর প্রগতির ব্যাপার নয়। এটি আমাদের জন্য অনেক বড় প্রতিবন্ধকতা। তিনি বলেন, আমরা যখন এই দেশে থাকি, এই দেশের সুখ দুঃখের সঙ্গে যুক্ত থাকা আমাদের কর্তব্য। আমরা যদি নিজেরা আলোচনা করে সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারতাম, তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই অগ্রসর হতে পাারা যেত। এই আলোচনাগুলো থেকে মূলধারা রাজনীতিক তথা আমেরিকার বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ গড়ে তোলার ওপর তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি মনে করি আমেরিকানরা অনেক বেশি সংবেদনশীল। আমরা যদি আমাদের মর্মবেদনা তাদের বোঝাতে সক্ষম হই। অনেকখানি অগ্রসর হতে পারবো।
টাইম টেলিভিশন ও বাংলা পত্রিকার সত্তাধিকারী আবু তাহের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার দিয়েছে, রাষ্ট্রের যেকোনো ব্যাপারে মতামত দেয়ার। এক্ষেত্রে আমরা যে কোনো পরিস্থিতি নিয়ে আমাদের মতামত রাখতে পারি। কিন্তু প্রয়োজন মানবতা, ধর্মীয় ও জাতীয়তার প্রতি দায়বদ্ধতা রক্ষা করা। সাংবাদিক মনোয়ারুল ইসলাম প্রবাসে বাংলাদেশি কমিউনিটির বিষাক্ত পরিবেশের বিপরীতে দাঁড়িয়ে এমন একটি মুক্ত আলোচনার উদ্যোগ নেয়ার জন্য পিপল আপ’কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, বর্তমান বাংলাদেশ ও বিশ্ব পরিস্থিতিতে মানুষ নানাভাবেই শংকিত ও উৎকণ্ঠিত। এমন পরিস্থিতিতে খোলামেলা মত বিনিময় করে আমরা আমাদের মানসিক শক্তি ও বিবেচনাকে শাণিত করতে পারি।

সমাপনী বক্তৃতায় মুক্ত আলোচনার সভাপতি পিপল আপ এর প্রতিষ্ঠাতা গ্লোবাল পিস অ্যামব্যাসেডর স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, বর্তমান সময়ের যে রাজনীতি ও বিবেচনা তা সাধারণ মানুষের উপলব্ধির ক্ষেত্রে বেশ কঠিন ও প্যাচালো। বিশ্বের এক নম্বর শক্তি আমেরিকায় বসবাসকারী হিসেবে আমরা ফিলিস্তিনী ইসরায়েল ইস্যুটিকে কীভাবে দেখবো, এর একটি সরল দিক রয়েছে। তা হলো, আমরা মুসলিম। ধর্মীয় অনুভূতির জায়গা থেকে আমরা প্রথমত মানবিক, দ্বিতীয়ত প্রতিটি মুসলিম সন্তানের ওপর আঘাত ও নির্যাতন আমাদেরকে স্পর্শ করে। এই পৃথিবীতে সব সন্তানেরই স্বাধীন দেশে বসবাসের অধিকার রয়েছে। তা সে ইসরায়েলেরই হোক বা ফিলিস্তিনের হোক। এই আমেরিকান গণতান্ত্রিক নীতির মধ্যেই প্রত্যেকের স্বাধীন স্বার্বভৌম জীবন যাপনের অধিকার রয়েছে এবং আমরা আমেরিকান অনেক নেতৃত্বের মধ্যেই সেই অধিকার বাস্তবায়নের তাগিদও লক্ষ করি। আমরা চাই না, কোথাও মানবাধিকার লংঘিত হোক, কোথাও যুদ্ধ পরিস্থিতি বলবৎ থাক, যুদ্ধের নামে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চলুক। আমরা চাই বিশ্ব নেতৃত্ব আমেরিকার হস্তক্ষেপেই অতীতের মতো এবারও এই মুহূর্তে যুদ্ধ বিরতি হোক, মানুষের মাঝে শান্তি ফিরে আসুক। প্রতি মাসে অন্তত. একবার পিপল আপ এর পক্ষ থেকে সমকালীন বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আরো বড় পরিসরে মুক্ত আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ।

Posted ১২:৩৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ নভেম্বর ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.