বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
কোভিড ১৯ সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের উদ্ধারের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার ‘পে-চেক প্রটেকশন প্রোগ্রাম’ বা ‘পিপিপি’ নামে পরিকল্পনার আওতায় যে ৮০০ বিলিয়ন ডলার বিতরণ করেছে, এক শ্রেনির লুটেরা সেই অর্থের ১০ শতাংশ বা ৮০ বিলিয়ন ডলার লুট করে কিনেছে বিলাসবহুল গাড়ি, আলিশান বাসভবন, প্রাইভেট বিমান এবং ঢালাওভাবে ব্যয় করেছেনব জাঁকজমকপূর্ণ অবকাশ যাপনে। শুধু তাই নয়, পিপিপি’র অর্থের একাংশ মেরে দেওয়া ছাড়াও তারা ফেডারেল সরকারের ৯০০ বিলিয়ন কোভিড আনএমপ্লয়মেন্ট রিলিফ প্রোগ্রামের ৯০ থেকে ৪০০ বিলিয়ন ডলার চুরি করেছেন বলে এনবিসি নিউজের বরাত দিয়ে ইয়াহু প্রকাশ করেছে। আনএমপ্লয়মেন্ট রিলিফ প্রোগ্রামের প্রায় অর্ধেক অর্থ আত্মসাৎ করেছে আন্তর্জাতিক প্রতারকরা। এছাড়াও কোভিড ডিজাস্টার রিলিফ প্রোগ্রাম নামে আরেকটি তহবিলের ৮০ বিলিয়ন ডলারও হজম করেছে প্রতারক চক্র। খবরে বলা হয়েছে, সমন্বিত চুরির অর্থের পরিমাণ যদি বাড়িয়েও বলা হয়, তিনটি পৃথক তহবিল যে পরিমাণ অর্থ চুরি করা হয়েছে তা কিছুতেই ৫৭৯ বিলিয়ন ডলারের কম নয়।
মিশিগানের অ্যাটর্নি ম্যাথু শেইন্ডার বলেছেন, এর আগে এ ধরনের ঘটনার তুলনীয় কিছু ঘটেনি। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রতারণার ঘটনা। এনবিসি’র খবরে আরও বলা হয়েছে যে, ফেডারেল তহবিল থেকে যে অর্থ এভাবে তস্করদের হাতে পড়েছে তা উদ্ধার করা কঠিন, তা সত্বেও ক্ষতি পোষানোর একটি উপায় আছে; কারণ এখনও ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিতরণের অপেক্ষায় রয়েছে, যে অর্থ বিতরণ করার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, যাতে কোভিড ১৯ এ সত্যিকার অর্থে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের হাতে অর্থ পৌছে। চুরি বন্ধ করার উদ্দেশ্যে বাইডেন প্রশাসন নতুন বিধি তৈরি করেছে, যা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্থ নিরূপণে বাছাই প্রক্রিয়াকে নির্ভুল করবে। প্রশাসন স্বীকার করেছে যে ২০২০ সালে অর্থ বিতরণ প্রক্রিয়া অর্থহীনভাবে ত্বরান্বিত করা হয়েছিল, সেজন্য প্রতারকরা ফাঁকফোকড় দিয়ে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ পেয়েছে।
জাস্টিস ডিপার্টমেন্টের ইন্সপেক্টর জেনারেল মাইকেল হরোউইজ, যিনি প্যানডেমিক রেসপন্স একাউন্টিবিলিটি কমিটিরও চেয়ারপার্সন, তিনি এনবিসির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে, কোভিড রিলিফ প্রোগ্রাম এমনভাবে করা হয়েছিল, যা প্রতারকদের দ্বারা অর্থ লুণ্ঠনের সুযোগকে পরিপক্ক করেছিল। কারণ স্মল বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন অর্থ বিতরণ করতে গিয়ে লোকজনকে মূলত বলেছে যে, ‘আবেদন করো, স্বাক্ষর করো এবং আমাদের বলো যে তুমি আসলে অর্থ পাওয়ার যোগ্য, যা প্রকৃত অর্থে প্রতারকদের জন্য এক খোলা আমন্ত্রণ ছিল। যা করা হয়নি, তা হচ্ছে, বিতরণ করা অর্থ যথাসময়ে সঠিক ব্যক্তির হাতে পৌছছে কিনা সে সম্পর্কে ন্যুনতম যাচাই বাছাই করা হয়নি।”
তিনি আরও বলেছেন, অপরাধের প্রক্রিয়া-পদ্ধতি নির্ভর করে কর্মসূচির উপর। কোভিড আনএমপ্লয়মেন্ট রিলিফ থেকে মহাকাব্যিক ধরনের অর্থ সরানোর ঘটনা এককভাবে অপরাধীরা ঘটিয়েছে এবং সংগঠিত অপরাধী চক্রও ঘটিয়েছে। আনএমপ্লয়মেন্ট রেনিফিট আত্মসাত করার জন্য অপরাধীরা বেকার লোকদের পরিচয় চুরি করে তা ব্যবহার করেছে এবং ফেডারেল তহবিল বিতরণে নিয়োজিত স্টেটের এজেন্সিগুলো থেকে অর্থ নিজেদের একাউন্টে কৌশলে স্থানান্তর করেছে। প্রতিটি পরিচয়ের বিপরীতে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ডলার পর্যন্ত আত্মাসাত করার ঘটনা ঘটেছে। পে-চেক প্রটেকশন প্রোগ্রামের অর্থ লুট করা হয়েছে ভিন্ন কৌশলে এবং এটি আরও লোভনীয় ধরনের ছিল।
এই কর্মসূচির আওতায় ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কর্তৃত্ব প্রদান করা হয়েছিল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ব্যাংক সমর্থিত ঋণ মওকুফ করার জন্য, যদি কোম্পাুিনগুলো সে ঋণ ব্যবসায়ের জন্য ব্যয় করে থাকে। ফলে এই কর্মসূচিত আওতায় প্রায় ১০ মিলিয়ন ক্ষুদ্র ঋণ মওকুফ করা হয়েছে। রেকর্ডে দেখা যায়, অনেক ঋণকে অনুদানে পরিণত করে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, অনেক কোম্পানি মালিক তাদের কর্মচারি সংখ্যা প্রকৃত সংখ্যার চেয়ে বাড়িয়ে বলেছে অথবা নতুন কোম্পানি সৃষ্টি করেছে শুধু সরকারি অর্থ লুণ্ঠনের উদ্দেশ্যে। সরকার এই খাতে ২১ মিলিয়ন লোককে ৮০০ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে।
Posted ২:১৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh