রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ | ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
চার শতাধিক সংগঠনের ব্যয় ২০ লাখ ডলার

বনভোজন জ্বরে কাঁপছে বাংলাদেশি কমিউনিটি

বাংলাদেশ প্রতিবেদন :   |   বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০২২

বনভোজন জ্বরে কাঁপছে বাংলাদেশি কমিউনিটি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া কমিউনিটির বনভোজন উদ্বোধন করছেন এটর্নি মঈন চৌধুরী।

নিউইয়র্কের বাংলাদেশী কমিউনিটি এখন কাঁপছে বনভোজন জ্বরে। অনেকটা মহামারি সংক্রমনের মতো বনভোজন প্রীতিতে আক্রান্ত হয়ে পড়েছে গোটা কমিউনিটি। বিভক্ত-অবিভক্ত মিলিয়ে কম করে হলেও চার শতাধিক ছোট বড় সংগঠন চলতি মৌসুমে আয়োজন করছে বনভোজন। আয়োজক সংগঠনগুলোর মধ্যে শীর্ষে রয়েছে আঞ্চলিক সমিতি। বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন এবং এমনকি গ্রাম পর্যায়ে সংগঠনও রয়েছে যারা এবার মাতোয়ারা বনভোজনে।

এসব সংগঠনের ৭০ শতাংশই আবার দ্বিধা এবং ত্রিধা বিভক্ত। এছাড়া সামাজিক, সাংস্কৃতিক, পেশাজীবী সহ বিভিন্ন ধরণের বাহারি সংগঠন আয়োজন করছে বনভোজন। রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং অন্যান্য শহরের বিভিন্ন এলাকা এবং কলোনীতে একসময় যারা বাস করতেন তারাও নিউইয়র্কে সংঘবদ্ধ হয়ে দাঁড় করিয়েছেন সমিতি। যারা একই বছর এসএসসি বা এইচএসসি পরিক্ষার্থী ছিলেন তাদেরকেও দেখা যাচ্ছে বিচিত্র ব্যানারে বনভোজনে মিলিত হতে। পিকনিক, বনভাত, চড়ুই ভাতি, হাওড়ভাত সহ অঞ্চলভেদে বিভিন্ন নামকরণে আয়োজন হচ্ছে বনভোজনের।


এক কথায় বনভোজনের হিড়িক পড়েছে কমিউনিটিতে। অতীতে কখনো এতো অধিক সংখ্যক বনভোজনের নজির নেই বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। প্রায় প্রতিটি বনভোজনে কম করে হলেও অংশ নিচ্ছে দু’শতাধিক মানুষ। বড় সংগঠনগুলোতে এ সংখ্যা ঠেকছে হাজারে। বিভক্ত এবং বিবাদমান সংগঠনগুলোতে এক ধরণের প্রতিযোগিতা চলে খাবার মেন্যু এবং র‌্যাফেল ড্র’র পুরস্কার নিয়ে। চলমান র্দুমূল্যের বাজারে বড় ধরণের এমন আয়োজনে ব্যয় হচ্ছে বিশাল অংকের অর্থ। অভিজ্ঞ মহলের মতে ছোট খাট সংগঠনের একটি বনভোজনে কম করে হলেও সবমিলিয়ে গুনতে হচ্ছে পাঁচ হাজার ডলার। সে হিসেবে ৪ শতাধিক বনভোজনে এবার আনুমানিক ব্যয় দাঁড়াবে ২ মিলিয়ন ডলারের উপরে। প্রতিটি সংগঠনে ব্যয়ের এই অর্থ সংগৃহীত হয় দু’ভাবে। সংগঠনের সদস্যদের নিকট থেকে নির্ধারিত চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়াও রয়েছে পৃষ্ঠপোষকদের অনুদান। স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটিতে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা বিভিন্ন সংগঠনের বনভোজনে আর্থিক সহায়তার পাশাপাশি র‌্যাফেল ড্র’র পুরস্কার দিয়ে থাকে আয়োজক সংগঠনকে। আবার বনভোজন নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াও জানান অনেক ব্যবসায়ী।

অনেক সংগঠন বনভোজনকে সামনে রেখে চাঁদাবাজি করছেন এমন অভিযোগ তাদের। বনভোজনে পৃষ্ঠপোষকতার শীর্ষে রয়েছেন কমিউনিটির অত্যন্ত সুপরিচিত এটর্নি মঈন চৌধুরী। চলতি বছর তিনি শতাধিক সংগঠনকে বনভোজন উপলক্ষে অনুদান দিয়েছেন। তার অনুদানের হার সংগঠন ভেদে ৩০০ ডলার থেকে ১ হাজার ৭’শত ডলার পর্যন্ত। এতে মোটা অংকের অর্থ গুনতে হয়েছে এটর্নি মঈন চৌধুরীকে। তিনি মনে করেন তার প্রদত্ত অর্থ কমিউনিটিতে পারস্পরিক সম্পোর্কন্নয়নে ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে শত শত মানুষের সাথে পরিচিতির বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা করে আসছেন। বনভোজনে পৃষ্ঠপোষকগণ আতিথ্য গ্রহণ করে থাকেন। অনেক পৃষ্ঠপোষক আছেন যারা আগে থেকেই র‌্যাফল ড্র’র পুরস্কার কিনে গুদামজাত করেন। এছাড়াও নানাবিধ উৎস থেকে বনভোজনের তহবিল সংগৃহীত হয়ে থাকে। চলতি মৌসুমে নিউইয়র্ক স্টেটের এমন কোন পার্ক নেই যেখানে সপ্তাহান্তে একাধিক বাংলাদেশী সংগঠনের বনভোজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এক সপ্তাহে রেকর্ডসংখ্যক ১৫টি বনভোজন অনুষ্ঠিত হয় বলে জানা গেছে। বহুজাতিক মানুষের নগরী নিউইয়র্কে অন্য কোন জাতি গোষ্ঠির মানুষের মাঝে এতো সংগঠন ও বনভোজন আয়োজনের নজির নেই। স্প্যানিশ এবং ক্যারিবিয়ানদেরকে বিভিন্ন পার্কে পারিবারিকভাবে বনভোজন করতে দেখা যায়। কিন্তু সংগঠনের ব্যানারে শত শত মানুষের অংশগ্রহণের বিষয়টি অন্যদের মাঝে বিরল।


বাংলাদেশীদের বনভোজনে দুপুরের খাবারের ম্যানু নিয়েও চলে অভিনব প্রতিযোগিতা। প্রতিটি ম্যানুতে থাকছে অনূন্য ১০টি আইটেম। অনেক সংগঠন গুরুপাকের চলমান খাবার আইটেম দিয়ে বনভোজনে অতিথিদের আপ্যায়িত করছে। আবার কোন কোন সংগঠন চ্যাপা ভর্তা, আলু বেগুন ভর্তা, লইট্টার শুট্কি, খাসির মগজের সাথে মুগ ডাল, তেলাপিয়া ফিলেট, লাউ চিংড়ি সহ নানাবিধ মুখরোচক খাবারের ব্যবস্থা করছে অধিক অর্থ ব্যয় করে। অনেক সময় শত শত মানুষের জন্য রান্না করা এসব খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার সংবাদও মিলছে। বনভোজনে খাবার সরবরাহের শীর্ষে রয়েছে জ্যামাইকার সাগর রেস্টুরেন্ট। এবছর ব্রঙ্কসের খলিল বিরিয়ানী হাউজ শতাধিক বনভোজনে খাবার সরবরাহ করেছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির স্বত্ত্বাধিকারী খলিল রহমান।

এছাড়া জ্যাকসন হাইটস ও ব্রুকলীনের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট্ খাবার সরবরাহ করছে বাংলাদেশীদের বনভোজনে। বড় রেস্টুরেন্টগুলোর রয়েছে গরম খাবার পৌছে দেয়ার আধুনিক ব্যবস্থা। নিজ এলাকা ও সংগঠনের সদস্যদের মাঝে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে আয়োজিত অনেক বনভোজনে নানা কারণে ঘটছে অপ্রীতিকর ঘটনা। এসব নিয়ে সংগঠন ভেঙ্গে যাওয়ার খবরও পাওয়া যায়। বনভোজনের অন্যতম আকর্ষন হয়ে উঠেছে র‌্যাফেল ড্র’র পুরস্কার। এছাড়া বিনোদনের ব্যবস্থাও থাকে বনভোজনে। সবকিছু মিলিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের আনন্দ উৎসবের অন্যতম অনুসঙ্গ এখন বনভোজন। করোনা মহামারিকালে বিগত দু’বছর হাঁপিয়ে উঠা মানুষ বনভোজনে গিয়ে কিছুটা হলেও ফেলছে স্বস্থির নিঃশ্বাস। অপরদিকে দেখা মিলছে পুরনো বন্ধু-বান্ধবের। পরিবারের ছোট ছেলেমেয়ে ও মহিলারা খেলাধূলা সহ উপভোগ করছে কিছুটা নির্মল আনন্দ। বাংলাদেশী কমিউনিটিতে এতো বনভোজন আয়োজিত হলেও কমিউনিটির মৌলিক যে অর্থ ‘কমন কমিউনিটি’ তা এখনো গড়ে উঠেনি।


advertisement

Posted ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.