নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
যুক্তরাষ্ট্র সিনেটের মেজরিটি লিডার চাক শ্যুমার বাংলাদেশী আমেরিকান কম্যুনিটির জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। গত ১১ জুন বিকেলে নিউইয়র্ক সিটির জ্যামাইকার একটি রেস্টুরেন্ট মিলনায়তনে বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটি আয়োজিত টাউন হল মিটিংয়ে বক্তব্য রাখেন ডেমক্রেট দলীয় প্রভাবশালী এ নেতা। বাংলাদেশে করোনা ভ্যাকসিন পাঠানো, স্থানীয় বাংলাদেশীদের ইমিগ্রেশন সমস্যা, নিউইয়র্কের বাংলাদেশীদের জন্য একটি একটি কমিউনিটি হল নির্মাণসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে এটি ছিল তার দ্বিতীয়বারের মতো অংশগ্রহণ। বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটির কর্মকর্তা ডেমোক্রেটিক ডিস্ট্রিক্ট লিডার মোফাজ্জল হোসেন এবং সাউল ওয়েপ্রিন ডেমোক্রেটিক ক্লাবের ভাইস প্রেসিডেন্ট জামি কাজীর নিমন্ত্রনে বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটির নেতা ও নেত্রীবৃন্দের সাথে সাক্ষাৎ করতে আসেন সিনেট মেজরিটি লিডার চাক শুমার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্টেট সিনেটর লিরোয় কোমরি, অ্যাসেম্বলি মেম্বার ডেভিড ওয়েপ্রিন, কাউন্সিল মেম্বার এড্রিয়েন এডামস, কাউন্সিল মেম্বার জিম জেনারো, ডেপুটি বরো প্রেসিডেন্ট রণদা বিন্দা, ডিস্ট্রিক্ট লিডার লেসলি স্পিগনার সহ আরো অনেকেই। বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্টিত শোভায় বক্তব্য পেশ করেন সিনিয়র সহসভাপতি মোহাম্মদ সেলিম খান, সাধারণ সম্পাদক আমিন মেহেদী, উপদেষ্টা ও নারী নেত্রী মাজেদা উদ্দিন, প্রধান উপদেষ্টা মোর্শেদ আলম, এবং ডিস্ট্রিক্ট লিডার এট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটির সভাপতি মোহাম্মদ আলী তার বক্তব্যে সিনেটর শুমারের নিকট নিউ ইয়র্কের বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য চেয়েছেন কমিউনিটি সেন্টার এবং তিনি সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কের বোর্ড অফ ট্রাস্টিতে একজন বাংলাদেশী মুসলমানকে নিয়োগের অনুরোধ করেন। তিনি খুব গুরুত্বের সাথে সিনেটর শুমারকে বলেছেন গভর্নর কুওমোর সাথে কথা বলে সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কের বোর্ড অফ ট্রাস্টিতে একজন বাংলাদেশীকে স্থান দিতে, কেননা সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কে বিশ হাজার মুসলিম শিক্ষার্থী রয়েছেন এবং ঈদের সময় তাাদের ক্লাস করতে হয়। সাধারণ সম্পাদক আমিন মেহেদী এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ সেলিম খান প্রধান অতিথিকে অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানান এবং বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটির জন্য ফেডারেল ফান্ড চেয়েছেন যেন সংগঠনটি আরো মজবুত ভাবে বাংলাদেশী এবং নিউ ইয়র্ক বাসীদের জন্য কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে পারে। মোর্শেদ আলম বাংলাদেশের জন্য ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা করা এবং রোহিঙ্গ্যাদের বিষয়ে সিনেটর শুমারকে তাগিদ দিয়েছেন। অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী ইমিগ্রেশন সহজ করার জন্যও তাগিদ দিয়েছেন। এছাড়াও ডিস্ট্রিক্ট লিডার মোফাজ্জল হোসেন নিজের অভিজ্ঞতার কথা বলে বাংলাদেশীদের বিভিন্ন অর্জনের কথা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে তুলে ধরেন এবং তার ফল হিসেবে শিক্ষায় সাফল্য অর্জনের জন্য স্পেশাল সাইটেশন পেয়েছেন বোস্টন কলেজের ছাত্র হোসেন মোহাম্মদ মুহাইমিন, সিটি টেকের ছাত্রী তাসনিয়া হোসেন, জুরিস ডাক্তার আলমা আলী, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রী নামিরা মেহেদী, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির ছাত্রী আবীবা দ্যুতি, এবং মেডিকেল ডাক্তার আফসানা রহমান। সাইটেশন পেয়েছেন ডেমোক্রেটিক ডিস্ট্রিক্ট লিডার ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন। বিগত কার্যক্রমের সাফল্যের জন্য সাইটেশন প্রদান করা হয়েছে বাংলাদেশী আমেরিকান সোসাইটিকে।
সিনেটর শুমারের নেতৃত্বে আমেরিকায় এই প্রথম একজন মুসলিম ফেডারেল কোর্ট জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি অভিবাসীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে বলেছেন যে যখন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম ব্যান চালু করেছিলেন তখন একটি আফঘানিস্তানি মহিলা তার কাছে বলেছিলেন যে এই সিস্টেম অনুযায়ী তিনি তার স্বামী এবং তার ছেলেমেয়ে তাদের বাবাকে কখনোই আর দেখতে পারবে না। এই কথা শুনে সিনেটর কেঁদে দিয়েছিলেন। তিনি আরো বলেছেন যে ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সাথে যোগাযোগ করবেন টেম্পোরারি প্রটেকশন স্টেটাসের জন্য, যেন অভিবাসীরা সহজে গ্রীন কার্ড পেতে পারেন। তাছাড়া তিনি বলেছেন যে তিনি আমেরিকার ইমিগ্রেশন পদ্ধতির বিস্তৃত সংশোধনের জন্য বিল পাস করবেন, যেন ১১ মিলিয়ন আনডকুমেন্টেড অভিবাসীদেরকে সিটিজেনশিপের পথ খুলে এবং আরো অনেক ইম্মিগ্রান্টদেরকে আমেরিকাতে আসার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
সিনেটর শুমার বলেছেন যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইতিমধ্যে ৫০০ মিলিয়ন ভ্যাকসিন পৃথিবী জুড়ে দেয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তার মধ্যে সাত মিলিয়ন বাংলাদেশের জন্য বরাদ্দ। আমি কথা দিচ্ছি, বাংলাদেশ যেন আরো ভ্যাকসিন পায় তার জন্য আমি লড়াই করে যাবো। আমি আপনাদের সাথে কাজ করবো যেন সিটি থেকে ফান্ড নিয়ে আপনাদের জন্য কমিউনিটি সেন্টারের ব্যবস্থা করা হয়”। বলা বাহুল্য যে সিনেটর শুমার নিউ ইয়র্ক সিটির জন্য ৬ বিলিয়ন ডলার ফেডারেল ফান্ড থেকে বরাদ্দ রেখেছেন। তিনি ফেডারেল বাজেট থেকেও কমিউনিটি সেন্টারের জন্য সাহায্য আনার চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন। সিনেটর শুমার আরো বলেছেন যে তিনি গভর্নরের সাথে যোগাযোগ করবেন সিটি ইউনিভার্সিটি অফ নিউ ইয়র্কের বোর্ড অফ ট্রাস্টিতে একজন মুসলিমকে অন্তর্ভুক্তক্ত করার জন্য। তিনি বক্তব্য শেষ করেন মুসলিম এবং এশিয়ান আমেরিকানদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে।
অনুস্টানে উপস্হিত ছিলেন, কমিউনিটি লিডার শাহ নেওয়াজ, আলী ইমাম, আব্দুর রহিম হাওলাদার, আবু নাসের, ফকরুল আলম, তৈয়বুর রহমান, বীর মুক্তিযাদ্ধা মুকিত চৌধুরী, শাহ সহিদুল হক, ফারুক হোসেন মজুমদার, মির্জা জামান, মনিরুল হক চৌধুরী হেলাল, ফাহাদ সোলেমান, শামসুল হক, জাবেদ উদ্দীন, হোসনে আরা, রিমন ইসলাম, রোবাইয়া রহমান, আমজাদ হোসেন সেলিম, আবদুস সাত্তার খান, মিল্টন ভূঁইয়া, আমিনুর রহমান রুবেল, মোহাম্মদ কাশেম, বদরুল ইসলাম খান, ফয়েজ উল্লা, ফয়সাল হক দোলন, ওহিদুর রহমান লিটন, ডা: নার্গিস রহমান, নিয়াজ আশরাফ হোসেন, আমিন খান, রফিকুল ইসলাম, ও কমিউনিটির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
Posted ২:২১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh