সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪ | ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন

বাংলাদেশে ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করছে

  |   রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

বাংলাদেশে ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করছে

ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির দপ্তর থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের বৈদেশিক বাণিজ্যে বাধা বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশে ঘুষ, দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতাকে চিহ্নিত করেছে। বলেছে, এর ফলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। দীর্ঘ ৩৯৪ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বাংলাদেশ অংশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দুর্নীতি একেবারেই সাধারণ বিষয়। সরকারি ক্রয় প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ জাতীয় ইলেকট্রনিক পোর্টাল চালু করেছে। কিন্তু মার্কিন অংশীদাররা তা নিয়ে উদ্বেগ তুলে ধরেছেন। তারা বলেছেন, এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় আউটডেটেড বা মেয়াদোত্তীর্ণ প্রযুক্তিগত বৈশিষ্ট্য। এর ফলে সুবিধা দেয়া হয় পছন্দের দরদাতাদের। সরকারি টেন্ডারে আছে সার্বিক স্বচ্ছতার অভাব। মার্কিন বেশ কিছু কোম্পানি অভিযোগ করেছে, ক্রয় প্রক্রিয়ায় প্রভাব বিস্তারের জন্য মাঝে মাঝে স্থানীয় অংশীদারদের ব্যবহার করে তাদের বৈদেশিক প্রতিযোগীরা। ফলে মার্কিন প্রতিদ্বন্দ্বীদের সামনে বাধা সৃষ্টি করা হয়।

বাংলাদেশে সরকারের টেন্ডার প্রক্রিয়ায় বড় রকম জালিয়াতির অভিযোগ করেছে মার্কিন কোম্পানিগুলো। তারা এক্ষেত্রে দরপত্র প্রক্রিয়ায় ঘুষ, প্রতিযোগিতাহীন চর্চা এবং স্বচ্ছতার অভাব আছে বলে অভিযোগ করেছে। এসব কারণে সরকারি টেন্ডার প্রক্রিয়ায় পিছিয়ে পড়ছে মার্কিন কোম্পানিগুলো।
প্রতিবেদনে অশুল্ক বাধা হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এখনো ‘কাস্টমস ভ্যালুয়েশন লেজিসলেশন’ সম্পর্কে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থাকে (ডব্লিউটিও) অবহিত করেনি। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ও বাছাই প্রক্রিয়ার কথা বলে থাকে। মেধাসম্পদ সুরক্ষায় বাংলাদেশ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উদ্যোগ নিলেও এর কার্যকর প্রয়োগ নিয়ে নিশ্চিত নয় যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিবেদনে উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে নকল পণ্য সহজলভ্য। ভোগ্যপণ্য, পোশাক, ওষুধ ও সফটওয়্যার খাতের পণ্যগুলো বাংলাদেশে নকল হচ্ছে বলে মার্কিন অংশীদাররা অভিযোগ করেছেন। বাংলাদেশে ডিজিটাল বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধার কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিভিন্ন আইন নিয়েও যুক্তরাষ্ট্র তার উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ থেকে লভ্যাংশ বিদেশে নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় অস্বচ্ছতার কথা যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা তুলে ধরেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ থেকে রেমিট্যান্স বিদেশে পাঠাতে আইনি জটিলতার কথাও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। শ্রম ইস্যুতে উদ্বেগের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি) পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য ঘোষণা করে। এটি এখনো বহাল রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে। বলা হয়েছে, মেধাসম্পদ সম্পর্কিত আইনের বেশ কিছু সংস্কার করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে আছে ২০২২ সালের এপ্রিলে নতুন প্যাটেন্ট আইন, ২০২৩ সালের অক্টোবরে কপিরাইট সংশোধন, ২০২৩ সালের জুলাইয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইন অ্যাক্ট কার্যকর করা। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের প্রয়োজন স্বচ্ছ আইন প্রণয়ন এবং শাসন ব্যবস্থা, যেখানে মেধাসম্পদে (আইপি) ফারাক চিহ্নিত করতে অংশীদারদের কাছ থেকে মতামত নেয়া হয়। এর মধ্যদিয়ে মেধাসম্পদের অর্থবহ উন্নতি করা যায়। বাংলাদেশের আইপি রেজিমকে শক্তিশালী করা, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এবং সরকারের অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অধিক সমন্বয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে আছে কাস্টমস, অফিস অব দ্য অ্যাটর্নি জেনারেল, কপিরাইট অফিস, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি, ডিপার্টমেন্ট অব প্যাটেন্টস, ডিজাইন্স অ্যান্ড ট্রেডমার্ক। বাংলাদেশের আইপি রাইটস বাস্তবায়ন উন্নত করতে হবে কাস্টমস কর্মকর্তা, পুলিশ এবং বিচারবিভাগ প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে সুবিধা পেতে পারে। বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে তার স্বীকৃতি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব কমার্স প্যাটেন্ট অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অফিস ও অন্য সরকারি এজেন্সির নিয়মিত প্রযুক্তিগত সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে।


২০০৬ সালে ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি অ্যাক্ট নামে আইন করে বাংলাদেশ। তা সংশোধিত হয় ২০১৩ সালে। এই আইনের অধীনে যেকোনো কম্পিউটার সিস্টেমে প্রবেশ করতে পারে সরকার। যেকোনো কম্পিউটার সিস্টেম থেকে তারা তথ্য নিতে পারে। এই আইনের অধীনে যেকোনো ডাটা, ভয়েস কলে বিধিনিষেধ দিতে পারে বাংলাদেশ। অনলাইন যোগাযোগে সেন্সর করতে পারে। রাজনৈতিক স্পর্শকাতর ইভেন্টগুলোকে সামনে রেখে ২০১৯, ২০২০ এবং ২০২৩ সালে বেশ কয়েকবার রাজনৈতিক কারণে ডাটা ট্রান্সমিশন সীমিত করতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। এসব ইভেন্টের মধ্যে আছে স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের নির্বাচন। এতে আরও বলা হয়, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ভয়েস কল বাদে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২০ সালের আগস্ট পর্যন্ত সব রকম সার্ভিস বন্ধ করে দিতে মোবাইল অপারেটরদের নির্দেশ দেয় বিটিআরসি। ডাটা সুরক্ষা আইনকে আধুনিকায়ন করতে যথেষ্ট পরিবর্তন করে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ। এই আইনটি ২০২৩ সালের নভেম্বরে নীতিগতভাবে অনুমোদন পায় মন্ত্রিপরিষদে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরেও আইন মন্ত্রণালয়ের ব্যবস্থাধীনে ছিল এই আইনটি। এটা একবার চূড়ান্ত দফায় অনুমোদন পেয়ে গেলে এই আইনে বাংলাদেশের যেকোনো ব্যক্তির ডাটা সংগ্রহ, প্রক্রিয়া, ব্যবহার, শেয়ার এবং অন্যান্য কাজে ব্যবহার করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশের বাইরে অথবা বাংলাদেশে নাগরিকরা যেসব কাজ করছে তা এর আওতায় থাকবে। এই আইনের অনেক বিধিবিধান নিয়ে উদ্বেগ আছে। এসব ব্যক্তির ডাটাকে লোকালাইজেশন করা হবে। এতে বাংলাদেশের আইনপ্রয়োগকারীরা এসব ডাটার সুবিধা পাবেন।

লভ্যাংশ, রাজস্ব এবং বৈদেশিক পেমেন্ট পাঠানো অনুমোদিত। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, বাংলাদেশ থেকে অর্থ স্থানান্তর এখনো বাধার মুখে। আছে স্বচ্ছতার অভাব। এর মধ্যে আছে প্রবর্তন লাভ, লভ্যাংশ এবং অন্য মূলধন। এ জন্য কিছু কোম্পানিকে অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে এক বছর। যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলো বলেছে, এজেন্সি পর্যায়ের রেগুলেটররা উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।


advertisement

Posted ১২:৩৩ পূর্বাহ্ণ | রবিবার, ৩১ মার্চ ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.