শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ | ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বাইডেনের ইমিগ্রেশন সংস্কার বিল ঝুঁকিতে!

মোহাম্মদ আজাদ :   |   বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১

বাইডেনের ইমিগ্রেশন সংস্কার বিল ঝুঁকিতে!

ছবি : সংগৃহীত

প্রেসিডেন্ট প্রস্তাবিত ইমিগ্রেশন সংস্কার বিল ঝুঁকির মুখে পড়েছে। ভঙ্গুর ইমিগ্রেশন ব্যবস্থায় সংস্কার আনার লক্ষ্যে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাইছেন কংগ্রেসে সেটি পাস হওয়ার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ। বাইডেনের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে উত্থাপিত দুটি বিলের ওপর আজ বৃহস্পতিবার ভোট হওয়ার কথা। বিল দুটি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী আনুমানিক এক কোটি ১০ লাখ ইমিগ্রান্টকে পর্যায়ক্রমে সিটিজেনশিপ দেয়ার পথে এগিয়ে নেয়ার সংক্রান্ত। গত মাসে বিলটি হাউজে উত্থাপন করা হয়। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে প্রবেশে করার উদ্দেশে দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে বিপুল সংখ্যক বিদেশি নাগরিকের সমাবেশ ঘটেছে, যা বিগত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক বলে বর্ণনা করেছেন সীমান্ত রক্ষাকারী সংস্থার কর্মকর্তারা।

উত্থাপিত ইমিগ্রেশন বিলটি যে কংগ্রেসে সহজে পাস হওয়ার নয় তা প্রায় নিশ্চিত। কারণ ইমিগ্রেশন ইস্যুতে দুই দলের অবস্থান বিপরীত মেরুতে এবং সিনেটে ডেমোক্রেটদের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় ইমিগ্রেশন ইস্যুর মত একটি স্পর্শকাতর ইস্যুতে প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুসারে অবৈধ ইমিগ্রান্টদের ব্যাপকভাবে বৈধতা প্রদানের মত কোনকিছু রিপাবলিকান সিনেটররা বাধাগ্রস্ত করবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ সিনেটে গেলে বিলটিকে রিপাবলিকানদের ‘ফিলিবাষ্টার’ করতে পারে। সেজন্য দাবী উঠেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান থেকে ‘ফিলিবাস্টার’ পদ্ধতি বাতিল করে সংশোধন করার জন্য। যদিও বাইডেনের পরিকল্পনায় আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের প্রতি অ্যামনেষ্টি ঘোষণা করে তাদের ঢালাওভাবে বৈধতা দেয়ার মত কোন ব্যাপার নেই, বরং বিদ্যমান অবস্থা থেকে ইমিগ্রান্টদের অনিশ্চিত জীবনে স্বস্থি আনার জন্য শর্তসাপেক্ষে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথা রয়েছে। কিন্তু ইমিগ্রান্টদের বৈধতা দান সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ই রিপাবলিকানদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।


ডেমোক্রেটদের পরিকল্পনা পাস হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করেছেন সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির চেয়ারম্যান ও দ্বিতীয় প্রভাবশালী ডেমোক্রেট ইলিনয়ের সিনেটর ডিক ডরবিন। গত সোমবার তিনি বলেন, ১১ মিলিয়ন আনুডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টকে বৈধতা দান করে নাগরিকত্ব প্রদানের দিকে নিয়ে যাওয়ার বিল পাসের মত প্রয়োজনীয় সমর্থন আমাদের আছে বলে আমার মনে হয় না। আমরা আনডকুমেন্টেডদের সমস্যার একটা সমাধান চাই। কিন্তু আমাদের যে সীমাবদ্ধতা তাও আমাদের মনে রাখতে হবে। কৌশল ও বিচরক্ষণতার সঙ্গে চলতে হবে আমাদের। কারণ রিপাবলিকানদের ‘ফিলিবাস্টার’ ঠেকানোর মত প্রয়োজনীয় ৬০টি ভোট আমাদের নেই। সেজন্য দক্ষিণ সীমান্তে জড়ো হওয়া বিদেশিদের নিয়ে সংখট সৃষ্টি হয়েছে তা নিস্পত্তি করা কঠিন হয়ে উঠবে। হাউজ ডেমোক্রেট লিডার স্টেনি হয়ার সাংবাদিকদের বলেছেন যে আজ বৃহস্পতিবার হাউজ দুটি ইমিগ্রেশন বিল পাস করবে এবং আগামী মঙ্গলবার বিল দুটির প্রক্রিয়াগত দিকের উপর ভোটগ্রহণ করা হবে। তিনি প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন যে, শেষপর্যন্ত হাউজ সুদূরপ্রসারী এক ইমিগ্রেশন সংস্কার পরিকল্পনা পাস করতে যাচ্ছে।

রিপাবলিকানরা যুক্তি দিচ্ছেন যে ডেমোক্রেটদের আনা ইমিগ্রেশন সংস্কার বিলে এমন সব বিধিবিধান যুক্ত করা হয়েছে , যা অবৈধ সীমান্ত অতিক্রমে বিদেশিদের আরো উৎসাহিত করবে। প্রতিদিন হাজার হাজার তরুণ, যাদের বয়স ১৮ বছর বয়সের নিচে, তারা মেক্সিকো সীমান্ত পেরিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করছে, যাকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সেক্রেটারী অ্যালেজান্দ্রো মেয়োরকাস গত দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ ইমিগ্রান্ট অনুপ্রবেশ ও জড়ো হওয়ার ঘটনা। রিপাবলিকানরা এজন্য প্রেসিডেন্ট বাইডেনের দোষারূপ করেছেন যে, ট্রাম্পের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতি থেকে প্রেসিডেন্ট বাইডেন সরে আসার কারণে সীমান্তে অবৈধ ইমিগ্রেশন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।


এদিকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্রে না আসার আহ্বান জানিয়েছেন। দক্ষিণ সীমান্তে হাজার হাজার মানুষ যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকার জন্য তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন। এ অবস্থায় তার ইমিগ্রেশন নীতি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে। এবিসি নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ইমিগ্রান্টদের যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে যাত্রা করার ব্যাপারে তার অসম্মতির কথা জানান। এর আগে দেশটির হোমল্যান্ড সিক্যুরিটি বিভাগের প্রধান তাদের অভিবাসন নীতিমালার বিষয়ে কথা বলেন। ঘণ্টাকয়েক পরেই প্রেসিডেন্ট নিজেও এ বিষয়ে বক্তব্য রাখলেন।
একই সঙ্গে তিনি ট্রাম্পের কঠোর নীতিমালা তুলে দেয়ায যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে ইমিগ্রান্টদের চাপ বেড়েছে বলে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে, তা ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন। তিনি বলেন, ২০১৯/২০২০ সালেও শরণার্থীদের এই ধরনের চাপ ছিল। বাইডেন বলেন, আমি শুনেছি, ইমিগ্রান্টদের ধারণা আমি খুব ভাল লোক। তাই তারা এখানে আসতে চাইছে। কিন্তু আমি বলে দিচ্ছি, এটা তাদের ধারণা মাত্র, এটা চুক্তি নয়। আমি তাদের উদ্দেশে পরিষ্কার করে বলছি, আপনারা আসবেন না। আপনাদের শহর, দেশ বা সম্প্রদায় ছেড়ে আসবেন না।

গত ২০ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্সিয়াল দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম দিনই বাইডেন তার পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পের বেশ কয়েকটি বিতর্কিত নীতি বাতিল করে দেন। এগুলোর মধ্যে ছিল মেক্সিকো দেয়াল নির্মাণ বন্ধ করা এবং যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাসরত ইমিগ্রান্টদের নাগরিকত্ব দেয়ার সুযোগ সৃষ্টির পথ উন্মোচন করে দেয়া।


রিপাবলিকান সমালোচকরা তার এ পদক্ষেপের সমালোচনা করেন। তাদের দাবি, বাইডেনের এই উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে আগমণকারীদেরই উৎসাহিত করবে। শীর্ষস্থানীয় রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান কেভিন ম্যাকার্থি মেক্সিকো সীমান্ত পরিদর্শন করে এসে অভিযোগ করেন, বাইডেন সঙ্কট সমাধান নয়, সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। তবে বাইডেনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রধান আলেজান্দ্রো মায়োরকাস ১৬ মার্চ প্রশাসনের অভিবাসন নীতির পক্ষে কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ২ দশকের মধ্যে এ বছরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে চাইছে, এমন দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেন, এটা হঠা চাপ। তবে এসব চাপ আগেও ছিল। ২০১২, ২০১৪ এবং এর আগেও হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ‘আমরা আমাদের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখছি, প্রচলিত আইন প্রয়োগ করছি এবং আমাদের মূল্যবোধ এবং নীতিগুলোর ব্যাপারে সৎ থাকছি।’

Posted ১১:৪৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ মার্চ ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.