শনিবার, ১১ মে ২০২৪ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

ভোগ্যপণ্যের দাম ফের ঊর্ধ্বমুখী, ব্যয় কমিয়েছেন ৯২ শতাংশ আমেরিকান

বাংলাদেশ ডেস্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩

ভোগ্যপণ্যের দাম ফের ঊর্ধ্বমুখী, ব্যয় কমিয়েছেন ৯২ শতাংশ আমেরিকান

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে ভোক্তারা তাদের খরচ কমাতে চান ছবি : রয়টার্স

নিউজ চ্যানেল সিএনবিসি ও ব্যবসায়িক ইন্টেলিজেন্স কোম্পানি মর্নিং কনসাল্টের জরিপ অনুযায়ী, প্রায় সব আমেরিকানই তাদের ব্যয়ের পরিমাণ কমাচ্ছেন। সমীক্ষায় দেখা যায়, ৯২ শতাংশ আমেরিকানই ব্যয় কমিয়ে দিয়েছেন। ওয়ালমার্ট, টার্গেট, হোম ডিপো ও বেস্ট বাইয়ের মতো খুচরা বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের প্রথম প্রান্তিকের প্রতিবেদনেও ভোক্তা ব্যয়ের পরিবর্তনের বিষয়টি উঠে এসেছে। যেখানে দেখা যায়, অধিকাংশ ভোক্তাই ব্যয়ের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় অনেক বেশি সতর্ক বা হিসাবি হয়ে উঠেছেন। খবর সিএনবিসি।

যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতির জের ধরে ক্রেতারা তাদের আর্থিক সংকোচনের বিষয়ে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে মধ্যম আয়ের আমেরিকানদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। জরিপের উত্তরদাতাদের মধ্যে ৯২ শতাংশ মধ্যম আয়ের আমেরিকান, যারা বছরে ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ডলার পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেন। প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়, এ শ্রেণীর লোকরা দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়টি ঘিরে খুব বেশি চিন্তিত। নিম্ন ও উচ্চ আয়ের গোষ্ঠীর ৮৮ শতাংশ লোকই উচ্চমূল্য সম্পর্কে উদ্বিগ্ন বোধ করেন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। বছরে যাদের আয়ের পরিমাণ ১ লাখ ডলার, তাদের উচ্চ আয়ের ব্যক্তি ধরা হয়েছে। সমীক্ষা অনুসারে, এক বছর আগে উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের মধ্যে ৯২ শতাংশই মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল, যদিও আগের তুলনায় এ শ্রেণীর অবস্থার উন্নতির হয়েছে। তবে উচ্চমূল্যের আর্থিক চাপ নিম্ন ও উচ্চ আয়ের তুলনায় মধ্যম আয়ের ব্যক্তিদের ওপর বেশি প্রভাব ফেলছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।


জরিপ অনুসারে, গত ছয় মাসে উচ্চমূল্যের কারণে প্রায় ৮০ শতাংশ ভোক্তা নিত্যপ্রয়োজনীয় নয়-এমন পণ্য যেমন বিনোদন সরঞ্জাম, গৃহসজ্জা, পোশাক, যন্ত্রপাতিসহ আরো অনেক ক্ষেত্রে খরচ কমিয়েছেন। দুই-তৃতীয়াংশ উত্তরদাতারা মুদিপণ্য, ইউটিলিটি ও গ্যাসের মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবহার কমানোর কথা জানান। মুদিপণ্যের ক্ষেত্রে অর্ধেকেরও বেশি ভোক্তা বলেছেন তারা সস্তা বিকল্প কিনছেন বা সাধারণত কম কিনছেন।

ওয়ালমার্টের প্রধান নির্বাহী ডগ ম্যাকমিলন খুচরা বিক্রয়ের প্রথম প্রান্তিকের উপার্জন সম্পর্কে বলেছেন, ‘গ্রাহক মূল্যস্ফীতির প্রভাবের কারণ খোঁজা চালিয়ে যাচ্ছেন। ওয়ালমার্টের আমেরিকান শাখাগুলোয় প্রাইভেট ব্র্যান্ডের অনুপ্রবেশ আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১১০ বেসিস পয়েন্ট বেড়েছে। প্রাইভেট ব্র্যান্ড হচ্ছে স্টোর বা নিজস্ব ব্র্যান্ড, যা খুচরা বিক্রেতা দ্বারা বিকশিত এবং জাতীয় বা সুপরিচিত ব্র্যান্ডগুলোর বিকল্প পণ্য তৈরি করে। ব্যাংক অব আমেরিকার সমষ্টিগত ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড খরচের তথ্য অনুসারে, মে মাসে সাশ্রয়ী মূল্যের মুদি দোকানে অনেক বেশি ক্রেতা ভিড় করেছেন। অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার সময়ে বা যখন ভোক্তারা তাদের খরচ কমাতে চান, তখন সাশ্রয়ী মূল্যের মুদি দোকানগুলো কম দাম বেঁধে দেয়ার জন্য বেশিসংখ্যক গ্রাহককে আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। ব্যাংক অব আমেরিকার নিরাপত্তাবিষয়ক বিশ্লেষক রবার্ট ওহেমস বলেন, ‘আমরা মনে করি ভোক্তারা তাদের ক্রয় প্রবণতা বদলেছেন।’ তিনি এক্ষেত্রে ট্রেড ডাউনের কথা উল্লেখ করেন। ট্রেড ডাউন বলতে উচ্চমূল্যের বা প্রিমিয়াম পণ্য থেকে কম মূল্যের বিকল্প পণ্য কেনাকে বোঝানো হয়। রবার্ট ওহেমস বলেন, ‘পর্যবেক্ষিত ব্যয়ের প্রবণতা মূলত উচ্চ আয়ের ব্যক্তিদের কাছ থেকে ট্রেড ডাউনের প্রতিফলন, যা গ্রোসারি আউটলেট ও ওয়ালমার্টের মন্তব্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।’


সিএনবিসি ও মর্নিং কনসাল্টের জরিপে অংশগ্রহণকারী উত্তরদাতাদের দুই-তৃতীয়াংশই বলেছেন, তারা ছয় মাসের মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন। এর মধ্যে ৭৭ শতাংশ জানিয়েছেন তারা গৃহস্থালি পরিষেবা, স্বাস্থ্যসেবার মতো পণ্যের ওপর ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন। চলতি মাসের শুরুতে অনলাইনে জরিপটি পরিচালিত হয়। এতে ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি অংশগ্রহণ করে।
মূল্যস্ফীতি ও উচ্চ খাদ্যমূল্য পরিস্থিতি ঘিরে বড় ধরনের অস্থিরতা মোকাবেলা করতে হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রকে। যদিও মার্চ-এপ্রিলে খাদ্যদ্রব্যের মূল্যহ্রাস খানিকটা স্বস্তি হয়ে আসে দেশটির জন্য। তবে তা খুব বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। মে মাসে পুনরায় বেড়ে যায় মার্কিন ভোগ্যপণ্যের দাম। মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে কমলেও সুপারমার্কেটে ক্রমবর্ধমান নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নতুন করে দুঃসংবাদ বয়ে আনছে খাদ্য ক্রয়ের সংকটে থাকা মানুষের জন্য। বিশেষ করে যারা খাবার ক্রয় করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে। খবর সিএনএন বিজনেস। ঋতুগত পরিবর্তনের সঙ্গে সামঞ্জস্য করে এপ্রিল-মে পর্যন্ত ভোগ্যপণ্যের দাম দশমিক ১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে বলে জানাচ্ছে লেবার স্ট্যাটিসটিকস ব্যুরোর কনজিউমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক, যা মূল্যস্ফীতির অন্যতম পরিমাপক। এ সময় রেস্তোরাঁতে মেনু আইটেমের দাম বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ।

সামগ্রিকভাবে এক বছর আগের তুলনায় মে মাসে ভোগ্যপণ্যের দাম ৫ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি ছিল। গত বছরের তুলনায় মেনু আইটেমের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৩ শতাংশ। বছরজুড়ে খাবারের দাম বেড়েছে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ, যা বার্ষিক ৪ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হারকেও ছাড়িয়ে গেছে। আবার এক বছরের ব্যবধানে কিছু খাবার অনেকটা ব্যয়বহুলও হয়েছে। মার্জারিন (মাখনজাতীয় খাবার) ২২ দশমিক ৫ শতাংশ, ময়দা ১৭ দশমিক ১, ব্রেড বা রুটি ১২ দশমিক ৫ ও চিনির দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ১ শতাংশ।


জুস ও অন্যান্য নন-অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় ৯ দশমিক ৯ শতাংশ, লেটুস ৯ দশমিক ৪, হ্যাম (মাংসজাতীয় খাবার) ৮ দশমিক ২ ও আইসক্রিমের দাম ৮ শতাংশ বেড়েছে। খাবারের মূল্যবৃদ্ধির নেপথ্যে বিভিন্ন কারণ অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। যার মধ্যে অন্যতম চরম আবহাওয়া, ইউক্রেন যুদ্ধ, এভিয়ান ফ্লু ও সাপ্লাই চেইনের উচ্চ খরচের মতো কারণ। তবে খাদ্যবিক্রেতারাও উল্লিখিত কারণগুলোকে সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করে খাবারের দাম বাড়িয়েছেন। তবে ভোক্তারা কম পরিমাণ পণ্য কিনলেও খাদ্য বিক্রি বেড়েছে। তাই খাদ্যপণ্যের মূল্য আরো বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে বা অচিরেই কমার সম্ভাবনা নেই। তবে গত বছর থেকে কয়েকটি খাদ্যপণ্যের দামে খানিক স্বস্তি চিহ্নিত করা হয়। যেমন এক বছরের ব্যবধানে বেকন ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, লেবুজাতীয় ফল ৫ দশমিক ৩, দুগ্ধ ৩ দশমিক ৪, শূকরের মাংসের চপ ২ দশমিক ২ এবং মাছ ও সামুদ্রিক খাবারের দাম ১ দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। তাছাড়া এপ্রিল-মে পর্যন্ত ভোগ্যপণ্যের দাম সামগ্রিকভাবে বাড়লেও বেশ কয়েকটি স্বতন্ত্র পণ্যের দাম কমেছে। যেমন ডিম। পণ্যটির দাম চলতি বছরের শুরুতে ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও গত মাসে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ কমেছে, যা ১৯৫১ সালের জানুয়ারির পর থেকে সবচেয়ে বড় একক-মাসের মূল্যহ্রাস।

Posted ৩:৫৪ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ জুন ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.