বাংলাদেশ অনলাইন : | শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্ট জেইর বোলসোনারো দাবি করেছেন, করোনা ভ্যাকসিন মানুষকে কুমির বানিয়ে দিতে পারে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ছেলেরা মেয়েকণ্ঠে কথা বলবে আর মেয়েদের দাড়ি উঠবে। একারণে নিজে কখনও এই ভ্যাকসিন নিবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
গত ১৭ ডিসেম্বর তিনি এই মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাভাইরাস মহামারিকে অবজ্ঞা করা বিশ্বনেতাদের মধ্যে অন্যতম জেইর বোলসোনারো। শুরু থেকেই তিনি প্রাণঘাতী ভাইরাসটিকে ‘সামান্য ফ্লু’ বলে অবহেলা করেছেন। পরে নিজেই আক্রান্ত হয়েছিলেন। তারপরও তাঁর মত বদলায়নি। বোলসোনারো বলেছেন, ফাইজারের চুক্তিতে একটা বিষয় পরিষ্কার : আমরা কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য দায়ী নই।
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি কুমিরে রূপান্তরিত হন, সেটা আপনার সমস্যা। যদি অতিমানবে (সুপারহিউম্যান) পরিণত হন, যদি কোনও নারীর দাড়ি উঠতে শুরু করে অথবা কোনও পুরুষ নারীকণ্ঠে কথা বলতে শুরু করেন, তাদের কিছু করার থাকবে না। ’
এর আগে গত বুধবার টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেই ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা দেন, ‘এটা বিনামূল্যে হলেও বাধ্যতামূলক নয়।’
মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজার ও জার্মান সংস্থা বায়োএনটেকের তৈরি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হয়েছে কয়েক মাস ধরে। ইতোমধ্যেই ভ্যাকসিনটি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যে ব্যবহারের অনুমতি পেয়েছে।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট রুল জারি করেছেন, করোনা ভ্যাকসিন নেয়া বাধ্যতামূলক, কিন্তু কারও ওপর বলপ্রয়োগ করা যাবে না। কর্তৃপক্ষ চাইলে ভ্যাকসিন না নেয়ায় মানুষজনকে জরিমানা অথবা নির্দিষ্ট জায়গায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে পারবে। তবে জোর করে ভ্যাকসিন দেয়া যাবে না।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘অনেকেই বলবে, আমি বাজে উদাহরণ সৃষ্টি করছি। কিন্তু যারা এসব কথা বলে, সেই নির্বোধদের বলছি, আমি ইতোমধ্যেই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছি, আমার অ্যান্টিবডি রয়েছে। তাহলে আমি কেন ভ্যাকসিন নেব?’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, করোনায় একবার আক্রান্ত হলে আর হবে না- ব্রাজিলিয়ান প্রেসিডেন্টের এই দাবির পক্ষে এখনও তেমন কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি। বরং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে অনেক করোনা রোগী সুস্থ হয়ে ওঠার পর আবারও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ব্রাজিলে করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ের মাঝখানে জেইর বোলসোনারো জুলাইয়ে আক্রান্ত হয়ে তিন সপ্তাহ ভোগার পর সুস্থ হন।
বিশ্বে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমিতে দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে ব্রাজিল। দেশটিতে এপর্যন্ত অন্তত ৭১ লাখ আক্রান্ত এবং ১ লাখ ৮৫ হাজার মানুষ মারা গেছেন।
বৃহস্পতিবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছেন, যা সেপ্টেম্বরের পর থেকে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
উল্লেখ্য, দেশটির টিকাদান কর্মসূচিটি দেরিতে এবং বিশৃঙ্খলাবদ্ধ হওয়ার জন্য বোলসোনারোর বিরোধিতা ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে।
Posted ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh