শনিবার, ১৬ আগস্ট ২০২৫ | ১ ভাদ্র ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

যেভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মন জয় ও পরে হতাশ করেন পুতিন

আল জাজিরা :   |   বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫

যেভাবে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের মন জয় ও পরে হতাশ করেন পুতিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি : সংগৃহীত

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আগামীকাল শুক্রবার আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এতে তিনি এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে ৪৮টি বৈঠকের অভিজ্ঞতা কাজে লাগাতে পারেন।

২৫ বছরের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার নেতৃত্বে থাকা পুতিন পাঁচজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ও কাজ করেছেন। তাঁরা হলেন বিল ক্লিনটন, জর্জ ডব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা, ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন।

স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের সময় থেকে ২০০০-এর দশকের শুরু পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র–রাশিয়ার কিছু বৈঠক তুলনামূলক বন্ধুত্বপূর্ণই ছিল। তবে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক ক্রমেই খারাপ হতে থাকায় পুতিনের সাম্প্রতিক বেশির ভাগ সাক্ষাৎ বিশেষ করে ওবামা ও বাইডেনের সঙ্গে বৈঠকগুলো নিষ্প্রভ ছিল।

এখানে অতীতের সেসব সাক্ষাতের কিছু গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত তুলে ধরা হলো, তাতে দেখা যাবে কীভাবে একসময় জ্যাজ কনসার্ট ও মাছ শিকারের আড্ডাগুলো শেষ পর্যন্ত হুমকিতে গিয়ে ঠেকেছে।

জুন ২০০০: পুতিন–ক্লিনটন সাক্ষাৎ

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার তিন মাসের কম সময়ের মধ্যে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনকে মস্কোতে অভ্যর্থনা জানান। তিনি ক্লিনটনকে ক্রেমলিন ঘুরিয়ে দেখান। এরপর একটি রুশ জ্যাজ ব্যান্ডের পরিবেশনা উপভোগ করেন তাঁরা।

রাশিয়া দুটি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি অনুমোদন করায় পুতিনকে অভিনন্দন জানান বিল ক্লিনটন। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট (বরিস) ইয়েলৎসিন রাশিয়াকে মুক্ত বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত করার পথে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। প্রেসিডেন্ট পুতিনের অধীনে রাশিয়ার সমৃদ্ধি ও প্রতিপত্তি অর্জনের পাশাপাশি মুক্তমত চর্চা ও আইনের শাসন নিশ্চিতের সুযোগ রয়েছে।’

পুতিন তাঁর বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘রাশিয়ার অন্যতম প্রধান অংশীদার’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, মস্কো আর কখনো ওয়াশিংটনের সঙ্গে দ্বন্দ্ব চাইবে না। পুতিন বলেন, ‘কখনো নয়। আমরা সহযোগিতার জন্য কাজ করি। সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে সমঝোতার পথে এগিয়ে যেতে চাই।’

তবে ক্লিনটন চেচনিয়ার বিষয়ে দুই দেশের মতভিন্নতার কথা স্বীকার করেন। এ সাক্ষাতের আগের বছর রাশিয়ায় একাধিক অ্যাপার্টমেন্টে বিস্ফোরণে তিন শতাধিক মানুষ নিহত হলে রুশ বাহিনী চেচনিয়ায় বড় ধরনের অভিযান চালায়। অ্যাপার্টমেন্টে বিস্ফোরণের জন্য চেচেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দায়ী করেছিল মস্কো।

২০০০ সালে পুতিন ও ক্লিনটনের চারটি সাক্ষাতের প্রথমটি মস্কোতে হয়। ২০০১ সালের জানুয়ারিতে এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব ছাড়ার আগে বহুপক্ষীয় অনুষ্ঠানের সময় বাকি তিনটি বৈঠক হয়েছিল।

নভেম্বর ২০০১: পুতিন-বুশ সাক্ষাৎ

নাইন–ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর পুতিন প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশকে ফোন করে সমর্থন জানিয়েছিলেন। দুই মাস পর বুশ টেক্সাসের বাংলোবাড়ি ক্রফোর্ডে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানান। তাঁর বক্তব্যে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের আশা ফুটে উঠেছিল।

ওই সময় বুশ বলেছিলেন, ‘আমি যখন হাইস্কুলে পড়তাম, রাশিয়া আমাদের শত্রু ছিল। এখন হাইস্কুলের ছাত্ররাও রাশিয়াকে বন্ধু হিসেবে জানতে পারবে। আমরা একসঙ্গে পুরোনো সম্পর্ক ভেঙে সহযোগিতা ও আস্থার নতুন সংস্কৃতি গড়ে তুলছি, যেন শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গঠনে আমরা একসঙ্গে কাজ করতে পারি।’ বুশ পুতিনকে একটি পিকআপ ট্রাকে বসিয়ে বিশাল বাংলোবাড়ির ঝরনার দিকে নিয়ে যান।

তবে ২০০২ সালের নভেম্বরে রাশিয়ায় দুজনের সাক্ষাতের সময় পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্প্রসারণকে কেন্দ্র করে মার্কিন নেতৃত্বাধীন প্রচেষ্টার কারণে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দেয়।

জুলাই ২০০৭: পুতিন-বুশ সাক্ষাৎ

২০০৩ সালে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছিল। কিন্তু মতবিরোধ থাকা সত্ত্বেও বুশ পুতিনের সঙ্গে উষ্ণ ব্যক্তিগত সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তিনি পুতিনকে যুক্তরাষ্ট্রের মেইনের কেনেবাঙ্কপোর্টে তাঁর পৈতৃক বাড়িতে আমন্ত্রণ জানান।

দুই নেতা যেসব ক্ষেত্রে তাঁদের মতপার্থক্য রয়েছে, তা স্বীকার করেন। অবশ্য স্বচ্ছতার জন্য একে অপরকে কৃতিত্ব দেন।

বুশ পুতিনকে মাছ শিকারে নিয়ে গিয়েছিলেন। ওই সময় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনই কেবল একটি মাছ ধরতে পেরেছিলেন। পরে মাছটি ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান পুতিন।
এপ্রিল ২০০৮: পুতিন-বুশ সাক্ষাৎ

প্রেসিডেন্ট হিসেবে বুশ ও পুতিনের শেষ বৈঠকটি রাশিয়ার সোচিতে অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে আলোচনার মূল বিষয় ছিল, ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থার সম্প্রসারণ। এতে রাশিয়া আপত্তি জানিয়ে আসছিল।

বৈঠকে কোনো বড় অগ্রগতি হয়নি। দুই নেতা দ্বিমত পোষণের বিষয়ে একমত হন। তবু তাঁদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক অটুট ছিল। বুশ মোট ২৮ বার পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। শুধু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে এর চেয়ে বেশি সাক্ষাৎ করেছিলেন বুশ।

জুলাই ২০০৯: পুতিন-ওবামা সাক্ষাৎ

এ সময় পুতিন প্রধানমন্ত্রী আর তাঁর মিত্র দিমিত্রি মেদভেদেভ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামা মস্কো সফরের সময় পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ২০০৮ সালে জর্জিয়ায় রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে দুই দেশের মধ্যে তখন বিরোধ আরও বাড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ওই আগ্রাসনের বিরোধিতা করেছিল।

ওবামা পুতিনকে বলেন, ‘আমরা সব বিষয়ে একমত না–ও হতে পারি, তবে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সলাপরামর্শের মাধ্যমে এমন সম্পর্ক বজায় রাখতে পারি, যা আমেরিকা ও রাশিয়া উভয় দেশের জনগণের জন্য কল্যাণকর হবে।’

জুন ২০১৩: পুতিন-ওবামা সাক্ষাৎ

ওবামা উত্তর আয়ারল্যান্ডে জি–৮ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাশিয়াকে ১৯৯৮ সালে এই জোটে নেওয়া হয়েছিল। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া দখলের পর রাশিয়াকে এ জোট থেকে বহিষ্কার করা হয়। সাক্ষাতের সময় অপ্রস্তুত অবস্থায় তোলা একটি ছবিতে দুই নেতার এক অপরের প্রতি হতাশা প্রকাশ পেয়েছিল, যা সংবাদের শিরোনাম হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা তখন গৃহযুদ্ধের মধ্যে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পদত্যাগ চাইছিল। কিন্তু রাশিয়া তাঁকে সমর্থন দিচ্ছিল।

ওবামা বলেছিলেন, ‘সিরিয়ার সমস্যা নিয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে পার্থক্য আছে। তবে সহিংসতা কমানো, রাসায়নিক অস্ত্র সুরক্ষিত রাখা এবং এর ব্যবহার বা বিস্তার ঠেকানোর বিষয়ে আমাদের স্বার্থ অভিন্ন।’

Posted ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.