বাংলাদেশ রিপোর্ট : | শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
২০১৮ সালের পর নিউইয়র্ক সিটিতে মানুষের মৃত্যুহার বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা মহামারীর ভয়াবহতায় অন্যান্য স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট মৃত্যুর ঘটনাগুলো তেমন গুরুত্ব লাভ করেনি। মহামারীর কারণে মেডিকেল এক্সমিনার্স অফিসগুলোতে কাজের চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সন্দেহজনক মৃত্যুর ঘটনাও বেড়েছে বলে শণাক্ত করা হয়েছে সিটিতে পরিচালিত আকস্মিক এক তদন্তে। এর কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে দুর্ঘটনাবশত ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রা. বিশেষ করে ব্যথা নিবারণে ব্যবহৃত ‘ওপিয়োইড ফেন্টানিল’ এর প্রয়োগে। ওষুধজনিত নতুন মৃত্যুহারকে নিউইয়র্ক সিটি মেডিকেল এক্সামিনার্স অফিস ‘নতুন স্বাভাবিক’ সংখ্যা হিসেবে বর্ণনা করেছে। গত সপ্তাহের বুধবার অফিস অফ দ্য চিফ মেডিকেল এক্সামিনার এর অপারেশন সেন্টারের ড্যাশবোর্ডে সিটিজুড়ে অনাকাক্সিক্ষতভাবেই ২৪ ঘন্টায় ৩৯টি মৃত্যুর ঘটনা প্রদর্শিত হয়; এর কোনোটি বাড়িতে, কোনোটি দুর্ঘটনায় অথবা অন্য কোনো আঘাতের কারণে।
নিউইয়র্ক সিটির চিফ মেডিক্যাল এক্সামিনার ডা: জেসন গ্রাহাম এটিকে নতুন স্বাভাবিক সংখ্যা বলে বর্ণনা করলেও খুব স্বাভাবিক নয়। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি যে, করোনা মহামারীর তান্ডব কেটে যাওয়ার পর ওষুধের অতিরিক্ত মাত্রাজনিত মৃত্যুহারও কমে আসছে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে নিউইয়র্ক সিটিতে ওষুধের অতিরিক্ত ডোজের কারণে প্রায় ২,৭০০ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, যা দুই দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২২ সালে এ ধরনের মৃত্যুর সরকারি সংখ্যা আরো বেশি ছিল। তখন অতিরিক্ত ওষুধ প্রয়োগের কারণে প্রতি তিন ঘন্টায় গড়ে অন্তত একটি করে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে এবং ডা: জেসন গ্রাহাম ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসকে এমন মৃত্যুর সংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বাজে মাস বলে উল্লেখ করেছেন, রেকর্ডে যার তুলনীয় আর কোনো মাসের উল্লেখ নেই। ওষুধের অতিরিক্ত প্রয়োগে মৃত্যুর ঘটনার প্রতিটি মেডিকেল এক্সামিনারের অফিসে আসে, যেখানে অতি সতর্কতার সঙ্গে সংগৃহীত মৃতের টিস্যু ও রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। মৃতদেহ মৃতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার অনেক পর টক্সিকোলজিস্টরা পরীক্ষানিরীক্ষা করে নির্ণয় করেন যে কি কারণে রোগীদের মৃত্যু ঘটেছে। ডা: গ্রাহাম বলেন, যদি করোনা মহামারীর মতো দুর্যোগপূর্ণ সময় না আসতো, তাহলে অতিরিক্ত মাত্রায় ওষুধ সেবনে মৃত্যুহার আমাদের জীবনের সবচেয়ে জরুরী জনস্বাস্থ্য ইস্যুতে পরিণত হতে পারতো।
মহামারী চলাকালে মেডিকেল এক্সামিনার অফিসের বিজ্ঞানিদের জন্য কাজটি অত্যন্ত কঠিন ছিল। ২০২০ ও ২০২১ সালে এই অফিসকে প্রায় ৩১,০০০ মৃতদেহ পরিবহন ও কিছুদিনের জন্য হলেও সংরক্ষণ করতে হয়েছে। মর্গ, ফ্রিজার ট্রাকেও সংকুলান হচ্ছিল না। কর্মচারি সংখ্যা ছিল অপ্রতুল। ফলে যেসব মৃতদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলোর হাচে সূঁচ আটকে আছে এমন দৃশ্য অস্বাভাবিক ছিল না। বিজ্ঞানিদের দেখার বিষয় ছিল যে বেশি মাত্রায় ওপিয়োইড ফেন্টানিল প্রয়োগে রোগী কত দ্রুত মৃত্যুমুখে চলে যেতে পারে। রোগীর পরিবারের সদস্যরাও অনেক সময় বুঝতে সক্ষম হতেন না যে ডোজ কি হওয়া উচি, কারণ নাকডাকার কারণে ওষুধের মাত্রা বেশি হলে নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়াকেও তারা ভুল বুঝতেন।
Posted ১:১৩ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh