নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
সিটি কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিংগার
নিউইয়র্ক : নিউইয়র্কের আগামী ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রার্থী হিসেবে নিজের নাম ঘোষণা করেছেন কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিংগার। মেয়র নির্বাচিত হয়ে নগরীকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
কোভিড-১৯ এর প্রভাবে আর্থিক সংকটের মুখে নিউইয়র্ক নগরীর রাজ্য সরকার। নগর সরকারের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা হিসেবে নিজের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে স্কট স্ট্রিংগার নগরীর আর্থিক চাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দিয়েছেন।
গত সপ্তাহে আগামী মেয়র নির্বাচনে লড়াই করার ঘোষণা দিয়ে স্ট্রিংগার বলেন, ‘২০২২ অর্থ বছরের বাজেটের প্রাক্কালে নগরী ৪২ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের ঘাটতির সম্মুখীন হবে। আমরা এমন এক পরিস্থিতিতে এসেছি, যখন নিউইয়র্ক নগরী আর্থিক সংকটের মধ্যে পড়ে গেছে। যা আমরা এর আগে কোনো প্রজন্মেই দেখিনি। এ কারণেই সিটি হলে নতুন করে আর্থিক অভিজ্ঞতা ও সরকারি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নেতৃত্বের প্রয়োজন। কেবল আমাদের অর্থনৈতিক পরিবর্তন নয়, নিরাপদ নগরীও গড়ে তুলতে হবে।’
স্কট স্ট্রিংগার বলেন, আমাদের অবশ্যই ওয়াশিংটনের সম্ভাব্য দেউলিয়ার হুমকি থেকে বাঁচতে হবে। নগরীতে গত ২০ বছরে ধনী ব্যক্তি যারা আছেন, যারা এখনো বেশ ভালো আয় করছেন তাঁদের কর বাড়িয়ে দিতে বলার অনুরোধ করতে হবে।
চিকিৎসক, নার্স, খাবার ও বিভিন্ন সরবরাহকারী ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে স্ট্রিংগার বলেন, শহরে তাঁদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়েছে। এ মুহূর্তে তাঁরা আদর্শ সৈনিক। আমি চাই অন্য লোকেরাও এমন আদর্শ সৈনিক হোক।
স্কট স্ট্রিংগার আরও বলেন, মেয়রকে সিটির এজেন্সিগুলোর দক্ষতার দিকে আরও নজর দিতে হবে। এজেন্সিগুলো খুব খারাপভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। এগুলো বহু উপায়ে ফুলে ফেঁপে উতরে গেছে। এমনকি নগরীর এজেন্সিগুলোর মধ্যে অপব্যয়ের মূল হেতু নির্মূল করার কথা ভাবতে হবে। এ ছাড়া নগর সরকার প্রতিদিন কীভাবে নগর পরিচালনা করতে হবে তার নিয়ন্ত্রণ ও মান হারিয়ে ফেলেছে।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে গেলে নগরী আবার লকডাউন করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। গত মার্চে আমার অফিস বন্ধ করে দিয়েছিলাম, কারণ জীবনটা গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পকে বিশ্বাস করে ভাববেন না যে এই সংকট শেষ। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে মাস্ক পরা জরুরি।
নিউইয়র্কের কম্পট্রোলার স্কট স্ট্রিংগার : নিউইয়র্কের মেয়র হওয়ার দৌড়ে তিনি কাকে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে স্ট্রিংগার বলেন, তিনি ‘কে সামনে, কে পেছনে’ সে বিষয়ে সত্যই ভাবেন না।
করোনাভাইরাসের প্রকোপ আবার বেড়ে গেলে কী হবে—তা জানতে চাইলে স্ট্রিংগার বলেন, নগরী আবার লকডাউন করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না। গত মার্চে আমার অফিস বন্ধ করে দিয়েছিলাম, কারণ জীবনটা গুরুত্বপূর্ণ। ট্রাম্পকে বিশ্বাস করে ভাববেন না যে এই সংকট শেষ। নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে মাস্ক পরা জরুরি।
স্ট্রিংগার বলেন, ‘আমাদের অর্থনীতির ব্যাপারটা গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া দরকার। আস্তে আস্তে নগর খুলে দিতে হবে। বিজ্ঞান ও চিকিৎসকদের কথাও মেনে চলতে হবে।’
সাবেক মেয়র পুত্র এন্ড্রু জুলিয়ানি
বাংলাদেশ রিপোর্ট : নিউইয়র্ক সিটির সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানির ছেলে ৩৪ বছর বয়স্ক এন্ড্রু হ্যারল্ড জুলিয়ানি আগামী নির্বাচনে সিটির মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ভাবছেন। নিউইয়র্ক পোষ্টের এক খবর অনুযায়ী আগামী বছর অর্থ্যাৎ ২০২১ সালের সিটি মেয়র নির্বাচনে এণ্ড্রু তাঁর পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নগর পিতার আসন লাভের চেষ্টা করবেন। তিনি বর্তমান মেয়র বিল ডি ব্লাজিওর কট্টর সমালোচক হিসেবে গত চার দশকের মধ্যে ব্লাজিওকে নিউইয়র্ক সিটির সবচেয়ে ব্যর্থ মেয়র হিসেবে বর্ণনা করেছেন। এন্ড্রু জুলিয়ানি তাঁর সম্ভাব্য রাজনৈতিক পরিকল্পনার উপর আলোচনাকালে সতর্ক করেছেন যে আগামী নির্বাচনে যদি বর্তমান মেয়রের মতো একজন মেয়র নির্বাচিত হয়ে আসেন, তাহলে সিটির অবস্থা এমন শোচনীয় পর্যায়ে নেমে যাবে যা বিগত কয়েক দশকেও দেখা যায়নি।
এন্ড্রু জুলিয়ানি নিউইয়র্ক পোষ্টকে বলেছেন, আমি অবশ্যই এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছি এবং আমি যাদের উপর আস্থাশীল তারাও এ ব্যাপারে আমাকে উৎসাহিত করছেন। গত কয়েক বছরের সিটির সমস্যাগুলো অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর সাথে নতুন নতুন সমস্যা যুক্ত হয়েছে, যা থেকে বের হওয়ার কোন পথ নেই বলে মনে হচ্ছে। আমার ভয় হয় যে, ২০২১ সালের নির্বাচনে যদি সঠিক প্রার্থী জয়ী হতে না পারেন, তাহলে ব্লাজিও গৃহীত নীতিগুলো আরো চার বছর পর্যন্ত আমাদেরকে আশির দশকের কথা মনে করিয়ে দিতে থাকবে, যখন নগরীর অবস্থা অত্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল।
তিনি আরো বলেন, বিল ডি ব্লাজিও নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টকে যথাযথ গুরুত্ব দেননি এবং সিটির জন্য তারা যে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে তারও কোন মূল্য দেননি। এ প্রসঙ্গে তিনি সাদা পোশাকের এন্টি ক্রাইম পুলিশ ইউনিট অবলুপ্ত করার বিষয় উল্লেখ করেন। তিনি তাঁর পিতা রুডি জুলিয়ানির অপরাধ বিরোধী কঠোর অবস্থানের দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, অপরাধ নিয়ন্ত্রণে তাঁর গৃহীত কঠোর পদক্ষেপের কারণে নিউইয়র্ক সিটিতে অপরাধের প্রবণতা বহুগুণে হ্রাস পেয়েছিল। তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে অপরাধ হ্রাসে পিতার অনুরূপ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান এন্ড্রু জুলিয়ানি। এতো বড় একটি সিটির আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট আরো শক্তিশালী করতে হবে। সিটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেসরকারি খাতকে আরো উৎসাহিত করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সুবিধা সৃষ্টির জন্য তাদেরকে অধিকতর জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। তাছাড়া সিটিতে বসবাসকারী নিম্ন আয়ের কমিউনিটিগুলোকে এগিয়ে আনার লক্ষ্যে তাদের জন্য মুক্ত বাজার ব্যবস্থা পুনরায় চালু করতে হবে, যা দীর্ঘদিন যাবত সরকারের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভরশীলতার কারণে আটকে আছে। তিনি বলেন, সিটির বিকাশের মূল শর্ত হলো জননিরাপত্তা এবং এটি নিশ্চিত করা যে নিউইয়ক সিটিবাসী নিরাপদ বোধ করছে এবং পর্যটকরা এখানে আসতে স্বস্থি বোধ করছে।
উল্লেখ্য, এন্ড্রু জুলিয়ানি বর্তমানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পাবলিক লিয়াজোঁ অ্যাসিষ্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করছেন। তিনি আরো বলেন, আমি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যে আগামী ৩ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট তাঁর পরীক্ষায় উৎরে যাবেন এবং এর পর আমার মূল কাজ হবে নিউইয়র্ক সিটিকে কিভাবে রক্ষা করতে পারি তার উপায় বিবেচনা করা।
Posted ৭:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh