মোহাম্মদ আজাদ : | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪
ছবি : সংগৃহীত
ডেনাল্ড ট্রাম্পের ভবিষ্যৎ কি? এ নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা দ্বিধা বিভক্ত। গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ম্যানহাটানের একটি ক্রিমিনাল কোর্টে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনীত মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলের সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক ও সেই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার রায় ঘোষণার পরপরই সবকটি সংস্থার জরিপে সাবেক প্রেসিডেন্টের ডেমোক্রেট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চেয়ে জনপ্রিয়তায় পিছিয়ে পড়েছেন ট্রাম্প। এর আগে জনপ্রিয়তায় তিনি বাইডেনের চেয়ে এগিয়ে ছিলেন।
এ নিয়ে গত রোববার ওয়াশিংটন পোস্ট এক প্রতিবেদনে বলেছে যে সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রে জাতীয়ভাবে এনপিআর, পিবিএ ও মারিস্ট ন্যাশনাল এর জরিপে বলা হয়েছে, যদি এ মুহূর্তে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে বাইডেন পাবেন ৫০ শতাংশ ভোট এবং ট্রাম্প পাবেন ৪৮ শতাংশ ভোট। ইউগভ: পোলের জরিপে ভোটারদের প্রশ্ন করা হয়েছিল, আদালতে ট্রাম্প দোষী প্রমাণিত হওয়ার পর ভোটে কোনো ধরনের ধরনের প্রভাব পড়বে কি? এর উত্তরে ২৭ শতাংশ ভোটার বলেছেন যে তারা মনে করছেন যে তারা আর ট্রাম্পকে ভোট দিতে চাচ্ছেন না। একই প্রশ্নের উত্তরে ২৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন যে তারা ট্রাম্পকে ভোট দিতে কার্পণ্য করবেন না। এই প্রশ্নে ৩৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন আদালতের রায়ে কি প্রমাণিত হয়েছে তারা তাতে পাত্তা দিচ্ছেন না। তারা ট্রাম্পকেই ভোট দেবেন।
আগামী মাসের ১১ তারিখে ট্রাম্পের মামলার বিচারক জুয়া মার্চাল ট্রাম্পের শাস্তির মেয়াদ ঘোষণা করবেন। সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। সবগুলো অভিযোগেই তিনি দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। যেসব অভিযোগে ট্রাম্প দোষী প্রমাণিত হয়েছেন সেগুলোতে যদি সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হয় তাহলে ট্রাম্পের ১৩৬ বছরের জেল এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ডলার জরিমানা হবে। কিন্তু আইনঞ্জ ও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন বলছেন যে ট্রাম্পের সর্বোচ্চ সাজা এখানে হচ্ছে না। কারণ অতীতে ট্রাম্পের কোনো ক্রিমিনাল রেকর্ড নেই।
এছাড়া তিনি একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ভিআইপি। আইনজ্ঞ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন যে এখানে ট্রাম্পের সাজা হবে ন্যূনতম এবং তা হতে পারে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড অথবা প্রবেশন ও অর্থদণ্ড। তবে ট্রাম্পকে ঠিক কি ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে তা নির্ভর সম্পূর্ণভাবে বিচারক মার্চানের ওপর।
গাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কি ধরনের শাস্তি আপনারা কামনা করছেন, এ প্রশ্ন নিয়ে মর্নিং কনসাল্ট একটি জনমত জরিপ করেছে। এখানে ৫৪ শতাংশ রেজিস্টার্ড ভোটার বলেছেন যে ট্রাম্প দোষী। ৪৯ শতাংশ ভোটার বলেছেন যে ট্রাম্পকে কারাদন্ড না দিয়ে প্রবেশন দেয়াই ভালো। ৪৪ শতাংশ ভোটার বলেছেন ট্রাম্পের কারাদন্ড হওয়া উচিত।
একই সংস্থার জরিপে প্রায় ৪০ শতাংশ স্বতন্ত্র রেজিষ্টার্ড ভোটার বলেছেন, ট্রাম্পের উচিত নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানো। এখানে ১৫ শতাংশ রিপাবলিকান ভোটারও বলেছেন যে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে ট্রাম্পের সরে দাঁড়ানোই ভালো। রয়টার্স ও আইপএস ওএস এর জরিপে দেখা যাচ্ছে যে ৫৬ শতাংশ রিপাবলিকান ভোটার বলছেন আদালতের রায়ে কি প্রমাণিত হয়েছে সেটিকে তারা আমলে নিচ্ছেন না এবং তারা ট্রাম্পকেই ভোট দেবেন। এখানে ৩৫ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা ট্রাম্পকে ভোট দিতে দ্বিতীয়বার চিন্তা করবেন।
মর্নিং কনসাল্ট শুধুমাত্র রিপাবলিকান ও স্বতন্ত্র ভোটারদের একটি জরিপ প্রকাশ করেছে। তাতে দেখা যায়, ৭৭ শতাংশ রিপাবলিকান ভোটার মনে করছেন ট্রাম্পকে দোর্ষী সাব্যস্ত করা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রনোদিত। ৪৩ শতাংশ স্বতন্ত্র ভোটারও এখানে একই কথা বলেছেন্ নিউইয়র্ক টাইমস ও সিয়ানার এক জরিপে বলা হয়েছে যে ৪৬ শতাংশ ভোটার মনে করেন পর্নো তারকাকে অবৈধভাবে অর্থ প্রদান করে ট্রাম্প অপরাধ করেছেন। একই সংখ্যক উত্তরদাতা এই জরিপে বলেছেন যে ট্রাম্প এখন আর কোনোভাবেই প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন।
গত শুক্রবার ফক্স নিউজ চ্যানেলের সাথে এক সাক্ষাতকারে ট্রাম্পকেক প্রশ্ন করা হয়েছিল যে আপনি কি ধরনের শাস্তির জন্য প্রস্তত আছেন? ট্রাম্প উত্তর দেন যে, কারাদন্ড, প্রবেশন বা হাউজ অ্যারেস্ট যেটাই হোক না কেন তাতে আমার কোনো অসুবিধা হবে না। তিনি বরাবর বলে আসছেন যে তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। গত রোববার নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে আপিলেও ট্রাম্পের জয়ের সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। এই আপিল শেষ হতে ২০২৫ থেকে ২০২৬ সাল পর্যন্ত গড়াবে।
আগামী ১১ জুলাই বিচারক মার্চান ট্রাম্পের শাস্তির মেয়াদ ঘোষণা করার ৪ দিন পর ১৫ জূরাই মিলওয়াকি উইজকনসিনে রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশন শুরু হবে। সেখান থেকে ডেলিগেঁসদের ভোটে ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে রিপাবলিকান দলীয় মনোনয়ন দেয়ার কথা। ট্রাম্প কনভেনশনে সশরীরে উপস্থিত থেকে মনোনয়ন গ্রহণ করবেন, এটাই নির্ধারিত আছে। কিন্তু ট্রাম্পের শাস্তির মেয়াদ ঘোষণা করার পর ট্রাম্প কীভাবে কনভেনশনে উপস্থিত থাকবেন? ট্রাম্পের শাস্তি কি ধরনের হবে, তার চলাচল কতটুকু সীমিত করা হবে বা তিনি কি রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালিয়ে যেতে পারবেন? বিচারক মার্চান এখানে কি ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন তা তার ওপর নির্ভর করবে।
সাজা হলে ট্রাম্পকে কি কারাগারে যেতে হবে
আগামী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছেন নিউইয়র্কের ম্যানহাটান আদালতের জুরি বোর্ড। শিগগিরই বিচারক এই মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা করবেন। এখন একটি প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে, সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টকে কি কারাগারে পাঠাবেন আদালত? ১২ সদস্যের জুরি বোর্ড ফৌজদারি মামলায় ৩৪টি অভিযোগের সব কটিতেই সাবেক প্রেসিডেন্টকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। বিচারক মার্চেন আগামী ১১ জুলাই এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে আইনজীবী মাইকেল কোহেনের মাধ্যমে ১ লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
কিন্তু ব্যবসায়িক নথিপত্রে জালিয়াতির মাধ্যমে এই ঘুষের তথ্য গোপন করেন তিনি। এই অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়েছে। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে ব্যবসায়িক নথিপত্রে জালিয়াতির মামলায় কোনো ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে খুব কমই তাঁকে কারাগারে যেতে হয়। ছয় সপ্তাহ ধরে শুনানি শেষে ট্রাম্পও এমন এক অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। নিউইয়র্কের বিবাদীর আইনজীবী অ্যান্ড্রু ওয়েনস্টেইন বলেন, অতীতের নজির বিচারক মার্চেনকে ট্রাম্পের এই ফৌজদারি মামলায় সাজার রায় ঘোষণায় হয়তো সহায়তা করবে। আদতে এটা এমন কোনো মামলা নয় যে দেশের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিকে সাজা দিয়ে আদালত কারাগারে পাঠিয়ে দেবেন। এই অ্যান্ড্রু ২০০৯ সালে এমন একটি মামলার আইনজীবী ছিলেন, যে মামলায় ব্যবসায়িক নথিপত্রে জালিয়াতির অভিযোগে এক ব্যক্তির তিন বছরের কারাদণ্ড হয়েছিল। তবে শর্ত সাপেক্ষে ওই ব্যক্তিকে কারাভোগ থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
ওয়েনস্টিন বলেন, ‘কিন্তু ট্রাম্পের মামলা পুরোপুরি ভিন্ন। সুতরাং আমি মনে করি না, ঐতিহাসিকভাবে আপনি এই মামলার দিকে তাকাতে পারেন। কারণ, তিনি ছিলেন ভিন্ন আরেক মানুষ।’ ট্রাম্প ২০১৬ সালে স্টর্মিকে ঘুষ দিতে তাঁর নিউইয়র্কভিত্তিক আবাসন প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করেছিলেন। কিন্তু সেই ঘুষের অর্থ দেওয়ার বিষয়টি জালিয়াতির মাধ্যমে নথিপত্রে গোপন রেখেছিলেন। স্টর্মি অভিযোগ তুলেছেন, এক দশক আগে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক হয়েছিল। আইনজীবীরা বলছেন, এই ঘুষের অর্থের বিষয়টি গোপন রেখে ট্রাম্প আয়কর আইন লঙ্ঘন করেছেন। তাঁর সম্পর্কে মানুষের মধ্যে নেতিবাচক ধারণা জন্মাতে পারে, এমন আশঙ্কায় তিনি কাজটি করেছেন। মামলায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪টি অভিযোগই তিনি অস্বীকার করেছেন। তিনি স্টর্মির সঙ্গে যৌন সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি জুরি বোর্ডের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যে আপিল করবেন, সেটা অনেকটা নিশ্চিত।
ব্যবসায়িক নথিপত্র জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণিত হলে যে কারও সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। বিবাদীর আইনজীবী ও সাবেক কৌঁসুলিসহ ছয় আইনবিশেষজ্ঞ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলছেন, কোনো দোষী সাব্যস্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে অতীতে কোনো ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড না থাকলে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনা খুবই বিরল। আর নিউইয়র্ক রাজ্যে ট্রাম্পের অতীত কোনো ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড নেই। সুতরাং তাঁর ক্ষেত্রে আর্থিক দণ্ড হওয়ার আশঙ্কা বেশি। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সাজা অসম্ভব নয়। ট্রাম্প দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর কী ধরনের সাজা হবে, এখনই তা নিয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। এই মামলায় দণ্ডের ক্ষেত্রে বিচারক মার্চেন ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের ভূমিকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে পারেন।
আবার ট্রাম্প দোষ স্বীকার না করে মামলায় লড়াই চালিয়ে যাওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রেখেছেন, সেটিও তিনি বিবেচনায় রাখতে পারেন। জুরি বোর্ড ট্রাম্পকে দোষী সাব্যস্ত করার পর ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্যাগ অবশ্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আদালতে কারাদণ্ডে মতো রায়ের আবেদন করবেন কি না, সে বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। ব্র্যাগের কার্যালয় গত নভেম্বরে আদালতে জমা দেওয়া আবেদনে জানিয়েছিল, ব্যবসায়িক নথিপত্রে জালিয়াতির অভিযোগসহ তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪৩৭টি অভিযোগ এনেছিলেন। তবে রয়টার্স সব অভিযোগ যাচাই করে দেখতে পারেনি।
সেখানে ব্যবসায়িক অনেক অভিযোগ রয়েছে, যাতে কারাভোগের মতো সাজা দেওয়ার অভিযোগ তেমন নেই। তবে ম্যানহাটন ফোজদারি আদালতের কিছু রেকর্ড থেকে দেখা যাচ্ছে, গত এক বছর বা তারও কম সময়ের মধ্যে এই আদালতে অন্তত চার বিবাদীর কারাদণ্ড হয়েছে, ফলে তাঁদের কারাগারে যেতে হয়েছে। এই চারজনের মধ্যে তিনজনের বিরুদ্ধে আবার প্রতারণা ও বড় ধরনের জোচ্চুরির অভিযোগ ছিল। চতুর্থ বিবাদীর বিরুদ্ধে বাণিজ্যিক ঘুষের অভিযোগ ছিল। সেই ব্যবসায়িক জালিয়াতির অংশ হিসেবে তাঁকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। অবশ্য এই আসামি দুই দিন কারাভোগর পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন। ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির কার্যালয়ের সাবেক কৌঁসুলি টানিশা পালভিয়া বলেন, এ ধরনের বিশেষ অভিযোগে কারও খুব বড় ধরনের কারাদণ্ড হয়ে যাবে, এমনটা নয়। তবে ট্রাম্পের মামলার ক্ষেত্রে অনেক বিষয় বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। সুতরাং তাঁর যে কারাদণ্ড হবে না, এমনটা আমরা জোর দিয়ে বলতে পারি না। হ্যাঁ, বিষয়টি সবার জানা যে ট্রাম্পের কোনো ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড নেই।
দণ্ড একধরনের শিল্প
মার্চেন ট্রাম্পের কারাদণ্ডের সম্ভাবনার কথা আগেই স্বীকার করেছেন। গত ১৬ এপ্রিল জুরি নির্বাচনের সময় এই বিচারক বলেছিলেন, প্রত্যেকেই জানেন, ট্রাম্প এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর সম্ভাব্য কারাদণ্ড হতে পারে। ট্রাম্প সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট, আবার আগামী নির্বাচনে তিনি রিপাবলিকান দলের সম্ভাব্য প্রার্থী। এই নির্বাচনে তাঁর জয়ের সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে ট্রাম্পকে কারাগারে পাঠানোর মতো রায় এলে শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, অন্যান্য দেশও বিরাট সমস্যার মুখে পড়বে। ৬ মে ট্রাম্পকে সতর্ক করে বলা হয়েছিল, আদালতের জুরি বোর্ড ও সাক্ষীদের নিয়ে তিনি প্রকাশ্যে আর কোনো মন্তব্য করলে তাঁর জেল হতে পারে।
মার্চেন বলেন, এ ধরনের কথায় আদালতের কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কোনো ক্ষতি হয় কি না, সেটা নিয়ে তিনি চিন্তিত। মার্চেন বলেন, ‘কারাদণ্ড দেওয়া আমার কাছে শেষ আশ্রয়। আমি তাঁদের নিয়ে চিন্তিত এবং এ ধরনের মামলা চালাতে গিয়ে যা হচ্ছে, সেটিও আমাকে ভাবাচ্ছে।’ আদালতের জুরি ও কৌঁসুলিদের সমালোচনা করে বক্তব্য দিয়ে আদালতের আদেশ অমান্য করায় ১০ বার ট্রাম্পকে ১ হাজার ডলার করে জরিমানা করেছেন জুরি বোর্ড। এটা নিশ্চিত, ট্রাম্পকে কারাদণ্ড দেওয়া হলে সেটির প্রভাব হবে অনেক সুদূরপ্রসারী।
আরেকটি বিষয় মার্চেন ভাবতে পারেন—ট্রাম্প দোষ স্বীকার না করে মামলায় আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যেকোনো অপরাধীর মামলায় লড়ার অধিকার আছে। তবে কোনো অপরাধী দোষ স্বীকার করলে তখন বিচারক আসামির প্রতি কিছুটা নমনীয় থাকেন। নিউইয়র্ক ল স্কুলের অধ্যাপক ও ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি কার্যালয়ের সাবেক কৌসুলি রেবেকা রোইফে বলেন, ‘এখনই কোনো অনুমান করা কঠিন। তবে আমি অসম্ভব কিছু দেখছি না। দণ্ড কোনো বিজ্ঞান নয়, এটি একধরনের শিল্প।’
Posted ২:১৭ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh