বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
জ্যামাইকার আরাফা ইসলামিক সেন্টার ভবনের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির অন্যতম ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আরাফা ইসলামিক সেন্টার- এআইসি’র তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে ভবনটি। স্থানীয় ৮৮-৪৯ ১৭৯ স্ট্রিটে বিশাল জায়গাজুড়ে নির্মিত মসজিদটি বদলে দিয়েছে এলাকার অবয়ব। ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে ভবনটির নির্মাণ কাজ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর পবিত্র ঈদুল আজহার একদিন আগে আগামী ১৫ জুন শনিবার বিকেল ৬টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন আরাফা ইসলামিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠানটির শুভ উদ্বোধনীতে স্থানীয় মুসলিম কমিউনিটির সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে সেন্টারটির পরিচালনা পরিষদ। আরাফা ইসলামিক সেন্টার মসজিদ আল আরাফার উদ্বোধন উপলক্ষে স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে আনন্দের আমেজ বিরাজ করছে।
তিনতলা ভবনের মসজিদটির রয়েছে বেসমেন্ট। সেন্টারটির নির্মাণকাজে এ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৭ মিলিয়ন ডলারের অধিক। যার পুরোটাই সংগৃহীত হয়েছে সাধারণ মুসল্লিদের অনুদান থেকে। আরাফা ইসলামিক সেন্টার নিউইয়র্ক সিটির বৃহত্তর ও অত্যাধিুনিক একটি বহুমুখী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। এতে রয়েছে মসজিদ আল-আরাফা, ইসলামিক স্কুল ও কমিউনিটি সেন্টার।
জ্যামাইকার বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকায় ২০ হাজার ১৫৬বর্গফুটের মোট আয়তনের জমির উপর ৮ হাজার ৮ শত বর্গফুটের ৩ তলা ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ২৫টি মসজিদ নির্মাণকাজে অভিজ্ঞ এমন একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ করেছে। সেন্টারের নির্মাণশৈলী অত্যন্ত চমৎকার। যাতে রয়েছে ইসলামী ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মৃতি চিহ্ন ও আধুনিকতার ছাপ।
সম্প্রতি সাপ্তাহিক বাংলাদেশ প্রতিনিধি সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন এআইস’র নির্মাণ কাজ। মূল ভবনের প্রতি তলার আয়তন ৪ হাজার বর্গফুট। প্রথম তলায় পুরুষদের নামাজের স্থান। দ্বিতীয় তলায় ব্যবস্থা রয়েছে মহিলাদের নামাজ আদায়ের। তৃতীয় তলার পুরোটাই নির্মিত হয়েছে ইসলামিক স্কুলের জন্য। সেখানে রয়েছে ৬টি ক্লাসরুম, যেখান থাকবে সর্বাধুনিক সুযোগ সুবিধা। ৮ হাজার বর্গফুটের অধিক বিশালাকার বেসমেন্টের পুরোটাই ব্যবহৃত হবে কমিউনিটির বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে। সেখানে থাকবে পূণাঙ্গ কিচেনসহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা। আরাফা ইসলামিক সেন্টারের ছাদেও নামাজ আদায় করা যাবে। সিটি কর্তৃপক্ষ থেকে এজন্য অনুমতি নেয়া হয়েছে।
প্রশস্ত এলিভেটর, প্রতি তলায় পর্যাপ্ত বাথরুম, গেস্টরুম, শিশুদের বসার পৃথক রুমসহ নানা আধুনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। অত্যন্ত মজবুত ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত ভবনটি স্থানীয় মুসলিম কউিনিটিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে বলে জানান এআইসি’র সেক্রেটারী খন্দকার তারিকুল ইসলাম। মসজিদকে কেন্দ্র করে মুসলিম আবাসনসহ আর্থিক এবং সামাজিক সমৃদ্ধি ঘটবে। আশপাশ এলাকায় সৃষ্টি হবে মুসলিম বান্ধব একটি পরিবেশ। সেন্টারটির প্রতিষ্ঠায় যারা মুক্তহস্তে দান করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান খন্দকার তরিকুল ইসলাম।
সেন্টারটির চেয়ারম্যান ও অন্যতম দাতা বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমীর খান। মসজিদ কমপ্লেক্সে পরিকল্পনায় রয়েছে পুরুষ মহিলাদের পৃথক নামাজের স্থান, ইসলামিক স্কুল, লাইব্রেরি, সিনিয়র সিটিজেন সেন্টার, ফিউনারেলহোম, শিশুদের খেলার স্থান। অজু এবং বাথরুমের পযাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে মসজিদটিতে। উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মসজিদ আল-আরাফা। অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন মরহুম এসএম হায়দার আলী, আব্দুল ওয়াদুদ ও আলাউদ্দিন চৌধুরী।
২০০৭ সালের ৩০ নভেম্বর প্রথম জুমা অনুষ্ঠিত হয় এ মসজিদে। ২০০৮ সালে মসজিদে তারাবির নামাজ এবং ঈদ জামাত চালু হয়। ২০১০ সালে চালু হয় সামার স্কুল। ২০১৩ ও ২০১৪ সালে মসজিদের জমি ক্রয় সম্পন্ন হয়। ২০১৫ সালে উদ্যোগ নেয়া হয় নিজস্ব জমিতে একটি আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন মসজিদ নির্মাণের। আল্লাহর অশেষ রহমতে এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সেন্টারটির মূল ভবনে অনুষ্ঠিত হবে পবিত্র ঈদুল আজহার তিনটি জামাত।
Posted ১১:৪৩ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৩ জুন ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh