নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
বক্তব্য রাখছেন জেসিকা গঞ্জালেজ রোহাস। পাশে ড. আবু জাফর মাহমুদসহ অন্যান্যরা।
শিক্ষা-স্বাস্থ্য আবাসন কিংবা কর্মসংস্থান, সবক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র বসবাসরত বাংলাদেশী, সাউথ এশিয়ান তথা সকল কমিউনিটির অধিকার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস পিপল আপ আপ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ। তার মতে, আমেরিকান সরকার দেশে, প্রবেশাধিকার সহজীকরণ করলেও বিপুল জনগোষ্ঠীর মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে পারেনি। গত ১৪ জুন শুক্রবার বিকেলে নিউইয়র্কে বসবাসরত দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটিতে তাদের ভোটাধিকার বিষয়ে সচেতন করতে জ্যাকসন হাইটস ডাইভার্সিটি প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয় ডেমোক্রেট ইলেকশন সমাবেশ।
পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস পিপল আপ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের আহ্বানে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ রোহাস, অ্যাসেম্বলি মেম্বার স্টিভেন রাগা, কাউন্সিল মেম্বার শেখর ক্ষ্ণৃানসহ বেশ কয়েকজন ডেমোক্রেট প্রার্থী। এ আয়োজনে স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের সমর্থনে ডেমোক্রেট সমর্থকরা উপস্থিত হন। উপস্থিত ছিলেন নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটির সকল সাংবাদিক, সম্পাদক ও গণমাধ্যম কর্মীরা।
প্রবাসী বাংলাদেশীসহ দক্ষিণ এশীয় কমিউনিটিকে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান ড. স্যার আবু জাফর মাহমুদ। সমাবেশে, আমেরিকার স্বার্থ সুরক্ষার সর্বোচ্চ অবদানের ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনে ডেমোক্রাটদের পক্ষে গণজাগরণের কথা তুলে ধরেন তিনি। তুলে ধরেন পিপল আপের অভিযানের নানা দিকও। বলেন, আমেরিকায় যত মানুষ বসবাস করেন তারা নিবন্ধিত হোক বা নিবন্ধন বহির্ভূত হোক, সবার স্বাস্থ্য রক্ষা করতে হবে।
তাদের সবাইকে হেলথ কেয়ার সার্ভিস দিতে হবে। তিনি বলেন, যাদের আমেরিকায় প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়েছে, তাদের বাঁচার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আবু জাফর বলেন, আমেরিকায় যারা বসবাস করেন তারা প্রত্যেকে পরিশ্রম করে এ দেশ নির্মাণ করেন । যারা আন-ডকুমেন্টেড, যাদের টাকা পয়সা নাই তাদের কম টাকা পারিশ্রমিক দেয়, এই সুযোগ সুবিধা নিয়ে আমেরিকা গড়ার সুযোগ হাতিয়ে নিচ্ছে । এদের বৈধতা দিতে হবে, এদের নাগরিক হওয়ার সুযোগ দিতে হবে । তাদের কাগজপত্র দিতে হবে স্থায়ী বসবাসের জন্য।
স্যার আবু জাফর মাহমুদ বলেন, আমাদের ছাত্র-ছাত্রী-শিক্ষার্থী যারা তারা গবেষণা করবে, ওদেরকে স্বাধীনতা দিতে হবে, স্বাধীন মতামতের সুযোগ দিতে হবে। তাদের গ্রেফতার করা চলবে না। তাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা চলবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমেরিকায় যেসব শিক্ষার্থী আসে তারা সবাই মেধার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে আসে। তাদেরকে এদেশে পড়াশোনা শেষ করে এদেশ থেকে পাঠিয়ে না দিয়ে এদেশে থাকার ব্যবস্থাটি নিশ্চিত করতে হবে। নাগরিকত্ব দিতে হবে। তাহলে তাদের মাধ্যমে আমেরিকাও লাভবান হবে। ড. আবু জাফর জানান, এ দেশে মানুষ আছে, মানুষ আসে, বিভিন্ন জাতি থেকে এসেছে ।
তারা যাতে সহজভাবে যাবে জীবন চালাতে পারে সেভাবে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এরই মধ্যে সরকার বাড়ির দাম বাড়িয়েছে, বাড়ি ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ছাত্র- ছাত্রীদের মধ্যে এবং প্রতিটি রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীদের মধ্যে দেশপ্রেম বাড়াতে হবে। প্রতিটি জনগণের দেশপ্রেম বাড়াতে হবে, দায়িত্ববোধ বাড়াতে হবে। আমরা আমাদের সন্তানদের প্রথম শ্রেনীর দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এখানে অবাধে ক্ষতিকর মাদক বিক্রি হচ্ছে। নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করার জন্য সুযোগ দেয়া হচ্ছে সুতরাং এ মাদক আর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েদের চাকরি দিতে হবে। এদের ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার থাকতে হবে। ছোট খাট ব্যবসা যারা করছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা যারা তাদের রাষ্ট্র থেকে তহবিল দিতে হবে। বলেন, আমরা সবাই ডেমোক্র্যাট, আমাদের ডেমোক্রেটদের সমর্থন করতে হবে।
স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদ বলেন, এই সমাবেশে বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে , ডেমোক্রাটদের প্রতি সমর্থন ও ভালবাসা। এখন আমাদের প্রমাণ করতে হবে, আমি যে মানবিক অধিকারের কথা জানিয়েছি এটার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ব্যালট বক্সে ভোট দিয়ে সঠিক প্রার্থী নিবার্চনের মাধ্যমে । এমন কাউকে ভোট দেওয়া যাবে না সে প্রেসিডেন্ট হোক আর যাই হোক । যে ক্ষমতায় আসলে এই আন্দোলনকারী ছাত্রদের এ দেশ থেকে বের করে দেবে বলেছে। তাকে ভোট দেয়া যাবে না, যে ক্ষমতায় আসলে মানুষের সোশ্যাল সিকিউরিটি বাতিল করে দেবে বলেছে । তাকে ভোট দেয়া যাবে না যে ক্ষমতায় আসলে সবগুলো মুসলীম দেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সর্ম্পক বাতিল করে দেবে বলেছে। বাইডেনসহ সকল ডেমোক্রেট যারা আপনার আমার প্রতিনিধিত্ব করছে তাদের ভোট দেয়া উচিত বলে ও জানান তিনি।
নিউইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলি মেম্বার জেসিকা গঞ্জালেজ রোহাস বলেন , এই মুহূর্তে বাংলাদেশি ভাই-বোনদের জন্য, যুক্তরাষ্ট্রে বিশেষত নিউইয়র্কে বসবাসকারী দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর ভাই-বোনদের আমি সম্মানিত বোধ করছি। আমি এর আগেও জ্যাকসন হাইটেসর এই ডাইভারসিটি প্লাজায় এসেছি আমাদের বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে, আশা নিয়ে । এটি সত্যি সৌভাগ্যের বিষয় যে, ড. আবু জাফর মাহমুদের সমর্থন ছাড়া এখানে এতো জমায়েত সম্ভব হতো না। নিউইয়র্ক অ্যাসেম্বলি মেম্বার স্টিভেন রাগা বলেন, কুইন্স অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, উডসাইড, এলমহার্স্টে বসবাসরত মানুষদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ, আমি সৌভাগ্যবান যে প্রাইমারি ইলেকশনের এই দৌড়ে আমি নেই। কিন্তু আমরা জানি, সামনের দিনগুলো অমসৃন আমাদের কষ্ট করতে হবে আরো ।
আমরা আজ এখানে ডেমোক্রেটদের জয়ী করার প্রত্যয়ে একসাথে হয়েছি তারপরও বলবো সঠিক মানুষকে নিবার্চনে জয়ী করার জন্যও আমরা একত্রিত হয়েছি। নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল মেম্বার শেখর ক্ষ্ণৃান পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের এই যাত্রায় নিউইয়র্ক সিটির সকল অফিসগুলোতে আরো সমর্থন অব্যাহত রাখতে হবে।
১৫ জুন ডেমোক্রেট প্রাইমারি ইলেকশনের অগ্রিম ভোট শুরু হয়েছে। চলবে ২৩ জুন পর্যন্ত। চূড়ান্ত ভোট ২৫ জুন। অনুষ্ঠানে কুইন্স কাউন্টি মেম্বার হিসেবে ব্যালটভূক্ত স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদসহ সকল প্রার্থীদের পক্ষে ভোট দেয়ার জন্য ডমোক্রেটদের প্রতি আহ্বান জানান উপস্থিত নির্বাচিত ডেমোক্রেট কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে কংগ্রেস মেম্বার আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ এর উপস্থিত থাকার কথা ছিল। জরুরি দাপ্তরিক ব্যস্ততায় তিনি আসতে না পারলেও ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তার নির্বাচনী প্রচারণা দলের কর্মকর্তা ও সদস্যরা। অনুষ্ঠান স্থলে ছিল নির্বাচনী স্টল। সেখানে তারা আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজ (এওসি)’র পক্ষে নির্বাচনী প্রচারপত্র ও অন্যান্য উপহার সামগ্রি বিতরণ করেন। পরে তারা সমাবেশের আয়োজক পিপল ইউনাইটেড ফর প্রোগ্রেস এর প্রেসিডেন্ট স্যার ড. আবু জাফর মাহমুদের সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন।
Posted ১২:১৬ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২০ জুন ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh