বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২০
করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা গত ২৬ অক্টোবর ৪ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে এবং মৃতের ১১ লাখ ৫৪ হাজার অতিক্রম করেছে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির হিসাব অনুসারে যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভ্রাাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা সর্বাধিক। এযাবত যুক্তরাষ্ট্রে ৮৭ লাখ ২ হাজার ৬০০ লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং এর মধ্যে মারা গেছে ২ লাখ ২৭ হাজার জন। নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের হাসপাতলগুলোতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ৪১ হাজার ৭৫৩ জন রোগী ভর্তি রয়েছে, যার মধ্যে ৮,৪৮৮ জন রয়েছে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে। আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে ব্রাজিলের অবস্থান তৃতীয় হলেও মৃতের দিক থেকে দ্বিতীয়। এযাবত ব্রাজিলে কনোরাভাইরাস আক্রান্ত ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৩৪ জন রোগী মারা গেছে এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৫৪ লাখ। ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিতীয় বৃহত্তম, যেখানে ৭৯ লাখ লোক আক্রান্ত এবং এবং এযাবত মারা গেছে ১ লাখ ১৯ হাজার ১৪ জন। মেক্সিকোতে গত ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ৯১ হাজার ১৬০ জন এবং এর মধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ৮৮ হাজার ৯২৪ জনের। ইউরোপে সর্বাধিক সংখ্যক মৃত্যু ঘটেছে যুক্তরাজ্যে, যেখানে মারা গেছে ৪৪ হাজার ৯৮৬ জন এবং আক্রান্ত হয়েছে ৮ লাখ ৭৬ হাজার ৮৪০ জন রোগী।
করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় দফা সংক্রমণের ফলে বিশ্বের অনেক দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী যার দৈনিক গড় হার ২ লাখের অধিক। তবে অনেক দেশে ভাইরাসের সংক্রমণ স্থিতাবস্থায় রয়েছে বলে নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে। গত মার্চ মাসের শেষ দিকে নিউইয়র্ক সিটিতে করোনাভাইরাসের বিস্তার বিস্ফোরণের মতো দাঁড়িয়েছিল এবং মৃতের সংখ্যাও ছিল অধিক এপ্রিল মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা কমে আসে। কিন্তু এখন তা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে তা বেশি বাড়ছে। গত ২৬ অক্টোবর সোমবার আক্রান্ত হয়েছে ৭৪ হাজার ৩০০ জন, যা পূর্ববর্তী এক সপ্তাহের দৈনিক গড় ৭১ হাজারের অধিক। ২০টির বেশি স্টেটে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা রেকর্ড পর্যায়ে পৌছার কারণে এর আগে বার ও রেষ্টুরেন্টগুলোতে লোক সংখ্যা যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয়েছিল তার উপর পুনরায় নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ ক’টি স্থানে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে এবং রোগীর চাপ সামলাতে ফিল্ড হাসপাতাল চালু করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা উপলব্ধি করতে পারছেন যে কিভাবে কোভিড ১৯ আবারও বিস্তৃত হতে শুরু করেছে। তারা চারটি কারণের কথা বলেছেন; কেউ করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর কত কাছে গেছেন বা যাবেন; রোগীর কাছে কতটা সময় কাটিয়েছেন; রোগী আপনার কাছে কফ, থুথু ফেলেছে কিনা; এবং রোগীর কাছ থেকে আসার পর কিভাবে বা কতবার নিজের মুখ স্পশ করেছেন। কোভিড ১৯ এর সংক্রমণের ঝুুঁকি এড়ানোর উপায়ও বাতলে দিয়েছেন তারা। বাড়ির বাইরে অন্যদের থেকে অন্তত ছয় ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, বাড়ির বাইরে সবসময় মাস্ক ব্যবহার করা-যত বেশি সংখ্যক লোক মাস্ক ব্যবহার করবে তত বেশি নিরাপদ থাকা যাবে। বাড়ির বাইরে কোনকিছুর স্পর্শ লাগলে সাবান দিয়ে অন্তত বিশ সেকেণ্ড হাত ধৌত করা ও পরিচ্ছন্ন টাওয়েল দিয়ে মোছা; মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকা, কারণ আমরা নাক, মুখ ও চোখ স্পর্শ করলে ভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে। অতএব হাত না ধুয়ে চোখ মুখ স্পর্শ করা অনুচিত।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়েছে এবং নভেম্বরের প্রথম দিক থেকে সংকটজনক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞরা। আট মাস আগে যখন যুক্তরাষ্ট্রে করোনা হানা দিয়েছিল, তখন কেউ হয়ত ভাবতেই পারেনি কোভিড-১৯ এতটা ভয়ঙ্করভাবে দেশটিকে আক্রান্ত করবে। এত উচ্চমানের ল্যাবরেটরি, গবেষক এবং ওষুধ মজুদ থাকার পরও মৃতের সংখ্যা গত ২৭ অক্টোবর ২ লাখ ২৭ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য গবেষক জেনিফার নুজো বলেন, ‘আমরা এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির কথা কখনো ভাবতেও পারিনি।’ জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। আর আক্রান্তের সংখ্যা ৮৭ লাখ অতিক্রম করেছে । দেশটিতে করোনায় মৃতের সংখ্যা জনবহুল রাজ্য উটাহর রাজধানী সল্টলেক সিটির জনসংখ্যার চেয়ে বেশি। ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে, দিন দিন এই সংখ্যা বেড়েই চলছে।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ কোটি ৩০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। আর মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১ লাখ ৫৪ হাজারের বেশি। । আভাস দেয়া হয়েছে যে, আগামী ১ জানুয়ারীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভালো অবস্থা বিরাজ করলে করোনায় মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৮৮ হাজারে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে। কিন্তু অবস্থা যদি শোচনীয় পর্যায়ে যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে ৬ লাখ ২০ হাজারে উন্নীত হতে পারে। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশ ভারতে এখন প্রতিদিন গড়ে সনাক্ত করা হচ্ছে ৯০ হাজার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে । শীতল আবহাওয়া এগিয়ে আসার সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন দেশের স্বাস্থ্য ও জনস্বাস্থ্য বিষয়ক নীতি নির্ধারকরা তাদের হতাশা ব্যক্ত করছেন যে, কী ঘটবে তা কেউ জানে না। যুক্তরাজ্যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টারা দেশবাসীকে সতর্ক করেছেন। প্রস্তুতি নিতে বলেছেন আগামী ছয় মাসের জন্য ভাইরাস মোকাবিলার ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণ ও মৃত্যুর দ্বিতীয় পর্যায়ের আশঙ্কা বহুদিন থেকেই করা হচ্ছে। এখন তারা অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলছেন যে, এটি সম্ভবত আরো বিপর্যয়কর হবে। বিশেষজ্ঞরা আশংঙ্কা করছেন যে ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে থেকে দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণের ব্যাপকতা বৃদ্ধি পেতে থাকবে। ভয়াবহ রূপ নেবে কয়েক সপ্তাহ পর। যখন শীত জাঁকিয়ে বসবে। শ্বাস-প্রশ্বাস সংক্রান্ত অন্যান্য ভাইরাসের প্যাটার্নের কারণে কোভিড ১৯ এর শীতকালীন প্রকোপের শোচনীয় অবস্থার কথা বলা হচ্ছে। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্কুল অফ মেডিসিনের একজন এপিডেমিওলজিষ্ট এলি ক্লেইন বলেছেন, ‘আমার মনে হয় করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় তরঙ্গ আসছে। শীতের সাথে আসছে এটা বড় ব্যাপার নয়, বরং কতোটা ভয়াবহভাবে আঘাত হানতে পারে সেটি উদ্বেগের বিষয়।’ গবেষকরা এমন এক সময়ে তাদের সতর্কতা ব্যক্ত করছেন যখন মিডওয়েষ্টে সংক্রমণ হার বৃদ্ধির ঘটনা সত্বেও গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই জাতীয়ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, যুক্তরাষ্ট্রে শ্বাসপ্রশ্বাস সংশ্লিষ্ট ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রবণতা সাধারণভাবে লক্ষ্য করা যায় স্কুলগুলোতে ক্লাস শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর। স্কুলগুলো মার্চ মাস থেকে বন্ধ এবং সামারের ছুটির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য স্কুল খুলে দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। উষ্ণ ও আদ্র আবহাওয়ার চেয়ে শীতল ও স্বল্প আদ্র আবহাওয়ায় ভাইরাস সহজে ছড়ায় এবং দীর্ঘ সময় যাবত এই সংক্রমণের আশ্কংা রয়ে যায়। তাছাড়া শীতের মধ্যে মানুষ সর্বত্র ঘরের মধ্যে গাদাগাদি হয়ে অবস্থান করে। করোনা ভাইরাসের বিকাশ (ইনকিউবেশন) পর্যায় তুলনামূলকভাবে দীর্ঘ হওয়ার কারণে গুরুতর অসুস্থতার মধ্যে থাকা মানুষের মধ্যে কারো ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ ছাড়াই বেশ কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সুপ্ত থাকতে পারে। ফলে কোন পর্যায়ে মৃত্যু হার খুব্ বেড়ে গেলে আসলে তা ঘটে সংক্রমিত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর। ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের ইন্সটিটিউট অফ হেলথ মেট্রিকস এন্ড ইভ্যালুয়েশন গত শুক্রবার একটি সম্ভাব্য মডেল প্রকাশ করার মধ্য দিয়ে আভাস দিয়েছে যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে ৩ নভেম্বর নির্বাচনের দিন ১,৯০৭ জনের মৃত্যু হতে পারে, যা বর্তমান দৈনিক মৃত্যুহারের প্রায় দ্বিগুণ। তাদের দেয়া আভাস অনুযায়ী ডিসেম্বরের প্রথম দিক পর্যন্ত মৃত্যুহার বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা থাকবে। যখন দৈনিক মৃত্যুহার ২,৮০০ এর বেশি হতে পারে। বছরের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে সর্বমোট মৃতের সংখ্যা ৪ লাখ ১০ হাজারে উন্নীত হতে পারে বলে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। যা বর্তমান পর্যায় পর্যন্ত মৃতের সংখ্যার চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া সেই পূর্বাভাসে এটিও দেখানো হয়েছে যে, আগামী ১ জানুয়ারীর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ভালো অবস্থা বিরাজ করতে করোনা ভাইরাসজনিত মৃতের সংখ্যা ২ লাখ ৮৮ হাজার থেকে যদি অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে যায়, তাহলে সেক্ষেত্রে ৬ লাখ ২০ হাজারে উন্নীত হতে পারে।তবে তা নির্ভর করে কারা মাস্ক ব্যবহার করছে, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ অন্যান্য সতর্কতা অনুসরণ করছে।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, আরভিন এর এপিডেমিওলজিষ্ট এন্ড্রু নয়মার বলেছেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, যেসব স্থানে ইতোমধ্যে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে, সেসব স্থানসহ আরো ব্যাপক এলাকায় দ্বিতীয় পর্যায়ের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। ২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে যুক্তরাষ্ট্রে হালকা মাত্রার ইনফ্লুয়েঞ্জা মহামারী ছড়িয়ে পড়ার ওপর এন্ড্রু নয়মার গবেষণা করেছেন। তিনি বলেন, “আমার ধারণা করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় প্রবাহ অক্টোবরের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়ে শীত বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়তে থাকবে এবং নির্বাচনের পর এর বিস্তৃতি এবং মৃত্যু হার নিশ্চিতভাবেই বৃদ্ধি পাবে। কোন কোন স্থানে বৃদ্ধি পাবে থ্যাঙ্কস গিভিংয়ের সময় । কোথাও বা ক্রিসমাসের দিকে এবং কোন কোন স্থানে এ প্রকোপ বাড়বে আগামী জানুয়ারী ও ফেব্রুয়ারী মাস পর্যন্ত।”
চিলড্রেনস হসপিটাল অফ ফিলাডেলফিয়ার পলিসি ল্যাব এর ডাইরেক্টর ডেভিড রুবিন বলেছেন, সবচেয়ে সংকটকাল হচ্ছে নির্বাচনের অভিযান ও ভোট প্রদানের পর। কারণ নির্বাচনে অসংখ্য মানুষের মেলামেশা ও কাছাকাছি আসার ঘটনা ঘটবে এবং কিছু লোক তো অবশ্যই অসুস্থ হবে, তা ব্যাপকও হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগেগুলো দেশব্যাপী কোভিড ১৯ টেস্ট করে করোনা দৈনিক প্রায় ৪০ হাজার পজেটিভ কেস পাচ্ছে, যা গত মে মাসে যখন প্রথম টেষ্ট করার সুবিধা বাড়ানো হয় তখন টেস্ট পজেটিভ সংখ্যার দ্বিগুণের বেশি। তবে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এপিডেমিওলজিষ্ট জেফ্রি শামানের মতে, সংক্রমণ বিস্তার রোধের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হলে সংক্রমণ হার দৈনিক ৫০০ তে সীমিত রাখা সম্ভব হতে পারে।
চিকিৎসকরা বলছেন, করোনা সংক্রমণের বর্তমান পরিস্থিতিতে আত্মতুষ্টিতে ভোগার সুযোগ নেই। যে কোনো সময় সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। শীতকালে ঝুঁকি বাড়ার আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ। মানুষের মধ্যে সর্বজনীন মাস্ক ব্যবহার, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাত ধোয়ার অভ্যাস বাড়ানো এবং পরীক্ষা ও আইসোলেশনের মতো স্বাস্থ্যবিধির কঠোর প্রয়োগের ওপর এ রোগের বিস্তারে অনেকটা নির্ভর করবে।
আশঙ্কা করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে উত্তরাঞ্চলে তথা নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, পেনসিলভেনিয়া, ভার্জিনিয়া, ওয়াশিংটন ডিসি, ম্যারিল্যান্ড, কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস, রোড আইল্যান্ড, নিউ হ্যাম্পশয়ার, মেইন ও ভারমন্ট এলাকায় শীতকালের আবহাওয়ায় সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে। তাদের আশঙ্কা, আর্দ্রতা, সূর্যের তাপ, ভিটামিন ডিয়ের অভাব এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ শীতকালে অন্যান্য ভাইরাস ও ফ্লু জাতীয় শ্বাসকষ্টের রোগের লক্ষণ দেখা দেয় বলে এ সময় মানুষ করোনা ভাইরাস নিয়ে আরো বেশি সংবেদনশীল হয়ে ওঠতে পারে। এদিকে শুরুর দিকে করোনা ভাইরাস নিয়ে মানুষের মধ্যে যে ভয়ভীতি ছিল, এখন তা আর নেই বলেই বিশেষজ্ঞরা মনে করেছেন। মানুষ অনেকটা বেপরোয়াভাবে চলাফেরা করছেন। মানুষের এই ঝুঁকিপূর্ণ আচরণ সংক্রমণ বাড়িয়ে দেওয়ার আশঙ্কা তৈরি করছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, সামনে শীতকাল। শীতে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে বলা যাচ্ছে না। শীতকে সামনে রেখে কর্মপরিকল্পনা জরুরি। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহার করতেই হবে। নইলে সামনে বিপদ চলে আসতে পারে। চিকিৎসকরা উল্লেখ করেন, করোনা সংক্রমণ এখন কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখন কম-বেশি বলা মুশকিল। এক মাস পরিস্থিতি দেখে বলা যাবে, কোন দিকে যাচ্ছে।
Posted ৯:৪৬ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh