বাংলাদেশ ডেস্ক : | বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
অ্যাডামস ও জোরান মামদানি। ছবি : ফক্স নিউজ
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র মেয়র এরিক অ্যাডামসের সঙ্গে দেখা করেছেন নবনির্বাচিত মেয়ল জোহরান মামদানি। এরমধ্য দিয়ে সিটি নির্বাচনে জয়ের পর প্রথমবার নগরপিতা অ্যাডামসের মুখোমুখি হলেন তার মেয়র। ২ ডিসেম্বর মঙ্গলবার গ্রেসি ম্যানশনে অনুষ্ঠিত প্রায় এক ঘণ্টার বৈঠকটি ‘সৌহার্দ্যপূর্ণ’ পরিবেশেই হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামদানি। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “আলোচনাটা ভালো হয়েছে। শহরের মানুষের সেবা নিশ্চিত করতে কীভাবে একটি মসৃণ ক্ষমতা হস্তান্তর সম্ভব-সেটিই মূলত আলোচনায় ছিল।”
যদিও অ্যাডামস প্রশাসনের নানা বিষয়ে তিনি আগে থেকেই সমালোচনামুখর ছিলেন, মামদানি বৈঠকের পর স্বীকার করেছেন যে কিছু উদ্যোগ প্রশংসার দাবি রাখে। এর মধ্যে রয়েছে শহরজুড়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কনটেইনার ব্যবহার বাড়ানো এবং আবাসন উন্নয়নে ‘সিটি অব ইয়েস’ পরিকল্পনা। অ্যাডামসের মুখপাত্র ফাবিয়েন লেভি বলেন, “মেয়র অ্যাডামস নিশ্চিত করতে চান, নতুন মেয়র যেন প্রথম দিন থেকেই কাজ শুরু করতে পারেন। তাই আমাদের দল সব ধরনের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত।”
তিনি জানান, শহরের বিভিন্ন সংস্থার বর্তমান অবস্থা ও চলমান কার্যক্রম নিয়ে একটি বিস্তারিত নথিও মামদানির হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডামসের প্রথম উপমেয়র র্যান্ডি মাস্ত্রো ও চিফ অব স্টাফ কামিল জোসেফ-ভারলাক। মামদানির পক্ষ থেকে ছিলেন তার সম্ভাব্য প্রথম উপমেয়র ডিন ফুলাইহান এবং চিফ অব স্টাফ এল বিসগার্ড-চার্চ।এদিকে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নে মামদানি জানান, গ্রেসি ম্যানশনে তিনি থাকবেন কি নাÑসেটি এখনো ঠিক করেননি।
মুখে মুখে বার্লিনের মামদানি : নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জিতে রীতিমতো আইকন বনে গেছেন জোহরান মামদানি! নেতৃত্বে এখন সবাই যেন তার মতো হতে চায়। এমনই একজন আলিপ আরালপ। জার্মানির ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট পার্টি ডি লিঙ্কের সদস্য তিনি। আগামী বছর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বার্লিন শহরের মেয়র প্রার্থী। নির্বাচনে তার অনুপ্রেরণা নবনির্বাচিত মেয়র মামদানি।
প্রচারণায় তার প্রচার কৌশল কাজে লাগিয়ে এখন জনগণের মুখে মুখে বার্লিনের ‘মামদানি’ আলিপের নাম। সম্প্রতি ইসরাইলি দৈনিক হারেজৎ-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই তথ্য। আলিফ তুর্কি বংশোদ্ভূত। জোহরান মামদানির মতো আলিপ আরালপও বার্লিনবাসীর নিত্যদিনের সমস্যাগুলো সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। নগরীর আবাসন সংকট, চলাফেরায় বাড়তি খরচ, এমনকি, ইসরাইল-গাজা যুদ্ধও তার নির্বাচনি প্রচারণায় প্রাধান্য পাচ্ছে। আলিপ আরালপের বক্তব্য পরিষ্কার। নিউইয়র্কের মতো বিশ্বসেরা শহর যদি সমাজবাদী মেয়র নিতে পারে তাহলে বার্লিনও পারবে।
গত ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র পদে জোহরান মামদানির বিজয়ের পর শুভেচ্ছা বার্তায় এই জার্মান রাজনীতিক তার ইনস্টাগ্রামে লিখেন, ‘নিউইয়র্ক থেকে বার্লিন : জেগে উঠছে বামধারা।’ ভিডিও বার্তায় আলিপ আরালপ বলেন, ‘আপনার বিজয় আগামী বছর বার্লিনের মেয়র প্রচারণায় প্রেরণা হয়ে থাকবে।’
উল্লেখ্য, ২০২৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর বার্লিনে মেয়র নির্বাচনের কথা রয়েছে। এর আগে গত বছরও মনে হয়েছিল জার্মানিতে বামধারা বিলীন হয়ে গেছে। কিন্তু আলিপ আরালপের আকস্মিক আবির্ভাব রক্ষণশীল দলের মেয়র কাই ভাগনারকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যায়, জনপ্রিয়তার নিরিখে আলিপ আরালপ দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন। প্রথম অবস্থানে আছেন কাই ভাগনার। তিনি এগিয়ে আছেন মাত্র তিন পারসেনটেজ পয়েন্ট বেশি জনপ্রিয়তা নিয়ে। ঠিক এক বছর আগেও বার্লিনে এমন চিত্র কল্পনা করা যায়নি।
গত বছর নভেম্বরে জার্মানির ক্ষমতাসীন জোট যখন ভেঙে যায়, তখন দেখা গেল বার্লিনের আইনসভা থেকে বামেরা বিলুপ্ত হওয়ার পথে। গত জানুয়ারিতে চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মার্জ উগ্র-ডানপন্থি অল্টারনেটিভ ফর ডয়েচল্যান্ডের (এএফডি) সমর্থন নিয়ে কেন্দ্রীয় আইনসভায় অভিবাসনবিরোধী আইন পাশ করে। তার এমন উদ্যোগ জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। এতে বাড়তি রাজনৈতিক সুবিধা পায় বামপন্থিরা। শুধু তাই নয়, গত ফেব্রুয়ারির ফেডারেল নির্বাচনে ডি লিঙ্কের পক্ষে ভোট পড়ে নয় শতাংশ। সারা দেশে দলটির নতুন সদস্য হয়েছে বেশ কয়েক হাজার। এখন বামেরা বার্লিন জয়ের স্বপ্ন দেখছে। যেমনটি দেখেছিলেন জোহরান মামদানি।
Posted ১:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh