রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ | ৬ পৌষ ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

কী বার্তা দিচ্ছে ট্রাম্পের নতুন নীতি এশিয়ার জন্য

বাংলাদেশ অনলাইন :   |   মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

কী বার্তা দিচ্ছে ট্রাম্পের নতুন নীতি এশিয়ার জন্য

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সম্প্রতি প্রকাশ করা জাতীয় নিরাপত্তা কৌশল (এনএসএস) বিশ্বব্যাপী আলোড়ন তুলেছে। ইউরোপের ক্ষেত্রে এটি ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিলেও এশিয়ার জন্য নীতিগতভাবে আগের ধারারই ধারাবাহিকতা দেখা যাচ্ছে—তবে দৃষ্টিভঙ্গিতে এসেছে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন।

চলতি মাসের শুরুতে ট্রাম্প প্রশাসন ৩৩ পৃষ্ঠার নতুন এনএসএস প্রকাশ করেছে। এটি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাহী শাখার প্রস্তুত করা একটি নথি, যা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং প্রশাসন কীভাবে সেগুলো মোকাবিলা করবে, তার তালিকা। এতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিকে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ বা ‘আমেরিকা সবার আগে’ ধারণাকে কেন্দ্র করে নতুনভাবে সাজানো হয়েছে। নতুন কৌশলপত্রে ‘ফ্রি অ্যান্ড ওপেন ইন্দো-প্যাসিফিক’ এবং চীন মোকাবিলায় মিত্রদের সঙ্গে কাজ করার কথা থাকলেও এবার গণতন্ত্র ও মূল্যবোধের প্রসঙ্গ অনেকটাই কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বরং ব্যবসা, বাণিজ্য, সামরিক শক্তি এবং অর্থনৈতিক আধিপত্যকে কেন্দ্র করেই এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অর্থনীতি মুখ্য: নথিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মূল বিষয় হলো অর্থনৈতিক প্রাধান্য, বাণিজ্যপথের নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবসায়িক চুক্তি নিশ্চিত করা। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও নেতৃত্বই ইন্দো-প্যাসিফিকে চীনকে ঠেকানোর সবচেয়ে কার্যকর উপায়।

নতুন কৌশলে বলা হয়েছে, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ক পুনর্গঠন করা হবে, যেখানে পারস্পরিকতা ও ন্যায্যতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। লক্ষ্য হলো দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।

গণতন্ত্রের প্রচার আর অগ্রাধিকার নয়: ২০১৭ সালের কৌশলপত্রে যেখানে চীন ও রাশিয়াকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যবোধবিরোধী শক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল, নতুন নথিতে সে ভাষা অনুপস্থিত। বরং এতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলোর ওপর গণতন্ত্র চাপিয়ে দেবে না এবং সার্বভৌমত্বকে গুরুত্ব দেবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে একটি বড় পরিবর্তন। ওয়াশিংটনের সিএসআইএসের বিশ্লেষক এমিলি হার্ডিং মন্তব্য করেছেন, গণতন্ত্রের এজেন্ডা কার্যত শেষ হয়ে গেছে।

তাইওয়ান: কৌশলগত কিন্তু অর্থনৈতিক গুরুত্ব বেশি: নথিতে তাইওয়ান প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এটিকে মূলত সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের কেন্দ্র এবং গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে অবস্থিত একটি কৌশলগত এলাকা হিসেবে দেখা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা তাইওয়ান প্রণালিতে কোনো একতরফা পরিবর্তন সমর্থন করে না এবং সংঘাত প্রতিরোধে সামরিক সক্ষমতা বজায় রাখবে। যদিও ‘বিরোধিতা’ শব্দের বদলে ‘সমর্থন করে না’ শব্দ ব্যবহার করায় কিছু বিশ্লেষক এটিকে ভাষাগত শিথিলতা হিসেবে দেখছেন। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এই কৌশলকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, এটি ইন্দো-প্যাসিফিকে যৌথ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।

মিত্রদের প্রতি চাপ—খরচ বাড়াও, দায়িত্ব নাও: নতুন কৌশলপত্রে এশিয়ার মিত্রদের প্রতি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—নিজেদের প্রতিরক্ষায় আরও বেশি খরচ করতে হবে। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর কথা বলা হলেও উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির প্রসঙ্গ তেমনভাবে উল্লেখ করা হয়নি। ফিলিপাইন যদিও যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের সামরিক মিত্র, নথিতে তা প্রায় অনুপস্থিত। ভারতকেও মূলত অর্থনৈতিক সহযোগিতার দৃষ্টিকোণ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, যাতে দেশটি ইন্দো-প্যাসিফিক নিরাপত্তায় আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখে।

চীনকেন্দ্রিক কৌশল নিয়ে সমালোচনা: কিছু বিশ্লেষক এই কৌশলকে অতিমাত্রায় ‘চীনকেন্দ্রিক’ বলে সমালোচনা করেছেন। তাদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ার দেশগুলোকে মূলত চীন মোকাবিলার হাতিয়ার হিসেবে দেখছে, আলাদা অংশীদার হিসেবে নয়।

পশ্চিম গোলার্ধে নজর, চীনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ: নথির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো যুক্তরাষ্ট্রের মনোযোগ এখন বেশি পশ্চিম গোলার্ধে। সেখানে চীনের প্রভাব কমাতে লাতিন আমেরিকায় নতুন জোট ও অংশীদারত্ব গড়ার কথা বলা হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি এক ধরনের আধুনিক ‘মনরো নীতি’, যা চীনের জন্য উদ্বেগজনক। বিশেষজ্ঞদের মতে, জাতীয় নিরাপত্তা কৌশলপত্র আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক না হলেও এটি যুক্তরাষ্ট্রের ভবিষ্যৎ পররাষ্ট্রনীতির দিকনির্দেশ করে। তবে সতর্ক করে দিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই স্বল্পমেয়াদি স্বার্থকেন্দ্রিক সিদ্ধান্তগুলো ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রকে আরও একা, দুর্বল ও বিচ্ছিন্ন করে ফেলতে পারে।

Posted ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.