বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০২ জুলাই ২০২০
আবারো দাবি উঠেছে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিকে যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করার। ইউএস কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে একটি বিল পাশ হয়েছে। গত ২৬ জুন ডেমোক্র্যাট নিয়ন্ত্রিত হাউজে ২৩২-১৮০ ভোটে বিলটি পাশ হয়। তবে রিপাবলিকান অধ্যুষিত সিনেটে বিলটি পাশ হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। অতীতেও ওয়াশিংটন ডিসিকে ৫১তম রাজ্য হিসেবে ঘোষণার দাবি উত্থাপিত হয়। কিন্তু কোন সরকারই তো আমলে নেয়নি। এবার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনকে কেন্দ্র করে পুনরায় দাবিটি সামনে চলে আসে। উল্লেখ্য ৫০টি রাজ্য এবং ৭টি টেরিটরি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র গঠিত। ১৯৫৯ সালের ছিলো ৪৮ রাজ্য। আর সে অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ৪৮টি তারকা দ্বারা খচিত। ১৯৫৯ সালে ৩ জানুয়ারি আলাস্কা ৪৯তম এবং একই বছর ২১ আগষ্ট হাওয়াই ৫০তম রাজ্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হয়।
রাজধানী হিসেবে ওয়াশিংটন ডিসি যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল ডিষ্ট্রিক্ট। যার নাম “ডিষ্ট্রিক্ট অফ কলাম্বিয়া”। সংক্ষিপ্ত রূপ “ডিসি”। ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম স্টেট হলে সম্ভাব্য নাম হতে পারে “নিউ কলাম্বিয়া।” এটি আসলে ওই স্থানটির পুরনো নাম, যেটি ১৯৮২ সালে অনুষ্ঠিত এক রেফারেন্ডামে ভোটারদের দ্বারা অনুমোদিত হয়। এছাড়া আরেকটি প্রস্তাব অনুসারে ওয়াশিংটন ডিসিকে “অ্যানাকষ্টিয়া- অহধপড়ংঃরধ”, কিন্তু ষ্টেট মর্যাদার পক্ষের প্রবক্তারা “নিউ কলাম্বিয়া” নামটিই নির্বাচন করেন। অবশ্য ডিসি’র অধিবাসীদের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত সেখানে বসবাস করছেন তারা নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবে উদ্বিগ্ন। ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাথলিক ইউনিভার্সিটির এসোসিয়েট প্রফেসর ম্যাথু গ্রীন বলেন, এর চেয়ে বরং বিকল্প নাম হতে পারে “ডগলাস কমনওয়েলথ।” কারণ ফ্রেডারিক ডগলাস আফ্রিকান-আমেরিকান রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন, যিনি দাসপ্রথা বিলোপ করার ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করেছেন। ষ্টেট মর্যাদার পক্ষে যারা বলছেন তাদের যুক্তি হলো, ডিসি কংগ্রেসে পুরোপুরি প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না ইউএস কংগ্রেসে। ভোট দেয়ার সদস্য না থাকায় এবং ডিসির জন্য কংগ্রেসের সিদ্ধান্তে পরিবর্তে সিদ্ধান্ত নেয় সিটি কাউন্সিল। যা একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান।
ওয়াশিংটন ডিসির ৭ লক্ষ নাগরিকের ভোটাধিকার নেই কংগ্রেস নির্বাচনে
এদিকে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য আমেরিকার রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির প্রায় ৭ লক্ষ মানুষের কোন ভোটাধিকার নেই কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেট এবং নিম্নকক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ নির্বাচনে। ১৯৬১ সালের পূর্বে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও তাদের ভোটাধিকার ছিলো না। সংবিধানের ২৩তম সংশোধনীর মাধ্যমে তাদেরকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের ক্ষমতা দেয়া হয়। হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভে অনির্বাচিত একজন প্রতিনিধি রয়েছে যার ভোট প্রদানের কোন ক্ষমতা নেই। আমেরিকান বিল্পবের সেনাপতি ও প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটনের নামে ১৭৯০ এর ১৬ জুন-ওয়াশিংটন সিটির গোড়াপত্তন। ওয়াশিংটন ডিসি মিউনিসিপ্যাল সরকার শাষিত। আমেরিকার প্রশাসন, আইন ও বিচার বিভাগীয় সদর দফতরগুলো ওয়াশিংটনে অবস্থিত। ওয়ার্ল্ড ব্যাংক, আই এম এফ, অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান ষ্টেট ও ওয়াশিংটনে। ইউএস কংগ্রেসে না হলেও তারা ভোট প্রয়োগ করে সিটি মেয়র এবং কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত করতে পারেন। মূলত সিটি প্রশাসনই সেখানকার সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। উইমিং অঙ্গ রাজ্যের চেয়ে অধিক জনবহুল এই রাজধানীর ভোটাধিকার বঞ্চিত মানুষ এরপরও ফেডারেল সহ সব ধরনের ট্যাক্স প্রদান করে আসছেন। এছাড়া ভোটাধিকার নেই গুয়াম, পোর্টরিকো এবং ভার্জিন আইল্যান্ডের আমেরিকানদের।
Posted ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ জুলাই ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh