বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
প্রেসিডেন্ট জো বাইডেরে প্রশাসনের ‘ওপেন বর্ডার পলিসি’র সুযোগে অবৈধ ইমিগ্রেশন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় অধিক চাপ সৃষ্টি করছে এবং বিশেষ করে ‘স্যাঙ্কচ্যুয়ারি সিটি’ খ্যাত নিউইয়র্কসহ ডেমোক্রেট সিটিগুলোর ওপর নবাবগত ইমিগ্রান্টদের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্ট সিটি প্রশাসনসমূহ। কারণ সিটিগুলোকে নবাগত ইমিগ্রান্টদের আবাসন, খাদ্য, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং এসাইলাম আবেদন করার জন্য আইনি সহায়তা দান খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। এজন্য সিটিগুলো স্টেট ও ফেডারেল সরকারের সহায়তা কামনা করলেও তারা কোনো সহায়তা পায়নি। তবে সিটিগুলোর পক্ষ থেকে ডেমোক্রেট নেতৃবৃন্দ হোয়াইট হাউজের ওপর চাপ সৃষ্টি করার পর দুই সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ঘোষণা করেছেন যে, ইমিগ্রান্টদের মধ্যে ইতোমধ্যে যারা এসাইলাম আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে যোগ্যতা প্রমাণ সাপেক্ষে দ্রুত ওয়ার্ক পারমিট ইস্যু করার ব্যবস্থা নেয়া হবে, যাতে তারা বৈধভাবে কাজ করে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে নিজেদের প্রয়োজনীয় ব্যয় নিজেরাই আয় করতে পারেন।
এদিকে ‘আমেরিকা ইনসাইডার’ নামে একটি সংবাদপত্র গত সোমবার তাদের এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে, নিউইয়র্ক সিটিতে আগত অনেক ইমিগ্রান্ট সিটির আশ্রয়ে বসবাস করছে এবং তারা অবৈধভাবে কাজ করে মাসে ৩,০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করছে। অনেকে ওয়ার্ক পারমিট ছাড়া খাবার ডেলিভারি করার মতো কাজ করে দৈনিক ৩৮৫ ডলার পর্যন্ত আয় করছে বলে পত্রিকাটি জানিয়েছে। টেক্সাস সীমান্ত থেকে গতবছরের মে মাস থেকে বাসযোগে নিউইয়র্ক সিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া ইমিগ্রান্টের সংখ্যা ১১০,০০০ ছাড়িয়ে গেছে এবং প্রতিদিন গড়ে ১০টি বাসযোগে আরো ইমিগ্রান্ট আসছে। সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন যে, ইমিগ্রান্টদের চাপে নিউইয়র্ক সিটি ধ্বংসের কবলে পড়েছে। শুধু নবাগত ইমিগ্রান্টরাই নয়, ৫০০,০০০ ভেনিজুয়েলানসহ ‘টেম্পোরারি প্রটেকক্টেড স্ট্যাটাস’ বা টিপিএস এর আওতায় যারা বৈধতা লাভের জন্য আবেদন করেছে, তাদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ নিউইয়র্ক সিটিতে বাস করছে এবং তারা ওয়ার্ক পারমিট না পাওয়া সত্ত্বেও অবৈধভাবে কাজ করছে।
‘আমেরিকা ইনসাইডার’ এর রিপোর্ট অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটি টেক্সাস থেকে সেখানকার গভর্নরের একতরফা সিদ্ধান্তে ও টেক্সাস সরকারের ব্যয়ে বাসযোগে পাঠিয়ে দেওয়া ইমিগ্রান্টদের সকল ব্যয় করছে এবং এজন্য সিটিকে দৈনিক আনুমানিক ১০ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। ডেপুটি মেয়র ফর হেলথ এন্ড হিউম্যান সার্ভিসেস অ্যানি উইলিয়ামস-ইসম বলেছেন, ‘আগামী সপ্তাহে আমরা আবারও আদালতের দ্বারস্থ হতে যাচ্ছি, কারণ আমি জানি না, বর্তমান আকারে যে মানবিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, এক্ষেত্রে বিধিতে উল্লেখিত মানবিক সংকটের কোনো সামঞ্জস্য আছে কিনা এবং এ ধরনের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগীরা দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আবাসন, খাদ্য ও চিকিৎসাসহ সকল সুবিধা পাওয়ার অধিকার পেতে পারেন কিনা।’ উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সিটিকে ‘আশ্রয়ের অধিকার’ নীতির সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আবশ্যিক হয়ে পড়েছে বলে সিটি প্রশাসন মনে করছে। মেয়র এরিক অ্যাডামস ইমিগ্রান্ট মোকাবিলার জন্য ফেডারেল সরকারের সহায়তার জন্য আবেদন জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে এ সঙ্কট স্থায়ী হলে আগামী তিন বছরে সিটির ব্যয় হবে ১২ বিলিয়ন ডলার, যা সিটির একার পক্ষে যোগান দেওয়া অসম্ভব ব্যাপার।
Posted ৫:২০ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh