নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২১
গত ১৫ জানুয়ারী শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে আল্লামা ফুলতলী সাহেব কিবলা’র ১৩তম বার্ষিক ঈসালে সাওয়াব মাহফিল। এ উপলক্ষে পার্কচেষ্টার জামে মসজিদে এদিন বাদ মাগরিব পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত, আলোচনা সভা, মিলাদ ও দো’য়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ আব্দুল মন্নাফ, মাওলানা নুরুল ইসলাম। মিলাদ শরীফ পড়েন মুশাহিদ আলী ও ফুলতলী (র.) এর শানে মর্সিয়া পরিবেশন করেন শামছুদ্দিন।
আলোচনা সভায় পার্কচেষ্টার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ মাশহুদ ইকবাল আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)’র জীবনীর উল্লেখযোগ্য দিক তুলে ধরে বলেন, তিনি ছিলেন বহুমুখি প্রতিভার অধিকারী। একজন প্রখ্যাত মুফাচ্ছিরে কুরআন, উস্তাদুল হাদিস। অসংখ্য মসজিদ মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও পৃষ্ঠপোষক। প্রতিষ্ঠাতা করে গেছেন এতিমখানা সহ জনসেবামুলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। তাঁর প্রতিষ্ঠিত দারুল কিরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্ট এখন পৃথিবীর সর্ববৃহৎ কেরাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আন্তর্জাতিকভাবে আধুনিক ইসলামী শিক্ষা বিস্তারে ভূমিকা রাখছে। তিনি বলেন, ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.)’র পুরো জীবনটাই ছিল কুরআন-সুন্নাহর জীবন। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ অনুসরণে তিনি ছিলেন অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। তাঁকে অনুসরণ করলেই আল্লাহ ও তার রাসুল (স.)কে পাওয়া যাবে।
মাওলানা মোহাম্মদ মাশহুদ ইকবাল কুরআন-সুন্নাহর আলোকে আলোচনায় বলেন, ইসলাম শান্তি ও মানবতার ধর্ম। মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমেই মানব জাতির শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত হতে পারে।
মাওলানা মোহাম্মদ মাশহুদ ইকবাল বলেন, নবী রাসুলগণ মৌলিক চারটি নীতিকে লক্ষ্য করে আল্লাহর বিধান প্রচার করেছিলেন।
তিনি পবিত্র কুরআনের ছুরা জুম্মার আয়াত উল্লেখ করে বলেন, নবী রাসুলগণের তাবলিগের প্রচারের মধ্যে ছিল আল্লাহর বাণী বিশুদ্ধভাবে পাঠ করে শোনানো, মানুষের অন্তরকে অপবিত্র থেকে পবিত্র করান, আল্লাহর কিতাবের সঠিক মর্মার্থ বুঝিয়ে দেওয়া এবং হিকমাহ তথা “সুন্নাহ ও ফিকহ” এর জ্ঞান প্রদান করা। ফুলতলী ছাহেব কিবলাহর তাবলীগী জীবনে এ চারটা নীতি পালনে এক বিরামহীন প্রচেষ্টা ছিল। তিনি ছিলেন এক মকবুল অতি উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন ক্বারী ও বিশুদ্ধ কুরআন তেলাওয়াতে নিবেদিত শিক্ষক ও খাদিম। ইলমে তাসাউফের সঠিক প্রশিক্ষক, কুরআন সুন্নাহার সঠিক মর্ম অনুধাবনকারী বিশ্লেষ ক্বারী। ছিলেন উচ্চ পর্যায়ের মুহাদ্দিস ও উস্তাদ। তার কর্ম জীবনের প্রতি লক্ষ্য করলে সত্যিকার একজন ওয়ারাছাতুল আম্বিয়ার অনুসরণ বা কর্ম পরিলক্ষিত হয়। তার কর্ম জীবনটা উলামাদের জন্য তাবিলগী খেদমতে মাইল ফলক হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
মাওলানা মোহাম্মদ মাশহুদ ইকবাল বলেন, তিনি আমরু বিল মারুফ ওয়া নাহি আনিল মুনকারের খেদমতে এক বিপ্লবী ভূমিকা পালন করে গেছেন। বিশুদ্ধ তেলাওয়াত, আহলুস সুন্নাত জামাতের আকিদায়, আমলিয়াতে যে সকল বিভ্রান্তি ও মহব্বতে রাসুল দেখাতে গিয়ে বেদাতী কার্য্যকলাপের বিরুদ্ধে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করে গেছেন। যুগান্তকারী তার তাবলীগী সংস্কারের কারণে তাকে যুগের মুজাদ্দিদ বলে আখ্যায়িত করা যায়। তার দীনি খেদমত বর্তমান দুনিয়ায় মুসলিম জাতির পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে। এজন্য তাকে মুসলমানগণ “ছাহেব কিবলা” বলে আখ্যায়িতত করেছেন। আলোচনা ও মিলাদ শরীফ শেষে ছাহেব কিবলার নছিহতগুলো পাঠ করে শোনানো হয়। পরে বিশ্ব মানবতার শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ মুনাজাত করা হয়। বিপুল সংখ্যক মুসল্লী মাহফিলে যোগ দেন। ইউএসএনিউজঅনলাইন.কম
Posted ৯:৩৯ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh