শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ | ৬ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদের বইয়ের আলোচনায় বক্তাগণ

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে হবে

এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ :   |   বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ঠেকাতে হবে

বক্তব্য রাখছেন ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ।

“জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব এখন পরিক্ষিত। তাই জলবায়ুর ক্ষতিকর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব মোকাবেলায় বৈশ্বিক নেতাদের ইতিবাচক অঙ্গীকার সময়ের দাবি। বৈশ্বিক নেতাদের মনোভাবকে প্রভাবিত করতে নাগরিক সমাজের অব্যাহত ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।” শিক্ষাবিদ ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদের সদ্য প্রকাশিত ‘পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন : বাংলাদেশ ও সমসায়িক বিশ্ব’ গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন। বক্তারা আরো বলেন, পৃথিবীতে যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ সমস্যা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা। বিশ্বজুড়ে যেভাবে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটে চলেছে তা রোধ করতে না পারলে ভবিষ্যতে আমাদের সুজলা সুফলা চমৎকার এই পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে। এজন্য আরো আগেই সচেতন হওয়া দরকার ছিলো। তারপরও জলবায়ু পরিবর্তন ও ক্রমবর্ধমান পরিবেশ দূষণ নিয়ে আমরা ভাবছি, এর উপর লেখালেখি হচ্ছে, বই প্রকাশিত হচ্ছে, বিশ্ব সম্মেলন হচ্ছে- এসবই আশার কথা। ভয়াবহ এ সমস্যা সমাধানে ব্যক্তি জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও নিজ নিজ অবস্থান থেকে যথায়থ ভূমিকা পরিবেশ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে বক্তারা মন্তব্য করেন।


গত ১৫ নভেম্বর সোমবার সন্ধ্যায় জ্যামাইকায় সাপ্তাহিক বাংলাদেশ কার্যালয়ে পত্রিকাটি’র উদ্যোগে প্রকাশনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সাপ্তাহিক বাংলাদেশ সম্পাদক ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি ডা. ওয়াজেদ এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন সাংবাদিক-শিক্ষক ইমরান আনসারী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. ওয়াজেদ এ খান। ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ এর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশ-এর উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু।

গত সোমবার সন্ধ্যায় নিউইর্কের জ্যামাইকাস্থ সাপ্তাহিক বাংলাদেশ কার্যালয়ে পত্রিকাটি’র উদ্যোগে উল্লেখিত বইয়ের উপর আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ সম্পাদক ডা: ওয়াজেদ এ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় লেখক ড. আশরাফ সিদ্দিকীর সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন সভার উপস্থাপক ও সাপ্তাহিক বাংলাদেশের উপদেষ্টা সম্পাদক আনোয়ার হোসাইন মঞ্জু।


আলোচনায় অংশ নেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা সম্পাদক ও টাইম টেলিভিশন-এর সিইও আবু তাহের, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, জাতিসংঘের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কবি কাজী জহিরুল ইসলাম, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, পরিবেশ অ্যাক্টিভিষ্ট সৈয়দ ফজলুর রহমান, সৈয়দ কামরুজ্জামান, গ্রীনবার্তা ডটকমের সম্পাদক ও স্টেট ইউনিভার্সিটি অব নিউ ইয়র্কের শিক্ষক ইমরান আনসারী, মুক্তচিন্তার সম্পাদক ফরিদ আলম, অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট রাজিয়া নাজমী, ইমিগ্রান্ট রাইটস সংগঠন ড্রাম এর পরিচালক কাজী ফৌজিয়া, মুক্তি জহির, সাংবাদিক-শিক্ষক ইমরান আনসারী, সাংবাদিক ফরিদ আলম, সাংবাদিক আব্দুস শহীদ, সাংবাদিক/লেখক রওশন হক, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আল আমীন রাসেল, এডভোকেট মুজিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার এমদাদুল ইসলাম, হবিগঞ্জ জেলা সোসাইটি ইউএসএ’র সভাপতি সৈয়দ নাজমুল আহসান কুবাদ, সাংবাদিক মোহাম্মদ আজাদ, জালালাবাদ সমিতির সহ-সভাপতি ও হবিগঞ্জ কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি শফি তালুকদার প্রমুখ।

ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ তার ‘পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন : বাংলাদেশ ও সমসায়িক বিশ্ব’ গ্রন্থ প্রকাশের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তুলে ধরে বলেন, কর্মজীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা পরিবেশগত নানা সমস্যাই আমাকে পরিবেশ নিয়ে লেখালেখিতে উৎসাহ যুগিয়েছে। বিভিন্ন সময়ে লেখা নিয়েই গ্রন্থটি প্রকাশিত হলো। এজন্য তিনি সাপ্তাহিক বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। আগামী দিনে বইটির দ্বিতীয় সংস্করণে ভুলত্রুটি শুধরানোর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন ইতোমধ্যেই গ্রন্থটি পাঠক প্রিয় হয়ে উঠেছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রন্থটি চাওয়া হয়েছে। আমার বিশ্বাস পরিবেশ নিয়ে যারা ভাবেন, চিন্তা করেন, লেখালেখি করেন, গবেষণা করেন তাদের গ্রন্থটি উপকারে আসবে।


কবি কাজী জহির বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ। তা সত্ত্বেও সুন্দরবনের পাশে রামপাল কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বে যেখানে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুশীল সমাজের অনেক প্রতিনিধি এর কোন ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছেন, যা দুর্ভাগ্যজনক।

মুহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, পরিবেশ বিপর্যয় ও জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে উদ্ভুত সমস্যার সমাধান করতে হলে সবার আগে আমাদেরকে আওয়ামী লীগ-বিএনপির রাজনীতির কথা ভুলে গিয়ে আগে দেশের কথা ভাবতে হবে। দেশ বাঁচলে আমরা বাঁচবো, পৃথিবী থাকলে আমরা থাকবো।
আবু তাহের বলেন, একসময় পরিবেশ আর জলবায়ুর সমস্যার বিষয়ে আমাদের কোনো চিন্তা-ভাবনাই ছিল না। আর এখন এই বিষয়টি এক নম্বর বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই বিষয় নিয়ে লেখালেখি, গবেষণা, আলোচনা হচ্ছে। এমনকি বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন, কথা বলছেন। তিনি বলেন, পরিবেশ রক্ষা করতে হলে সবার আগে সবাইকে সচেতন হতে হবে।

রতন তালুকদার ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদ-এর বইয়ের পাঠকপ্রিয়তা কামনা করে বলেন, আশার কথা হচ্ছে দেরীতে হলেও আমরা পরিবেশ আর জলবায়ুর সমস্যা নিয়ে কথা বলছি, বিশ্ববাপী আলোচনা হচ্ছে। সুন্দরভাবে পৃথিবীতে বসবাস করতে হলে আমাদেরকেই পৃথিবী সুন্দর রাখতে হবে।

ইমরান আনসারী বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশের দু’কোটি লোক বাস্তুচ্যুত হবেন। যার জন্য দায়ী শিল্পন্নত দেশগুলো। এসব বাস্তুচ্যুত মানুষদের জীবনধারার জন্য এখনই আমাদেরকে ভাবতে হবে, আওয়াজ তুলতে হবে। আমাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আলোচনায় এ বিষয়টিকে প্রধান্য দিতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ওয়াজেদ এ খান তার বক্তব্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বে যে বিপর্যয় ঘটার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে তা অনুধাবন করে মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে ড. আশরাফ আহমেদের প্রকাশিত গ্রন্থটিকে অত্যন্ত সময়োচিত বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সমুদ্র উপকূলবর্তী নিচু দেশ হওয়ার কারণে এ বিপর্যয়ের ভয়াবহতা আরো বেশি হবে। সেজন্য সময় থাকতেই সকলকে সচেতন হতে হবে যাতে দেশ ও মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। সাপ্তাহিক বাংলাদেশ এর প্রকাশনার সূচনায় পত্রিকাটির সঙ্গে ড. আশরাফ আহমেদের জড়িত থাকার কথা উল্লেখ করে তিনি তাকে ধন্যবাদ জানান।

উল্লেখ্য, ড. আশরাফ উদ্দিন আহমেদের “পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন: বাংলাদেশ ও সমসাময়িক বিশ্ব” শীর্ষক গ্রন্থে বিশ্ব ও বাংলাদেশের উপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব-প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। জন্মসূত্রে বাংলাদেশী হওয়ার কারণে তিনি বাংলাদেশের নদীগুলোর অবস্থা এবং বিশেষ করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অভিন্ন নদীগুলোর উপর ভারতের একতরফা নিয়ন্ত্রণ ও ভারত কর্তৃক উজানে পানি প্রত্যাহার করার ফলে শুকনো মওসুমে বাংলাদেশ যেভাবে পানির ন্যায্য অংশ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং এর প্রভাব পড়ছে কৃষিতে ও জনজীবনে যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে, তা নিয়ে তিনিও তাঁর উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ব্যক্ত করেছেন। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কি করণীয় তিনি সেসব উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। চমৎকার প্রচ্ছদ শোভিত গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘ভূজপত্র’। মূল্য: ৩০০ টাকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে ১০ ডলার।

advertisement

Posted ১:৩৫ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.