শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪ | ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

টেনেসির মেম্ফিস সিটির বাংলাদেশিরা

মেমফিস থেকে ফিরে মোহাম্মদ আজাদ :   |   বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

টেনেসির মেম্ফিস সিটির বাংলাদেশিরা

দুই সপ্তাহ আগে টেনেসির মেমফিস সিটিতে আমার দ্বিতীয় পারিবারিক সফর অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ। আমাকে সপরিবারে সেখানে যেতে হয়েছিল আমার মেঝো কুটুম হুমায়ুন কবীরের বড় মেয়ে তামসিলার বিয়েতে অংশগ্রহণ। যুক্তরাষ্ট্রের সাউথের রক্ষণশীল স্টেট টেনেসির ন্যাশভিলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাংলাদেশি বাস করেন।

কিন্তু সে সংখ্যা দুই হাজারের বেশি নয়। এরপর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সিটি মেমফিস, সেখানে বাস করেন শ’চারেক বাংলাদেশী। বিয়েতে অংশগ্রহণের জন্য সেখানে গিয়ে আমাকে চারদিন অবস্থান করতে হয়। এ সময় আমার সুযোগ হয়েছে ৩০২ বর্গমাইল আয়তনের মেমফিস সিটি ঘুরে দেখার। একাধিক বাংলাদেশির বাড়িতে লাঞ্চ বা ডিনারের দাওয়াত থাকায় বাংলাদেশি কমিউনিটির লোকজনের সঙ্গে আলোচনা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের সুযোগ হয়েছিল।


মেমফিসে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কোনো সংগঠন নেই। নেই কোনো বাংলাদেশি রাজনীতি। বলা যেতে পারে, মেমফিসের বাংলাদেশি কমিউনিটি আকারে ছোট হলেও অন্য যেকোনো বড় সিটিতে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটির চেয়ে ভালো আছেন। কমিউনিটির লোকজন একে অন্যের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। গোটা বাংলাদেশি কমিউনিটি যেন একটি বড় পরিবার। সংখ্যায় কম হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশিদের মধ্যে রয়েছেন প্রফেসর, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার ও ব্যবসায়ী। সাধারণ খেটে খাওয়া বাংলাদেশির সংখ্যা খুব কম বা নেই বললেই চলে।


নাসের ফয়জুল্লাহ নামে একজন বাংলাদেশী আমেরিকান মুসলিম যুবক সেখানে বাংলাদেশি ও মুসলিম কমিউনিটির অঘোষিত সম্রাট। যেখানে বাংলাদেশি ও মুসলিম কমিউনিটি তিনি সেখানেই রয়েছেন। শিলা চৌধুরী একজন বাংলাদেশী আমেরিকান ব্যবসায়ী। সাঈদ ফারুক পপলু একজন ব্যবসায়ী, যিনি প্রায় দুই বছর আগে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে মেমফিসে চলে এসেছেন। লিটা রহমান বাংলাদেশে একজন পেশাদার গায়িকা ছিলেন, তিনি মেমফিসে ব্যবসা করছেন। একইভাবে বাংলাদেশি হুমায়ুন কবেিররও রয়েছে নিজস্ব ব্যবসা। প্রেমা কবীরও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। পুরো মেমফিসে বাংলাদেশিদের কোনো রেস্টুরেন্ট বা গ্রোসারি নেই। সেজন্য নির্ভর করতে হয় আরবদের পরিচালিত গ্রোসারিগুলোতে। সেসব গ্রোসারিতে ভারতীয় মসলাপাতি ও চাল ইত্যাদি পাওয়া যায়।

মেমফিস তথা টেনেসির জনসংখ্যার ৮৩-৮৭ শতাংশ শ্বেতাঙ্গ। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মেমফিসে মাত্র ২০ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আনডকুমেন্টেড লোকজনের জন্য টেনেসিতে নিরাপদে বসবাস করা সম্ভব নয়। গাড়ি চালানোর সময় পুলিশ কখনো কাউকে থামালে বৈধ কাগজপত্র দেখতে চায়। এছাড়া আনডকুমেন্টেড হলে একমাত্র জরুরী চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোনো চিকিৎসা সেবা ছাড়া অন্য কোনো চিকিৎসা সেবা কাউকে দেওয়া হয় না।


বাড়ি ভাড়া ও বাড়ির দাম নিউইয়র্কের তুলনায় অনেক কম। সুপার শপ ও গ্যাস স্টেশন মিলিয়ে যেসব বাংলাদেশি ব্যবসা ক্রয় করেছেন, সেগুলোর মূল্য দুই লাখ ডলারের মতো। মেমফিসে বাংলাদেশি, পাকিস্তানি বা ভারতীয় অথবা অন্য কোনো কমিউনিটির কোনো পার্টি হল নেই। সেজন্য কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানের জন্য কোনো পার্টি সেন্টার ভাড়া নিতে হয়। সংখ্যায় কম হলেও বাংলাদেশি মুসলমানরা সাহসে ভর দিয়ে মেমফিসে একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য তারা ক্রয় করেছেন ৮ একর জমি। অচিরেই মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হবে বলে মসজিদ কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন।

আমার মেমফিস সফরের দ্বিতীয় দিন ছিল শুক্রবার। সেদিন মেমফিস ইসলামিক সেন্টারে আমার জুমা নামাজ আদায় করার সুযোগ হয়। ইমামের খুতবা বা বয়ান পুর্টোাই ছিল ইংরেজিতে। আমি যুক্তরাষ্ট্রে যতগুলো মসজিদ দেখেছি, সবগুলোর মধ্যে মেমফিসের ইসলামিক কমিাুনিটি সেন্টার আমার কাছে বড় মনে হয়েছে। মসজিদটি নির্মাণ করেছে পাকিস্তানি ও আরব কমিউনিটি।। ৬৬ একর জমির উপর নির্মিত মসজিদটিতে মহিলাদের নামাজের জন্য পৃথক ব্যবস্থা রয়েছে। মসজিদে রয়েছে কনফারেন্স রুম, রমজান মাসে ইফতার করার জন্য বিরাট ডাইনিং রুম এবং বাইরে বিশাল পার্কিং লট ও একটি ছোট আকারের লেক।

আমার সফরের দ্বিতীয় দিন ছিল তামসিলার হলুদ সন্ধ্যা। এ আয়োজনে ছিলেন কমিউনিটির সকলের প্রিয় ভাবী শিলঅ চৌধুরী। সেদিনের ড্রেসকোড ছেলেদের জন্য ছিল পাজামা-পাঞ্জাবি এবং মেয়েদের জন্য হলুদ রঙের শাড়ি। হলুদ সন্ধ্যায় খাবার এসেছে বিভিন্নজনের বাড়ি থেকে। হলুদ সন্ধ্যায় সবাইকে নাচতে হবে, এমন কথা থাকলেও কেউ নাচেননি। তবে শিল্পী লিটা রহমান গান গেয়েছেন। এরপরের দিন নির্ধারিত ছিল আকদের জন্য। আকদ অনুষ্ঠানে ছোট্ট বাংলাদেশি কমিউনিটির লোকজনসহ দুই পক্ষের ১৭৫ জন অতিথি উপস্থিথ ছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন সিটি অফ জার্মান টাউনের মেয়র মাইক পালাজোলো।

তিনি অত্যন্ত সাধারণ পোশাকে নিজে গাড়ি চালিয়ে একাই অনুষ্ঠানে এসেছেন। তিনি বরকনের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর আলাদাভাবে কথা বলেন কনের বাবা হুমায়ুন কবীর ও ছেলের বাবা এমএ সালামের সঙ্গে। তিনি কমিউনিটি সেন্টার ঘুরে ঘুরে সকলের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। কোনো ক্যাটারিং সার্ভিস বা বাংলাদেশি কোনো রেস্টুরেন্ট না থাকায় খাবার এসেছে বিভিন্ন বাড়ি থেকে। কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল রোস্ট ও চিকেনের, কাউকে বিফ বা কাবাব রুটির, কারও উপর দায়িত্ব ছিল রাইস ও সব্জি তৈরির। বিভিন্ন বাড়ির বিভিন্ন জনের রান্না হলেও খাবারের মান ছিল চমৎকার।

advertisement

Posted ১২:৫১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.