বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০১ অক্টোবর ২০২০
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ৩৪ দিন পূর্বে জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম দফা বিতর্কে অংশ নেন। ওহাইও রাজ্যের ক্লিভল্যান্ডে গত ২৯ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত বিতর্কটি কার্যত পরিণত হয় কুতর্কে। দেড় ঘণ্টারও অধিক সময় ধরে চলমান বিতর্কটি ছিল বিশৃঙ্খলাপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এতো নিম্নমানের প্রেসিডেন্টসিয়াল বিতর্ক জনগন কখনও প্রত্যক্ষ করেনি। বিতর্কের পুরো সময়জুড়ে ছিল ব্যক্তিগত আক্রমণ ও গালমন্দে ভরপুর। প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের শিষ্টাচার বিবর্জিত আচরণ সাধারণ মানুষের মনে গভীর হতাশার সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পুরো বিতর্ককালীন সময়ে ছিলেন মারমুখী। আগামী ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের পূর্বে আরো দুই দফা বিতর্কে মুখোমুখি হবেন প্রার্থীদ্বয়। গত মঙ্গলবার রাতে বিতর্ক অনুষ্ঠানটি উপস্থাপক ক্রিস ওয়েলেসের নিয়ন্ত্রণের অনেকটাই বাইরে চলে যায়। ট্রাম্প কিছুতেই কর্ণপাত করছিলেন না তার কথায়। তারপরও মন্দের ভালো এ বিতর্কে প্রাথমিক জয় ঘরে তুলেছেন জো বাইডেন।
করোনা ভাইরাস মহামারি, অর্থনীতি এবং নভেম্বরের নির্বাচনের মর্যাদা নিয়ে এ সময় দুই নেতার বক্তব্যে যেন অগ্নি ঝরছিল। ছিল ব্যক্তিগত আক্রমণ, নাম ধরে ডাকাডাকি। আর যথারীতি জো বাইডেনের বক্তব্যের মাঝখানে বাঁধা দেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ট্রাম্পকে যুক্তরাষ্ট্রের এ যাবতকালের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করেছেন জো বাইডেন। তাকে তিনি দায়িত্বহীন, মিথ্যাবাদী, সঙ, পুতিনের পোষা কুকুর হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সেইসঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্প রাশিয়ার মুখোমুখি হতে ব্যর্থ হয়েছেন। পক্ষান্তরে ট্রাম্প বলেছেন, জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চান।বিতর্কের মধ্যে জো বাইডেন যখন প্রথম সেগমেন্টে সুপ্রিম কোর্ট নিয়ে বক্তব্য রাখছিলেন তখন বার বার তার কথার মধ্যে বিঘ্ন সৃষ্টি করছিলেন ট্রাম্প। এ সময় ক্ষিপ্ত বাইডেন তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন- আপনি কি চুপ করবেন? এটা প্রেসিডেন্সিয়ালসুলভ আচরণ নয়।
পরে ট্রাম্পকে ‘ক্লাউন’, বর্ণবাদী এবং ‘পুতিনের পোষা কুকুর’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেন বাইডেন। বলেন, আপনি আমেরিকার এ যাবতকালের সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট। জবাবে ট্রাম্প বলেন, আপনার মধ্যে কোন স্মার্ট কিছু নেই, জো (বাইডেন)। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন জো বাইডেনের কথার মধ্যে বার বার বিঘ্ন সৃষ্টি করছিলেন, তখন এক পর্যায়ে তাকে এমন আচরণ করতে বারণ করেন উপস্থাপক ক্রিস ওয়ালেস। তিনি বলেন, আমি মনে করি মানুষের কাছে আমরা ভালভাবে উপস্থাপিত হতে পারবো যদি আমরা দু’জনেরই কথার মধ্যে বাঁধা না দেই। আপনাদের কাছে আমি এটা মানতে আবেদন জানাচ্ছি। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ঠিক আছে। তাকেও এটা মানতে বলুন। ক্রিস ওয়ালেস ট্রাম্পের এ কথার জবাবে বলেন, খোলাখুলি বলি- আপনি বেশি বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন। ট্রাম্পের পাল্টা জবাব- তিনিও (বাইডেন) প্রচুর বিঘ্ন সৃষ্টি করছেন। বিতর্কে বাইডেন বলেন, করোনা নিয়ে প্রেসিডেন্টের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। এর জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা ছিল চীনের ভুল। এরকম হওয়া কখনোই উচিৎ ছিলো না। তবে আমরা দুর্দান্ত কাজ করেছি। এ সময় ট্রাম্প আরো বলেন, বাইডেন এমন পরিস্থিতিতে পুরো দেশ বন্ধ করে দিতেন এবং পুরো দেশকে ধ্বংস করে দিতেন।
এদিকে ট্রাম্পের ১০ বছর ধরে আয়কর না দেওয়ার বিষয়ে বিতর্কে বাইডেন বলেন, আপনি মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ প্রেসিডেন্ট। একজন স্কুল; শিক্ষকও আপনার চেয়ে বেশি আয়কর দেন। এর জবাবে আয়কর নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনকে অস্বীকার করেন ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প বলেছেন ব্যবসায়ী হিসেবে বুদ্ধি খাটিয়ে তিনি যথাসম্ভব কম আয়কর দেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দ্বিতীয় এবং শেষ বিতর্কটি অনুষ্ঠিত হবে ১৫ ও ২২ অক্টোবর। এদিকে প্রেসিডেন্ট বিতর্ক নিয়ে গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ কমিশন জানিয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও কমলা হ্যারিসের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে ৭ অক্টোবর। সিএনএন, এনডিটিভি
করোনা নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য না দেয়ার অভিযোগ ট্রাম্পের
করোনা নিয়ে ভারতের বিরুদ্ধে সঠিক তথ্য না দেয়ার অভিযোগ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।করোনা নিয়ে চীনের সঙ্গে ভারতকেও এক বন্ধনীতে ফেলে দিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের সঙ্গে প্রথম বিতর্কেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বললেন, করোনায় মৃতদের প্রকৃত সংখ্যা জানাচ্ছে না চীন, রাশিয়া ও ভারত। ট্রাম্পকে বরাবর ‘মিথ্যাবাদী’ বলে কটাক্ষ করেন বাইডেন।
বাইডেন প্রশ্ন তোলেন, মার্কিন মুলুকে ৭০ লক্ষ করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে। তার জবাবে এ ভাবে ভারতকেও চীনের সঙ্গে এক পংক্তিতে উল্লেখ করায় নয়াদিল্লির অস্বস্তি বাড়বে বলেই মনে করছে পর্যবেক্ষকদের একাংশ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পর্বে এই প্রথম বিতর্কে মুখোমুখি হলেন ট্রাম্প-বাইডেন। ক্লিভল্যান্ডের ওই সভায় ট্রাম্পকে সরাসরি মিথ্যেবাদী বলে কটাক্ষ করে বাইডেন বলেন, ‘ঘটনা হল, উনি যা বলেন, সবই মিথ্যা। এখানে অবশ্য আমি তার মিথ্যের উদাহরণ দিতে আসিনি। সবাই জানেন তিনি মিথ্যুক। সারা বিশ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনা আক্রান্ত হয়েছেন আমেরিকায়। মৃত্যুর সংখ্যাতেও শীর্ষে। এই নিয়েই তোপ দেগে বাইডেন বলেন, ৭০ লক্ষ মানুষ ভাইরাসে সংক্রমিত। অথচ প্রেসিডেন্টের কোনও পরিকল্পনাই নেই। জনতার উদ্দেশে বাইডেন প্রশ্ন ছুড়ে দেন, আপনাদের কত জন ঘুম থেকে উঠে দেখেছেন যে খাওয়ার টেবিলে একটা চেয়ার ফাঁকা? আপনাদের পরিবারের কেউ কোভিড আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন?
এর জবাবেই চীন, ভারত ও রাশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে ট্রাম্প বলেন, আপনি সংখ্যার কথা বলছেন? আপনি জানেন না চিনে কত লোক মারা গিয়েছে। রাশিয়ায় কত মৃত্যু হয়েছে বা ভারতে কত জন কোভিডের বলি হয়েছেন। তারা (ভারত-চিন-রাশিয়া) প্রকৃত সংখ্যা জানায় না। ট্রাম্পের দাবি, ডেমোক্র্যাট গভর্নররা বলেন, প্রেডিডেন্ট ট্রাম্প অত্যন্ত ভাল কাজ করেছেন। করোনা ভাইরাসের তথ্য গোপন থেকে উহানের ল্যাবে ভাইরাস তৈরির মতো অভিযোগ চিনের বিরুদ্ধে আগেও তুলেছেন ট্রাম্প। কিন্তু এ দিন তার সঙ্গে ভারত ও চিনকেও জুড়ে দেওয়ায় কূটনৈতিক শিবিরের অনেকেই কিছুটা হতভম্ব। কারণ, ভারতের সঙ্গে আমেরিকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বেশ ভাল। ট্রাম্প-মোদী বোঝাপড়াতেও কোনও সমস্যা নেই। সেখানে দাঁড়িয়ে ট্রাম্পের এমন মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করছেন অনেকে। যদিও এখনও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি ভারত ।
প্রথম বিতর্কে বাইডেন জয়ী
প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কের অভিজ্ঞতা খুব একটা ভালো না হলেও এতে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী জো বাইডেনই জয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন অধিকাংশ দর্শক। টেলিভিশনে সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন এমন দর্শকদের মধ্যে পরিচালিত জরিপের ভিত্তিতে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, ৬০ শতাংশ দর্শকের দৃষ্টিতে বাইডেনই জয়ী হয়েছেন। বিপরীতে ট্রাম্পকে বিজয়ী মনে করেন মাত্র ২৮ শতাংশ দর্শক। একইভাবে সিবিএস নিউজের আরেক জরিপেও উঠে এসেছে, প্রথম বিতর্কে বাইডেনই জয়ী হয়েছেন। তবে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, তাদের জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের অধিকাংশের দৃষ্টিতেই এই বিতর্ক ছিল নেতিবাচক।
বিতর্ক চলাকালে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন দর্শকদের সামনে রাখা প্রশ্নের মাধ্যমে তাঁদের মতামত জানার চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে তারা এসএসআরএস প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এতে দেখা যায়, সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন—এমন ভোটারদের মধ্যে ৬০ শতাংশই মনে করেন, প্রথম নির্বাচনী বিতর্কে জো বাইডেন জয়ী হয়েছেন। আর ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন ২৮ শতাংশ ভোটার। এই ফল আগের নির্বাচনের সময় হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে হওয়া প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কের পর পরিচালিত জরিপের ফলের অনুরূপ বলা চলে। ২০১৬ সালের প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কের পর পরিচালিত জরিপে ৬২ শতাংশ ভোটার হিলারি জয়ী হয়েছেন বলে মত দিয়েছিলেন। বিপরীতে ট্রাম্পকে বিজয়ী মনে করেছিলেন ২৭ শতাংশ ভোটার।
জরিপের ক্ষেত্রে সিএনএন বিতর্কের আগে যেসব ভোটারের মত নিয়েছিল, তাদের সঙ্গেই আবার যোগাযোগ করে। এসব ভোটারের ৫৬ শতাংশ জানান, বাইডেন আরও ভালো করবেন বলে তাঁরা আশা করেছিলেন। অন্যদিকে ট্রাম্প আরও ভালো করবেন বলে একই ধরনের প্রত্যাশা করেছিলেন বলে জানান ৪৩ শতাংশ ভোটার। সিএনএন জানায়, বিতর্কে বাইডেন সত্য বলেছেন বলে মনে করেন ৬৫ শতাংশ ভোটার। ট্রাম্পের দেওয়া উত্তরগুলোকে সত্য বলেছেন ২৯ শতাংশ ভোটার। ট্রাম্পের ওপর বাইডেনের করা আক্রমণকে ন্যায্য বলে মনে করেন ৬৯ শতাংশ ভোটার। আর বাইডেনকে করা ট্রাম্পের আক্রমণকে ন্যায্য বলে মনে করেন ৩২ শতাংশ ভোটার।
এই জরিপকে সব মার্কিনির মতের প্রতিনিধিত্বকারী বলে মনে করা ঠিক হবে না বলে জানিয়েছে সিএনএন। সংবাদমাধ্যমটি জানায়, বিতর্কটি যারা দেখেছেন, তাঁদের মধ্যে শুধু ৫৬৮ জন নিবন্ধিত ভোটারের মতই এই জরিপে গ্রহণ করা হয়েছে। বিতর্কটি সরাসরি যারা দেখেছেন, তাঁরা অন্য মার্কিন ভোটারদের তুলনায় একটু বেশি রাজনীতি সচেতন। এদের অধিকাংশই কোনো না কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত বা কোনো একটি দলের কট্টর সমর্থক। সাধারণ মার্কিনদের মধ্যে এ ধরনের ভোটারের সংখ্যা এতটা বেশি নয়। সিএনএনের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে নির্দলীয় ভোটার হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন ৩৬ শতাংশ, সাধারণভাবে যা ৪০ শতাংশের মতো। শুধু তাই নয়, বিতর্কের দর্শকদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের সংখ্যাই বেশি। সিএনএনের জরিপে অংশ নেওয়া নিবন্ধিত ভোটারদের ৩৯ শতাংশই ছিল ডেমোক্রেটিক পার্টির সমর্থক। অন্যদিকে ট্রাম্পের সমর্থক ছিল ২৫ শতাংশ।
জরিপে দেখা গেছে, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে জো বাইডেনের ওপর বেশিসংখ্যক মানুষ আস্থা রাখছে। জাতিগত বৈষম্যের বিষয়ে বাইডেনের ওপর আস্থা রাখছেন ৬৬ শতাংশ ভোটার। ট্রাম্পের ওপর একই বিষয়ে আস্থা রাখছেন ২৯ শতাংশ ভোটার। স্বাস্থ্য সুরক্ষা খাতে বাইডেন ও ট্রাম্পের ওপর ভোটার আস্থার হার যথাক্রমে ৬৬ ও ৩২ শতাংশ। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় বাইডেন ও ট্রাম্পের ওপর ভোটার আস্থার হার যথাক্রমে ৬৪ ও ৩৪ শতাংশ। আর সর্বশেষ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মনোনয়নের বিষয়েও বাইডেনের ওপরেই বেশি আস্থা রাখছেন ভোটাররা। এ ক্ষেত্রে বাইডেনের ওপর আস্থা রাখছেন ৫৪ শতাংশ ভোটার। আর ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখছেন ৪৩ শতাংশ ভোটার। তবে অর্থনীতির প্রশ্নে কিছুটা ভালো অবস্থায় রয়েছেন ট্রাম্প। এই ইস্যুতে তাঁর ওপর আস্থা রাখছেন ৪৮ শতাংশ ভোটার। একই বিষয়ে বাইডেনের আস্থা রাখছেন ৫০ শতাংশ ভোটার।
সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন—এমন নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে ৬৩ শতাংশ মনে করেন, ভবিষ্যতের সংকট মোকাবিলায় বাইডেনের হাতে যথার্থ পরিকল্পনা রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ওপর আস্থা রাখছেন ৩০ শতাংশ ভোটার। এই বিবেচনায় বাইডেন ও ট্রাম্পকে সেরা নেতা মনে করেন যথাক্রমে ৫৫ ও ৪৩ শতাংশ ভোটার।
তবে বিতর্কে যে যেমনই করুন না কেন, তাতে অধিকাংশ ভোটারই মত পরিবর্তনের প্রয়োজন দেখছেন না বলে জানিয়েছেন। সিএনএনের জরিপের তথ্যমতে, জরিপে অংশ নেওয়া ভোটারদের ৫৭ শতাংশই জানিয়েছেন, বিতর্কের কারণে তাঁদের মত বদলাবে না। যাদের মত বদল হতে পারে, তাঁদের ৩২ শতাংশ জানিয়েছেন তাঁরা বাইডেনের দিকে ঝুঁকছেন। বিপরীতে একইভাবে ট্রাম্পের দিকে ঝোঁকার প্রবণতা রয়েছে ১১ শতাংশ ভোটারের।
অন্যদিকে সিবিএস নিউজের জরিপের তথ্য বলছে, সম্ভাব্য ভোটার—এমন ৮৩ শতাংশ দর্শকই মনে করেন বিতর্কটি ছিল নেতিবাচক। এই দর্শকেরা এমন একটি বিতর্ক দেখে বিরক্ত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। প্রথম বিতর্কে জো বাইডেন জয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন ৪৮ শতাংশ দর্শক। আর ট্রাম্পকে জয়ী মনে করেন ৪১ শতাংশ দর্শক।
খুবই অল্পসংখ্যক ভোটারের দৃষ্টিতে প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কটি ছিল তথ্যবহুল। সিবিএস নিউজের তথ্যমতে, সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন এমন ভোটারদের মাত্র ১৭ শতাংশ একে তথ্যবহুল হিসেবে মন্তব্য করেছেন। বিতর্কটি অধিকাংশ ভোটারের মনে বিরক্তির উদ্রেক করলেও দর্শকদের এক-তৃতীয়াংশকে এটি হাস্যরসও উপহার দিয়েছে। আর একেবারে হতাশ হয়েছেন ১৯ শতাংশ।
বিতর্কে ডেমোক্র্যাটদের মন ভরাতে পেরেছেন বাইডেন। সরাসরি বিতর্ক দেখেছেন এমন ডেমোক্র্যাটদের ৯২ শতাংশই মনে করেন, বাইডেন এতে জয়ী হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে ট্রাম্প পিছিয়ে রয়েছেন। রিপাবলিকান দর্শকদের ৮২ শতাংশ বিতর্কে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন বলে মনে করেন। আর বিতর্কটি ড্র হয়েছে বলে মনে করেন ১৩ শতাংশ রিপাবলিকান।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্ক চলাকালে সিবিএস নিউজে নিজেদের অভিমত জানানো ১ হাজার ৩৯ জন দর্শকের মতামতের ভিত্তিতে তৈরি করা হয় সিবিএস নিউজের এই জরিপ। গত ২৫-২৮ সেপ্টেম্বর সময়ে ইউগভ পরিচালিত একটি জরিপে অংশগ্রহণকারীদের একটি অংশ এই জরিপে অংশ নেন। সিবিএসের এই জরিপে অংশ নেওয়া ডেমোক্র্যাটদের তিন-চতুর্থাংশ জানিয়েছেন, বিতর্কের পর তাঁদের বাইডেনকে আরও বেশি পছন্দ হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিতর্কের পর ট্রাম্পের প্রতি আকর্ষণ বেড়েছে ৫২ শতাংশ রিপাবলিকানের। খুবই অল্পসংখ্যক ব্যক্তি নিজেদের মত পরিবর্তনের কথা জানিয়েছেন।
Posted ৩:৫১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০১ অক্টোবর ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh