নিউইয়র্ক : | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
বাংলাদেশ সোসাইটির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার জালিয়াতির চেষ্টাকারীকে মামুন আবুকে গ্রেফতার করেছে নিউইয়র্ক পুলিশ। তাকে গত ১৬ এপ্রিল জ্যামাইকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে কুইন্স ক্রিমিনাল কোর্টে মামলা করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে মামলা করে সহকারী কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি। তার মামলার নম্বর সিআর-০১৭২৫৭০-২৪কিউএন। তার বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
যার মধ্যে রয়েছে জালিয়াতি, চুরি এবং ব্যক্তিগত তথ্য চুরি। তার মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৮ মে। আবু মামুনকে গ্রেফতারের সাথে সাথে তার সহযোগিদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। তারাও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। ২০২৩ এর ১৯ সেপ্টেম্বর সোসাইটির চেক জালিয়াতি করে এস্টোরিয়াস্থ টিডি ব্যাংক থেকে অর্থ তোলার চেষ্টা করে।
কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তা ও সোসাইটির নেতৃবৃন্দের ত্বড়িৎ হস্তক্ষেপে সে ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার উত্তোলন করতে ব্যর্থ হয়। চেক জালিয়াতের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তারা মামলাও দায়ের করেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ মাস ধরে গোয়েন্দা পুলিশ তদন্ত করে। ব্যাংক ভিডিও ফুটেজ থেকে মামুন আবুকে শনাক্ত করে। তারা ব্যাংকের ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে তা দেখে মামুন আবুকে চিহ্নিত করে।
এরপর মামুন আবুর নামে ওয়ারেন্ট জারি হয়। তাকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার লাগানো হয়। সেই সঙ্গে তাকে ধরার জন্য পাঁচ হাজার ডলার পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে পুলিশ অবশেষে মামুন আবুকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য যে, সোসাইটির অর্থ আত্মসাতের প্রচেষ্টায় সংগঠনের পক্ষে পুলিশ রিপোর্ট করেন কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত মামুন আবু ও রফিক উল্লাহ নামের দুজন বাংলাদেশির নাম আসে। ঘটনার সময় প্রথম ৫ হাজার ডলারের চেক জালিয়াতির পর তাৎক্ষণিক ব্যাংকে অভিযোগ জানানো হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরও দুটি চেকে ১ লাখ ৬০ হাজার ডলার ক্লিয়ারেন্স পায়। ঘটনা নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তৎপর হওয়ায় জালিয়াতির অর্থ পুরোপুরি ফেরত পাওয়া যায়।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা ৫৫ মিনিটে টিডি ব্যাংক ডিটমার্স বুলেভার্ড শাখা থেকে একটি ফোন আসে। একজন নারী কর্মকর্তা জানান, জনৈক মামুন আবু ৫ হাজার ডলারের একটি চেক জমা দিয়েছেন। চেক নম্বর ২৯০৩। চেক ইস্যুর তারিখ লেখা ১৯ সেপ্টেম্বর। চেকের মেমোতে উল্লেখ করা হয়েছে ৭৩ স্ট্রিটে স্টেজ প্রোগ্রামের। নারী কর্মকর্তার কাছ থেকে এই তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চেকটি পরিশোধ না করার অনুরোধ জানানো হয়। ব্যাংক আর চেকের অর্থ পরিশোধ করেনি। ২০ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া ও নওশেদ ব্যাংকে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে হিসাবের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। এরপর সতর্কতার সঙ্গে ব্যাংকের হিসাবে নজর রাখছিলেন কর্মকর্তারা। কিন্তু একই দিন বিকেলে নওশেদ দেখতে পান, ব্যাংক হিসাব থেকে ১৪ হাজার ডলার তুলে নেওয়া হয়। ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে জনৈক রফিক উল্লাহ নামে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলারের একটি চেক জমা করা হয়। তাৎক্ষণিক ১৪ হাজার ডলার অনুমোদন দেওয়া হয়। ওই সময়ে তাৎক্ষণিক টিডি ব্যাংকের কল সেন্টারে ফোন করে এ ব্যাপারে আপত্তি জানান নওশেদ। সঙ্গে সঙ্গে ১ লাখ ৪০ হাজার ডলার অ্যাকাউন্টে ফেরত আসে।
এ ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ২২ সেপ্টেম্বর বেলা ১১টা ১০ মিনিটে একই অ্যাকাউন্টে সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার নামে ২০ হাজার ডলার অয়্যার ট্রান্সফার করা হয়। সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার নামে নিজে অ্যাকাউন্ট খুলে এ অর্থ ট্রান্সফার করে প্রতারক।
মামুন টিডি ব্যাংক সোসাইটির কর্মকর্তাদের জানায়, সংগঠনের সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার নামে টিডি ব্যাংকে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। ওই অ্যাকাউন্টে সভাপতি নিজে অয়্যার ট্রান্সফার করে ২০ হাজার ডলার নিয়েছেন। অথচ সভাপতি আব্দুর রব মিয়া জানান, টিডি ব্যাংকে তার কোনো অ্যাকাউন্টই নেই। আপত্তির পর ২০ হাজার ডলারও ফেরত আসে।
কিছুদিন আগে সভাপতির সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর কম্প্রোমাইজড হয়। তার ফোন নম্বরও ক্লোন হয়। কেউ তার নামে অ্যাকাউন্ট করে ওই কাজটি করে। ঘটনার পর সোসাইটির নামের দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়। পরে নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে সংগঠনের কাজকর্ম চালানো হয়। নিউইয়র্ক (ইউএনএ)
Posted ১২:১৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh