বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪
গত দুই বছর যাবত নিউইয়র্ক সিটি নবাগত ইমিগ্রান্টদের নিয়ে হিমসিম খাচ্ছে। বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনবহুল এই সিটিতে দুই লক্ষাধিক ইমিগ্রান্টের আগমনে সিটি প্রশাসনকে তাদের আবাসন, চিকিৎসা, খাদ্য, আইনি সহায়তা ও শিশুদের শিক্ষার ব্যবস্থা করার পেছনে প্রায় তিন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করতে হয়েছে। ফেডারেল সরকারের কাছে সিটি প্রশাসন বারবার সহায়তা চেয়েও ব্যর্থ হয়েছে এবং নিউইয়র্ক স্টেটও উপযুক্ত সহায়তা করতে পারেনি। এখন সিটি প্রশাসন পর্যায়ক্রমে হোমলেস ইমিগ্রান্টদের আশ্রয় শিবিরগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
এরই অংশ হিসেবে গত সোমবার পুলিশ র্যান্ডেল আইল্যান্ডে স্থাপিত সবচেয়ে বড় ইমিগ্রান্ট ক্যাম্পটি ইতিমধ্যে ভেঙে দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইমিগ্রান্টদের জন্য র্যান্ডেল দ্বীপে অসংখ্য তাবু স্থাপন করা হয়েছিল এবংএই অস্থায়ী তাবুর শহরে তিন হাজারের বেশি হোমলেস ইমিগ্রান্ট বসবাস করছিল, যাদের মধ্যে বেশির ভাগই এসেছে পশ্চিম আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো থেকে আগত ইমিগ্রান্ট। মেয়র এরিক অ্যাডামস স্থির করে দিয়েছিলেন যে, প্রাপ্তবয়স্ক ইমিগ্রান্টরা সিটি আশ্রয়ে কতদিন পর্যন্ত থাকতে পারবে। সেই মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় প্রশাসন ইমিগ্রান্টদের পরামর্শ দিচ্ছে তাদের নিজেদের উদ্যোগে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে নিতে। কারণ ইতিমধ্যে অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ইমিগ্রান্ট নিজেদের জীবিকা নির্বাহের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছে।
ইমিগ্রান্টরা যদিও মেয়রের ঘোষণা সম্পর্কে সচেতন ছিল, কিন্তু তাদের অনেকের মাঝেই শিবির ছেড়ে যাওয়ার ব্যাপারে অনাগ্রহ পরিলক্ষিত হয়েছে এবং অধিকাংশই সিটির বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে আশ্রয় শিবির ত্যাগ না করায় তাদেরকে অপসারণ করতে পুলিশী হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা পড়েছে। তবে হোমলেস ইমিগ্রান্টদের জন্য আশার কথা হলো, যারা একেবারেই নিরুপায়, নিজেদের উদ্যোগে আশ্রয় খুঁজে নিতে সমর্থ নয়, তাদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে ডিপার্টমেন্ট অফ হোমলেস সার্ভিসেস। তারা নতুন করে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করার সুযোগ পাবে বলে বিভাগটি জানিয়েছে।
র্যান্ডেল দ্বীপের ইমিগ্রান্ট আশ্রয় শিবিরটি সিটির জটিল সমস্যাগুলোর প্রতীকে পরিণত হয়েছিল, যা গুটিয়ে ফেলা সিটি প্রশাসনের জন্যও জরুরী হয়ে দাঁড়িয়েছিল। র্যান্ডেল দ্বীপের তাবুর ক্যাম্প ছাড়াও দুই বছরে আগত ২ লাখ ১০ হারের বেশি ইমিগ্রান্টের মধ্যে নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের ব্যবস্থাধীনের এখনও সিটির হোটেল, পরিত্যক্ত অফিস কমপ্লেক্স এবং অন্যান্য আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ৬৪ হাজার ইমিগ্রান্ট বাস করছে। কিন্তু এখন সিটি ইমিগ্রান্টদের অধিকাংশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে তোলার মাধ্যমে সিটির ওপর নির্ভরশীল ইমিগ্রান্ট সংখ্যা হ্রাস করছে।
২০২৪ সাল যেহেতু আমেরিকার নির্বাচনী বছর, সেজন্য নির্বাচনের ওপর ইমিগ্রান্ট সমস্যার একটি সুদূরপ্রসারী প্রভাব রয়েছে। যদিও গত কয়েক মাস ধরে দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে অতিক্রমকারী ইমিগ্রান্ট সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে ইমিগ্রান্ট ও ইমিগ্রেশন বিরোধী কট্টর রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ রিপাবলিকান নেতারা সীমান্ত নিরাপত্তা এবং অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলার সময় ডেমোক্রেটদের আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে নিউইয়র্কের রাস্তায় থাকা ইমিগ্রান্টদের ছবি দেখিয়ে তাদের সমস্যা নিরসনে ডেমোক্রেটদের ব্যর্থতার কথা বলছেন।
Posted ১২:৪৯ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২২ আগস্ট ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh