যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে বসবাসকারী ছায়মা তাসনিম শাপলা (২৪) গত ৪ জুন নিজ বাসায় খুন হয়েছেন স্বামীর হাতে। স্বামী আবদাল হোসাইন স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর স্ট্রোক করেছে বলে পুলিশকে কল করে। কিন্তু পুলিশের সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক তার স্বামীকে আটক করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায় সে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা পুলিশের নিকট স্বীকার করে। ছায়মা তাসনিম শাপলা বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের হাজরাই গ্রামের মরহুম মকদ্দুস আলীর একমাত্র কন্যা।

তার স্বামী আবদাল হোসাইন একই গ্রামের সমুজ আলীর ছেলে। ঘটনার সূত্রে জানা যায় ২০১৫ সালে বিয়ের পর ২০১৭ সালে স্বামী আবদাল হোসাইনের সাথে একমাত্র কন্যাসন্তান ফারিহাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন সায়মা। সেখানে পৌছার পর স্বামীর সাথে সুখে শান্তিতেই তাদের সংসার চলছিল। প্রায় তিন বছর পর স্বামীর সাথে স্ত্রীর মনোমালিন্য দেখা দেয়। অন্য মহিলার সাথে স্বামী পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়লে তাদের মাঝে প্রায়ই কলহের ঘটনা ঘটতে থাকে। এছাড়াও স্ত্রীর একাউন্ট থেকে সমুদয় অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে আবদাল। সর্বশেষ তিন মাস আগে আবদাল স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে বাংলাদেশে বেড়াতে যায়। কিন্তু স্ত্রী সন্তানকে বাংলাদেশে রেখে হঠাৎ করেই সে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসে এবং মিশিগানে বাবা-মার সাথে বসবাস শুরু করে।

এদিকে স্বামী একা চলে আসার পর ২৮ রমজান কন্যাকে নিয়ে ছায়মা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সিতে নিজের বাসায় এসে উঠেন। কয়েকদিন পর স্বজনদের সাথে দফায় দফায় বৈঠকের পর এক পর্যায়ে ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ আগে স্ত্রীর বাসায় আসেন আবদাল এবং একসাথে বসবাস শুরু করেন। গত ৪ জুন ছিল তাদের একমাত্র কন্যা ফারিহার জন্মদিন। ওইদিন রাতে সেখানে জন্মদিন পালন করে তারা ঘুমাতে যান।

স্থানীয় সময় ৩টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রীকে গলা টিপে হত্যা নিশ্চিত করে ঘাতক স্বামী। তাৎক্ষণিক পুলিশ করে স্ট্রোকের নাটক সাজায় আবদাল। পুলিশের সন্দেহ হলে আবদালকে আটক করে জিজ্ঞাসা করলে সে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করে। নিহত ছায়মা তাসনিম শাপলার মা জাহানারা বেগম অভিযোগ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত শাশুড়ি মিনারা বেগম, ভাঁসুর আখতার হোসেনের প্ররোচনায় তার একমাত্র কন্যাকে গলাটিপে হত্যা করেছে আবদাল হোসাইন। তিনি কন্যা হত্যার বিচার দাবি করেন।