শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪ | ১৬ কার্তিক ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বাংলাদেশ প্যারেড নিয়ে কমিউনিটিতে নতুন মেরুকরণ

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

বাংলাদেশ প্যারেড নিয়ে কমিউনিটিতে নতুন মেরুকরণ

প্যাারেডে মেয়র এরিক অ্যাডামস, শাহ নেওয়াজ, অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী ও গিয়াস আহমেদ।

নিউইয়র্ক সিটিতে বাংলাদেশ প্যারেড অনুর্ষ্ঠিত হয়েছে গত ২৬ মে । গ্র্যান্ড মার্শাল বিহিন এই প্যারেডে প্রধান অতিথি ছিলেন সিটি মেয়র এরিক অ্যাডামস। জ্যাকসন হাইটসের ৩৭ এভিন্যুতে ৬৯ স্ট্রিট থেকে দুপুর সাড়ে ১২টায় শুরু হওয়া প্যারেড শেষ হয় ৮৭ স্ট্রিটে গিয়ে। ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ইউএসএ নামে ব্যক্তি সর্বস্ব অখ্যাত একটি সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত প্যারেডে বাংলাদেশীদের অংশগ্রহণ ছিলো হতাশাব্যঞ্জক। আয়োজক সংগঠনটি বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গের সমম্বয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করলেও চূড়ান্ত পর্যায়ে তা রূপ নেয় বিভেদ বিভক্তিতে। বাংলাদেশ সোসাইটি সহ কয়েকটি সংগঠন ও ব্যক্তিবর্গ বিরত থাকেন প্যারেডে যোগদান থেকে।

ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট ও গোল্ডেন এইজ হোম কেয়ারের সহযোগিতায় আয়োজিত প্যারেডে অংশ নেয় কয়েকটি সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠন। পতাকা হাতে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি পুলিশ, অশ্বারেহী পুলিশ, কারেকশন বিভাগসহ ও অন্যান্য বিভাগের কর্মকর্তারাও অংশ নেন প্যারেডে। প্যারেড কমিটির আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেন গোল্ডেন এজ হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট শাহ নেওয়াজ। অন্যান্য দায়িত্বে ছিলেন গিয়াস আহমেদ-প্রধান উপদেষ্টা, এটর্নি মঈন চৌধুরী, আব্দুর রব, শাহ জে চৌধুরী-উপদেষ্টা, ফাহাদ সোলায়মান-প্রধান সমন্বয়কারী ও তরিকুল ইসলাম বাদল সদস্য সচিব।

বাংলাদেশ প্যারেডের উদ্বোধন করেন নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস। অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষ থেকে মেয়র অ্যাডামসকে আইকনিক মার্শাল উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়। মীর বাশারসহ কমিউনিটির বেশ কয়েকজন নেতা তাকে এই উত্তরীয় পরিয়ে দেন। । তাকে ক্রেস্টসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন উপহারসামগ্রী দেওয়া হয়।

উদ্বোধনী বক্তব্যে মেয়র এরিক এডামস বলেন, বাংলাদেশিদের এ ঐতিহাসিক প্যারেডে থাকতে পেরে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি। আমি আপনাদের কমিউনিটির একটি অংশ, গত ৩ বছর সকল কর্মকাণ্ডে তা প্রমান করেছি।

মেয়র এডামস বলেন, এই কমিউনিটির অধিকাংশ কর্মসূচিতে আমি উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি। মেয়রের অফিস বাংলাদেশিদের জন্য উন্মুক্ত। মেয়র ছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শাহ নেওয়াজ, গিয়াস আহমেদ, এটর্নি মঈন চৌধুরী, নুরুল আজিম,শাহ শহিদুল হক, কাজী আজম, ফাহাদ সোলায়মান ও তরিকুল ইসলাম বাদল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন বিন্দু কনা ও শাহ মাহবুব। প্রথমে দুই দেশের জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে প্যারেডের কাজ আরম্ভ হয়। প্যারেডের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।

সবিতা দাস এই পর্ব পরিচালনা করেন। মেয়র যখন বক্তৃতার সময় মঞ্চের অদূরে বাংলাদেশি তরুণ উইনি রোজারিও’র হত্যাকান্ডের বিচারের দাবিতে ব্যানার হাতে শ্লোগান দিচ্ছিল অনেকে । উল্লেখ্য ২ মাস আগে বাংলাদেশি রোজারিও পুলিশের গুলিতে নিহত হন। এছাড়াও এ প্যারেডে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ করে কেউ কেউ।

আয়োজক সংগঠন ও আহ্বায়ক কমিটি ২৬ মে’র প্যারেডকে নিউইয়র্কে প্রথম বাংলাদেশ ডে প্যারেড বলে আখ্যায়িত করলেও এর আগে প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্যোগে ১৯৮৪ আনিসুজ্জামান খোকনের নেতৃত্বে এবং ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সোসাইটির উদ্যোগে এস্টোরিয়ায় দ্বিতীয় বারের মতো ডাঃ হামিদুজ্জামান ও ফখরুল আলমের নেতৃত্বে নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ প্যারেড। সে হিসেবে এই প্যারেড ছিলো তৃতীয়। তা ছাড়া প্রতিবছর কোন একটি জাতীয় দিবস বা একটি নির্দিষ্ট দিনে অনুষ্ঠিত হওয়ার রেজওয়াজ না থাকায় বাংলাদেশ ডে প্যারেড’ বলার সুযোগ নেই বিধায় এটা ছিলো বাংলাদেশ প্যারেড।

প্যারেডের ১ সপ্তাহ আগে থেকে কে হবেন ‘গ্র্যান্ড মার্শাল’ এ নিয়ে আয়োজক নেতাদের মধ্যে শুরু হয় টানা হেঁচড়া। অবশেষে বতিল করেন প্যারেডের গ্র্যান্ড মার্শাল পদ। প্যারেডে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউ ইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামস। ইসরায়েলের সমর্থনকারী নিউ ইয়র্কের সিটি মেয়রের বক্তব্য চলাকালীন সময় তাকে উদ্দেশ্য করে ফিলিস্তিনপন্থী শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন দেশীয় নাগরিকরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশি কমিউনিটিতে যাদের অবদান রয়েছে তাদেরকে সেভাবে আমন্ত্রণ না জানানোর অভিযোগ আছে। বড় বড় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বাংলাদেশি মুলধারার রাজনীতিবিদরাও আসেননি প্যারেডে। এর জন্য আয়োজকদের খামখেয়ালীপনা ও উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

জ্যাকসন হাইটস অনুাষ্ঠিত প্যারেডকে ঘিরে স্থানীয় বাংলাদেশীদের মাঝে বিভেদ, বিভক্তি ও বিদ্বেষ আরো চরম আকার ধারণ করেছে। শুরু হয়েছে কাঁদা ছুড়াছুড়ি। নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ক্রমশই হয়ে উঠছে প্রকট। কমিউনিটিতে বিভক্তির বিষয়টি নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ সহ মূলধারায় ইতোমধ্যেই দিয়েছে ভিন্ন বার্তা। নিউইয়র্কে বসবাসরত অন্যান্য দেশ ও ভাষাভাষি মানুষ যে ধরণের প্যারেড আয়োজন করে তাদের জাতিয় মর্যাদা ও সাংস্কৃতিক ্ঐতিহ্য তুলে ধরে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ প্যারেডে দেখা যায়নি তেমন কোন লক্ষণ। বাংলাদেশের মর্যাদা ও ভাবমূর্তি অধিকতর উজ্জীবিত হয়েছে এমনটি হলপ করে বলা যাবে না।

নতুন প্রজন্মের সন্তানদের অসম্পৃক্ততা নিদারুনভাবে আশাহত করেছে প্রবাসীদেরকে। এই প্যারেডের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট অনৈক্যের বিষয়টি কমিউনিটির ভবিষ্যতের জন্য নেতিবাচক বার্তা দিয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ প্যারেডকে কেন্দ্র করে কমিউনিটিতে চলছে নতুন মেরুকরণ প্রক্রিয়া। বিশেষ করে বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও নেতৃবৃন্দের সাথে প্যারেড উদযাপন কমিটির সৃষ্ট মতবিরোধ আরো গভীর হচ্ছে বলে জানা গেছে।

Posted ১২:৪১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ৩০ মে ২০২৪

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: weeklybangladesh@yahoo.com

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.