বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১
বিদায় নিলেন অপশাসক ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন জোসেফ রবিনেট বাইডেন জুনিয়র। জয় হলো গণতন্ত্রের। সূচনা হলো নতুন দিনের। বহুল প্রত্যাশিত এই ক্ষণটি মনে রাখবেন আমেরিকানসহ গোটা বিশ্ববাসী। গত ২০ জানুয়ারি বুধবার বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস তাঁকে শপথ বাক্য পাঠ করান। ৩৫ শব্দের শপথ বাক্য পাঠের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ফিরে ফের তার গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য।
বাইডেন এমন এক সময়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হলেন যখন যুক্তরাষ্ট্র চরম অর্থনৈতিক, স্বাস্থ্যগত ও রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করছে এবং পূর্ববর্তী চার বছরের অস্থিরতায় আমেরিকার জাতীয় ঐক্যের সূত্রকে অনেকটাই শিথিল করে ফেলেছে। শপথ ওয়াশিংটনে কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটল বিল্ডিংয়ের ওয়েস্ট ফ্রন্টে আয়োজন করা হয় শপথ অনুষ্ঠানের। নিজের পরিবারের ১২৮ বছরের পুরোনো বাইবেলের একটি কপি হাতে শপথবাক্য পাঠ করেন বাইডেন। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দেননি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ১৮৬৯ সালে এন্ড্রু জনসনের পর থেকে এই প্রথম বিদায়ী কোন প্রেসিডেন্ট তাঁর উত্তরসূরির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। উপস্থিত ছিলেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। অন্যান্যের মধ্যে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা, লরা বুশ ও হিলারি ক্লিনটন উপস্থিত ছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ জিমি কার্টার (৯৬) স্বাস্থ্যগত কারণে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেননি।
নজিরবিহীন নিরাপত্তাব্যবস্থায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আমার সমস্ত সত্তাজুড়ে একটাই আকুতি, আমরা ঐক্যবদ্ধ হব। আমি পুরো যুক্তরাষ্ট্রের মানুষকে আমার সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই। বিশ্বকে আমরা আমদের শক্তি দিয়ে নয়, নেতৃত্ব প্রদান করব উদাহরণ সৃষ্টি করে।’ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল হিলে আজ বুধবার সমাগম ঘটেছিল মার্কিন রাষ্ট্রনেতাদের। সেনা সদস্য ও নানা স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান ইতিহাসের নায়ক জো বাইডেন তাঁর আবেগ মাখা বক্তৃতা দেন। অভিষেক বক্তব্যে বাইডেন বলেছেন প্রত্যাশা ও প্রতিশ্রুতির কথা। গত চার বছরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকান যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, তা থেকে বেরিয়ে আশাবাদের কথা বলেছেন জো বাইডেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, জর্জ ডব্লিউ বুশ ও বিল ক্লিনটনকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের দুই দফা ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন। তাঁকে শপথ পাঠ করান প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস। হোয়াইট হাউসের ওয়েস্ট ফ্রন্টে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে মিনেসোটা থেকে নির্বাচিত সিনেটর এমি ক্লোবুচার প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘আজ যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র উঠে দাঁড়ানোর সময়। সব গ্লানি মুছে সব সময়ের মতো যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে যাওয়ার বার্তা দেওয়ার দিন আজ। শপথ অনুষ্ঠানের চেয়ারপারসন রিপাবলিকান সিনেটর রয় ব্লান্ট তাঁর বক্তব্যে গত ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর হামলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তাঁর আহ্বানে শপথ অনুষ্ঠানে সমবেত সবাই দাঁড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন। সিনেটর ব্লান্টের বক্তৃতা শেষে জো বাইডেন এগিয়ে গিয়ে তাঁকে ধন্যবাদ জানান। করোনা বাস্তবতা ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে মাস্ক পরে উপস্থিত কংগ্রেস সদস্যবৃন্দ ও বিচার বিভাগ, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ সীমিত আমন্ত্রিত অতিথিদের সামনে এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান হয়। খ্যাতিমান আমেরিকান সংগীত শিল্পী লেডি গাগা জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন। এ সময় উপস্থিত রাষ্ট্রনেতারা দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীতকে অভিবাদন জানান।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম ল্যাটিনো বিচারপতি সোনিয়া সোটোমেয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসকে শপথবাক্য পাঠ করান এবং শপথ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম নারী, কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় বংশোদ্ভূত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হলেন কমলা হ্যারিস। কমলা হ্যারিসের শপথ গ্রহণের সময় তাঁর স্বামী ডাও এমহফ বাইবেল ধরে রাখেন। এর পর বিখ্যাত শিল্পী জেনিফার লোপেজ যুক্তরাষ্ট্রের দেশাত্মবোধক গানের মূর্ছনায় আচ্ছন্ন করে রাখেন অভিষেক অনুষ্ঠানের কিছুটা সময়।
নিজের পরিবারের ১২৭ বছরের পুরোনো বাইবেলে হাতে রেখে শপথবাক্য পাঠ করেন বাইডেন। এ সময় বাইবেল ধরে রাখেন স্ত্রী জিল বাইডেন। প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসকে সকাল ১১টা ৪৭ মিনিটে আহ্বান জানানো হয় প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে শপথ পাঠ করানোর জন্য। এ সময় বাইবেল ধরে রাখেন বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেন। ৩৫ শব্দের শপথ বাক্য উচ্চারণের পর প্রধান বিচারপতি অভিনন্দন জানান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে। জো বাইডেনকে এ সময় আবেগাপ্লুত দেখা যায়। ৭৮ বছর বয়সী জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়ে তিন মিনিটের মধ্যে তাঁর আসনে বসেন জন্য। বাইডেনের শপথের পর বক্তব্য দেন বিদায়ী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স। শপথ নেওয়ার আগে বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনের দিনটা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অতিথিশালা ব্লেয়ার হাউস থেকে। আজ সকালে বাইডেন প্রথমে যান ক্যাথেড্রাল অব সেন্ট ম্যাথিউ দ্য অ্যাপোস্টল গির্জায়। সেখানে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারা।
শপথ নেওয়ার আগে বাইডেন ও তাঁর স্ত্রী জিল বাইডেনের দিনটা শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের অতিথিশালা ব্লেয়ার হাউস থেকে। আজ সকালে বাইডেন প্রথমে যান ক্যাথেড্রাল অব সেন্ট ম্যাথিউ দ্য অ্যাপোস্টল গির্জায়। সেখানে তাঁর সঙ্গে যোগ দেন তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বিরোধী দল রিপাবলিকান পার্টির নেতারা। সিনেটর এমি ক্লোবুচার সকাল ১১টা ৫১ মিনিটে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে অভিষেক বক্তব্য রাখতে আহ্বান জানান। প্রধান বিচারপতি, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও অন্যদের সম্বোধন করে জো বাইডেন তাঁর বক্তৃতা শুরু করেন। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র খুবই মূল্যবান। আজ গণতন্ত্র রক্ষা পেয়েছে। তিনি তাঁর পূর্বসূরি উভয় দলের প্রেসিডেন্টদের অভিবাদন জানান। অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টারকেও শুভেচ্ছা জানান জো বাইডেন। শারীরিক কারণে কার্টার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারেননি।
জো বাইডেন করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতার কথা উল্লেখ করেন এবং শ্বেতাঙ্গ রক্ষণশীলতা, বর্ণ বিদ্বেষ ও সহিংসতাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আমার সমস্ত সত্তাজুড়ে একটাই আকুতি আমরা ঐক্যবদ্ধ হব। আমি সব মার্কিনকে আমার সঙ্গে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানাই। আমরা আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের নেতৃত্বের আসনে নিয়ে যেতে চাই। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাস নানা সংঘাতের মধ্যে দিয়ে গেছে। আমরা সব সময় ঐক্যবদ্ধভাবে এসব উতরে গেছি। ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া কোনো শান্তি নেই।’ বাইডেন বলেন, ‘চলুন নতুন করে শুরু করি। আমরা একে অন্যকে শোনার, শ্রদ্ধা করা শুরু করি। চলমান ভাবমূর্তির চেয়ে যুক্তরাষ্ট্র অনেক ভালো দেশ। আমেরিকানরা জাতি হিসেবে শ্রেষ্ঠ এ কথা আমাদের প্রমাণ করতে হবে।’
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে কমলা হ্যারিসের অভিষেক আমেরিকান সমাজ ও সাংস্কৃতিক মানসে পরিবর্তনের পরিচায়ক উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, ‘আজকের এ সময় সব সংকট মোকাবিলার চ্যালেঞ্জ গ্রহণের মুহূর্ত। ঐক্যই এগিয়ে যাওয়ার মূলমন্ত্র। যারা আমাকে ভোট দিয়েছে, আর যারা দেননি—সবার জন্যই সমান লড়াই চালিয়ে যাব।’ অর্থনৈতিক সংকটে দুর্দশাগ্রস্ত জনগণের কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘আমার কাছে সব বার্তাই আছে। আমরা আমদের হৃদয়কে সম্প্রসারিত করে নগর ও প্রান্তিক যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিদ্যমান সব বৈষম্য দূর করতে পারব। আমদের সমনে চলার জন্য একে অন্যকে প্রয়োজন। এক জাতি হিসেবেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আমরা এক হয়ে কঠিন এ সময়কে অতিক্রম করব।’
বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আজ ও আগামী দিনের বিশ্বকে নেতৃত্ব দেবে।’ এ সময় তিনি পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে একযোগে এগিয়ে যাওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। বিশেষত মহামারি মোকাবিলায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। মহামারিতে নিহত লোকজনের স্মরণে সবাইকে নীরব প্রার্থনায় আহ্বান জানান জো বাইডেন। পরে কয়েক সেকেন্ডের নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে স্মরণ করা হয় যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় মারা যাওয়া চার লাখের বেশি মানুষকে।
ক্যাপিটল হিলে গত ৬ জানুয়ারি হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘এমন ঘটেনি, এমন ঘটনা আর ঘটবে না আগামীতে; ঘটবে না আর কোনো কালেও।’ বক্তব্যের শেষ দিকে বাইডেন বলেন, ‘প্রিয় আমেরিকান বন্ধুরা, আমি আজ যেখানে শেষ করছি, সেখান থেকেই শুরু হচ্ছে। ঈশ্বর ও আপনাদের সবার সামনে পবিত্র শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি—আমি সব সময় আপনাদের সঙ্গেই থাকব।’ তিনি বলেন, ‘আমি সংবিধানকে রক্ষা করব। রক্ষা করব গণতন্ত্রকে। যুক্তরাষ্ট্রকে আমি আগলে রাখব। আর আমি আপনাদের সবাই, সবাইকে বলছি, ক্ষমতার কথা না ভেবে সম্ভাবনার কথা ভেবে আমি আপনাদের সেবা দিয়ে যাব। ব্যক্তিগত স্বার্থ নয়, জনস্বার্থই হবে মূল। আমরা সবাই মিলে কোনো শঙ্কা নয়, এক মার্কিন আশার গল্প রচনা করব; বিভাজন নয়, ঐক্যের গল্প লিখব; অন্ধকার নয়, লিখব আলোর গল্প। এমন এক গল্প, যা ভদ্রতা ও মর্যাদা, ভালোবাসা শুশ্রূষা ও শুভকামনার। ‘ঈশ্বর যুক্তরাষ্ট্রকে রক্ষা করুন, ঈশ্বর সবাইকে রক্ষা করুন’, বলে জো বাইডেন তাঁর অভিষেক বক্তৃতা শেষ করেন।
প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রথম ট্ইুট : প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম টুইটে বাইডেন লিখেছেন, ‘নষ্ট করার মতো সময় আমাদের হাতে নেই। বিশেষ করে আমাদের যখন সংকট মোকাবিলা করতে হচ্ছে। এ কারণেই আজ (বুধবার) আমি ওভাল অফিসে যাচ্ছি কাজ শুরু করতে, বড় পদক্ষেপ নিয়ে আমেরিকান পরিবারগুলোকে আশু স্বস্তি দিতে।’
জাতীয় সমাধিসৌধে বাইডেন : ক্যাপিটল হিলে শপথ গ্রহণ ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আর্লিংটন জাতীয় সমাধিক্ষেত্রে যান। সেখানে সমাধিস্থ নামা না জানা সেনাদের ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান তিনি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ফার্স্ট লেডি জিল, সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, জর্জ ডাব্লিউ বুশ, বারাক ওবামা ও তিন সাবেক ফার্স্ট লেডি হিলারি ক্লিনটন, লরা বুশ ও মিশেল ওবামা।
বাইডেন প্রতিবার যে বাইবেল ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন : জো বাইডেন যে বাইবেল স্পর্শ করে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন সেই বাইবেলের একটি ইতিহাস রয়েছে। বাইবেলটি বাইডেন পরিবারের সঙ্গে আছে শত বছরের বেশি সময় ধরে। জো বাইডেন জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেয়ার আগে এই বাইবেলকে সঙ্গী করেছেন, যেটি তাঁর পরিবারের সঙ্গে রয়েছে ১৮৯৩ সাল থেকে। শুধু এবারই নয়, আইনপ্রণেতা হিসেবে বা ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে যখনই কোনো শপথ নিয়েছেন, বাইডেন এই বাইবেল ছুঁয়েই শপথ নিয়েছেন। এ ধারাই অক্ষুণ্ন রাখলেন তিনি এবারও। ১৯৭৩ সালে প্রথম সিনেটর হিসেবে শপথ গ্রহণের সময় যেমন, ২০০৯ ও ২০১৩ সালে দুই মেয়াদে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার সময়ও তেমনি এই বাইবেল ছুঁয়েই শপথ নিয়েছিলেন বাইডেন। দেশের ৪৬তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার সময়ও এর ব্যতিক্রম হয়নি। উইলমিংটন নিউজ জার্নালের এক খবরে বলা হয়, এই বাইবেল জো বাইডেনের রাজনৈতিক জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ২০০৯ সালে বাইডেনের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথগ্রহণ বিলম্বিত হয়েছিল শুধু বাইবেলটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে। সিএনএন জানায়, এই একই বাইবেল ছুঁয়ে শপথ নিয়েছিলেন জো বাইডেনের প্রয়াত ছেলে বিউ বাইডেন, যখন তিনি ২০০৭ সালে ডেলাওয়্যার স্টেটের অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বাইডেন যতবার এই বাইবেল ছুঁয়ে শপথ নিয়েছেন বাইডেন, সেই তারিখ এতে লেখা রয়েছে।
Posted ৯:২৪ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh