শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ | ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

বিধি পরিবর্তনে হজ্বে যেতে পারেননি বহু নিউইয়র্কার

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২

বিধি পরিবর্তনে হজ্বে যেতে পারেননি বহু নিউইয়র্কার

হজ্ব পালন করার জন্য সৌদি আরব যেতে হলে সরাসরি এখন থেকে ফ্লাইট থেকে শুরু করে হোটেল রুম বুকিং, বিভিন্ন পবিত্র স্থান জিয়ারতের জন্য অগ্রিম বুকিং করিয়ে নিতে হবে সরাসরি সৌদি সরকারের মাধ্যমে। এবার হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে বুকিং সম্পন্ন করার আগে এই বিধি কার্যকর করায় একদিকে ট্রাভেল এজেন্টরা যেমন বিপদে পড়েছে, তেমনি হজ্ব পালনেচ্ছু বহু ব্যক্তির পক্ষে হজ্বে যাওয়া সম্ভব হয়নি। অনেক ট্রাভেল এজেন্ট ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যে তারা রীতিমতো পথে বসেছেন। বিগত ২৫ বছর যাবত ম্যানহাটানে ওমর এলফেকি’র “আল-ঈমান গ্রুপস ইউএসএ নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের হজ্ব ও উমরাহ পালনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সফর নিশ্চিত করে আসছিল। আমেরিকাসহ পাশ্চাশ্চ্যের দেশগুলোর হজ্বযাত্রীদের প্রতি সৌদি সরকার বিশেষভাবে উদার ছিল, কিন্তু নতুন হজ্ব বিধি তাদের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। হজ্বের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে গত জুন মাসে সৌদি সরকার এ বিধি জারি করে।

নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, সৌদি সরকার তাদ্রে এক ওয়েবসাইটে উল্লেখ করেছে যে হজ্বযাত্রী নির্বাচনে লটারির ব্যবস্থা করা হয়েছে, যারা হজ্বে যাওয়ার জন্য নির্বাচিত হবেন তাদের বুকিং করানোর কাজ সম্পন্ন করাতে হবে সৌদি সরকারের মাধ্যমে, অন্য কোনো উপায়ে নয। আল ইমান ইউএসএ’র ওমর এলফেকি বলেছেন, এ ব্যবস্থার কারণে আমরা ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়েছি। গত ২৫ বছর যাবত হজ্বের মওসুমে মুসল্লিদের সৌদি আরবে প্রেরণ করাই আমার ব্যবসা ছিল। আমার ৫ জন কর্মচারি আছেন এবং আমরা সবাই হজ্ব উপলক্ষে মানুষের ভ্রমণ নিশ্চিত করার মধ্য দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করি। এখন আমি কী করবো, তা স্থির করতে পারছি না।
উল্লেখ্য, করোনা মহামারীর আগের বছর ২০১৯ সালে সৌদি সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১৮ লাখের অধিক মুসলিম হজ্ব পালন করেছেন। ২০২০ সালে হজ্ব ও উমরাহ পালনের জন্য বিদেশিদের ভিসা দেওয়া হয়নি এবং ২০২১ সালে সীমিত সংখ্যক ভিসা দেওয়া হয়েছে। এর ফলে পর্যটন শিল্প বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়েছে। কারণ শুধু হজ্ব নয়, উমরাহ পালনের ক্ষেত্রেও একই ধরনের বিধিনিষেধ কার্যকর ছিল করোনা মহামারীকালে। স্বাভাবিক সময়ে প্রতিবছর গড়ে তিন কোটি মানুষ উমরাহ পালন করে এবং এটিকে কেন্দ্র করে যে ব্যবসা তার আকার বিশাল। বিগত বছরগুলোতে দুই পবিত্র নগরী মক্কা ও মদিনায় বহু বিলাসবহুল হোটেল গড়ে ওঠেছে এবং সারা বছর জুড়ে উমরাহ পালিত হয় বলে হোটেলগুলো ভালো ব্যবসা করে।


সৌদি আরবের হজ্ব ও উমরাহ মন্ত্রণালয় যে লটারি ব্যবস্থা চালু করেছে, তার লক্ষ্য হিসেবে “হজ্ব পালনকারী ডিজিটাল অভিজ্ঞতা বিকাশ” এবং “সরাসরি প্রক্রিয়া অবলম্বন ও প্রতিযোগিতামূলক ব্যয় কমিয়ে আনার” কথা উল্লেখ করেছে তাদের ওয়েবসাইটে। কিন্তু এটা অনিশ্চিত যে নতুন পদ্ধতিতে হজ্বযাত্রীরা কী পরিমাণ অর্থ সাশ্রয় করতে সক্ষম হবেন। তবে ট্রাভেল এজেন্টরা মনে করেন যে, সদ্য চালু করা পদ্ধতি সৌদি কর্মকর্তাদের নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল ছাড়া আরা কিছু নয়। মি: এলফেকি বলেন, সৌদি আরব এক উপায়ে না হলেও আরেক উপায়ে প্রচুর অর্থ কামিয়ে নেয।

সৌদি আরব প্রতি বছর মুসলিম দেশগুলো থেকে হজ্ব পালনের জন্য হজ্বযাত্রীর কোটা নির্ধারণ করে। কিন্তু ইউরোপ, আমেরিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার থেকে হজ্বযাত্রী সৌদি আরবে প্রবেশ করতে দেওয়ার ক্ষেত্রে অতীতে কোনো কোটা নির্ধারিত ছিল না। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানায় যে সে বছর আনুমানিক ২০ হাজার আমেরিকান হজ্ব পালন করতে গেছে এবং তাদের মাথাপিছ ব্যয়ের পরিমাণ ছিল কমপক্ষে ১০ হাজার ডলার। হজ্বের ক্ষেত্রে একসঙ্গে অনেক ব্যক্তি গেলে তা সবসময় সহজ ও স্বচ্ছন্ন বলে মনে করেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ইসলামিক সেন্টারের ডাইরেক্টর খালিদ লতিফ। ২০১৯ সালে তার নেতৃত্বে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একশ’র বেশি ছাত্র হজ্বে গিয়েছিল। এভাবে আরও অনেকে হজ্বে যান, তারা যে ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে আস্থাভাজন বিবেচনা করেন, তার নেতৃত্বে হজ্ব পালন করেন।


অ্যাস্টোরিয়ার এল মদিনা ট্রাভেলসের ইসমাইল চায়েপ (৬৫) হঠাৎ করে হজ্ব বিধি পরিবর্তন করার তার ব্যবসার ক্ষতি সম্পর্কে বর্ণন করেন। ২০২০ সালে তার কাছে হজ্ব পালনের জন্য অর্থ জমা দিয়েছে এমন কিছু লোকসহ তাকে ৩৫০ জন সম্ভাব্য হজ্বযাত্রীর অর্থ ফেরত দিতে হয়েছে। দশ জন কর্মচারিসহ তার এখন পথে বসার অবস্থা। তিনি জানান, তার কিছু গ্রাহক মাথাপিছু ২৫ হাজার ডলার পর্যন্ত জমা দিয়েছিল, যা তাকে ফেরত দিতে হয়েছে।

এলফেকি’র আল ইমান গ্রুপে এবারের হজ্ব প্যাকেজ ছিল গড়ে ১৬ হাজার ডলার, যা তিনি ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু খুব কম সংখ্যক লোকই ব্যক্তিগতভাবে সৌদি সরকারের নতুন বিধির সমালোচনা করতে আগ্রহী, কারণ তারা সমালোচনা করলে ভবিষ্যতে তাদেরকে সৌদি আরবে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। অ্যাস্টোরিয়ার বাসিন্দা বাংলাদেশী এমাদ চৌধুরী (৬৮) বলেন, সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তে আমি ব্যক্তিগতভাবে দু:খ অনুভব করছি না। কারণ ট্রাভেল এজেন্টরা হজ্বের নামে নিরীহ হজ্বযাত্রীদের কাছ থেকে বিভিন্ন ফি’এর কথা বলে অনেক অর্থ হাতিয়ে নেয়। হজ্বে যাওয়া সহজ হওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন কয়েক বছর আগে তিনি তার স্ত্রীর জন্য ১৪ হাজার ডলার ব্যয়ে হজ্ব প্যাকেজ ক্রয় করেন ম্যানহাটানের দার-এস-সালাম ট্রাভেল এজেন্সি থেকে। তারা সারা জীবন এজন্য সঞ্চয় করেছেন। তখন তিনি যেতে পারেননি, কারণ সঞ্চয় থেকে মাত্র ৮ হাজার ডলার অবশিষ্ট ছিল ছিল, যা তার নিজের প্যাকেজ কেনার জন্য যথেষ্ট ছিল না।। তিনি মনে করেন সৌদি সরকারের সিদ্ধান্তে সাধারণ হজ্বযাত্রীরা উপকৃত হবেন।


advertisement

Posted ৫:১১ পূর্বাহ্ণ | শনিবার, ১৬ জুলাই ২০২২

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.