বাংলাদেশ সঙ্গীত জগতের উজ্জল তারকা বেবী নাজনীন। ব্ল্যাক ডায়মন্ড খ্যাত এই শিল্পী বিগত তিন দশক ধরে অসংখ্য গান গেয়েছেন। সুরের লহরীতে বিমোহিত করেছেন দেশবাসীকে। অনেকবার তিনি সম্মানিত হয়েছেন জাতীয়ভাবে। গান গেয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। সুনাম বয়ে এনেছেন দেশের জন্য। নিজ ভাষা ছাড়াও উর্দু, হিন্দিসহ অন্যান্য ভাষায় গান গেয়ে তাক লাগিয়েছেন শ্রোতাদের। গুণী এই জাতীয় শিল্পী এখন বছরের সিংহভাগ সময় কাটান যুক্তরাষ্ট্রে নিজ ছেলের সান্নিধ্যে। এরমাঝে তার একক সঙ্গীত পরিবেশনেরও আয়োজন করে থাকেন তার ভক্ত ও অনুসারীগণ। এমনি একক একটি সঙ্গীত সন্ধ্যার আয়োজন করেন তার ভক্তবৃন্দ। গত ১৯ নভেম্বর সন্ধ্যায় নিউইয়র্ক সিটির উডসাইডের গুলশান টেরেসে একক সঙ্গীতানুষ্ঠানে টানা তিন ঘণ্টা গান গেয়ে তাক লাগিয়ে দেন দর্শক-শ্রোতাদের। বেবী নাজনীন ফ্যান ক্লাব ইউএসএ আয়োজিত সঙ্গীতানুষ্ঠানে অংশ নেন কমিউনিটির বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ।

অনুষ্ঠানে বেবী নাজনীন শুধু আধুনিক নয়, দর্শকদের অনুরোধে গেয়ে শোনান সুফি, গজল, রবীন্দ্রসঙ্গীত ও ভাওয়াইয়া গান। উর্দু ও হিন্দি গজলে তাঁর দরদ মাখানো কণ্ঠ শ্রোতাদের নিয়ে যায় সঙ্গীতের অনেক গভীরে। পরিবেশনার ফাঁকে ফাঁকে গান নিয়ে তাঁর বিশ্লেষণ দর্শক-শ্রোতাদের জ্ঞানভাণ্ডারকেও করেছে সমৃদ্ধ।

শিল্পী তাঁর পরিবেশনা শুরু করেন ‘সূর্য যখন ওঠে’ দেশের গান দিয়ে। তারপর দু’চোখে ঘুম আসে না, এলোমেলো বাতাসে উড়িয়েছি শাড়ির আঁচলসহ তাঁর জনপ্রিয় ১০টি মৌলিক গান পরিবেশনের পর একটি বিরতি নেন। এই বিরতিতে আয়োজকদের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্টসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।

উর্দু, হিন্দি গজল ছাড়াও অতিথিদের পছন্দের গানগুলো একে একে পরিবেশন করেন বাংলাদেশের সঙ্গীত অঙ্গনে সাড়া জাগানো এই শিল্পী। গেয়েছেন সিলেটের আঞ্চলিক গানও।

সবশেষে তাঁর নিজের এলাকার জনপ্রিয় ভাওয়াইয়া গান ‘একি গাড়িয়াল ভাই দিয়ে শেষ করেন বেবী নাজনীন। এ সময় হলভর্তি দর্শকরা তাঁকে দাঁড়িয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন।

সুন্দর ও পরিপাটি এই সঙ্গীত সন্ধ্যায় উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটি যুক্তরাষ্ট্র শাখার আহ্বায়ক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সদস্য সচিব মিজানুর রহমান মিল্টন ভূঁইয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক শরাফত হোসেন বাবু, বিশিষ্ট চিকিৎসক চৌধুরী সারোয়ারুল হাসান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, আসেফ বারী টুটুল, আহসান হাবীব, মাকসুদুল এইচ চৌধুরী, যুবদল নেতা আবু সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।

উল্লেখ্য, উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী বেবী নাজনীন বাংলাদেশের নীলফামারী জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি নিউইয়র্কে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। সঙ্গীতে অবদানের জন্য তিনি বেশ কয়েকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। সর্বশেষ ২০০৩ সালে তিনি সঙ্গীতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এ ছাড়া দেশ বিদেশ থেকে পেয়েছেন অসংখ্য সম্মাননা।