বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নির্বাচন আগামী ৫ নভেম্বর, মঙ্গলবার। প্রেসিডেন্ট সহ হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৪৩৫টি আসনে অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান প্রার্থীদের মাঝে।
নিউইয়র্ক কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট ৫ থেকে এই নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে লড়বেন পল কিং। তার এই আসনে ডেমোক্রেট দলীয় বর্তমান কংগ্রেসম্যান গ্রেগরি মিক্্স। ইমিগ্রান্টদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন হাউজ অপ রিপ্রেজেন্টেটিভের রিপাবলিকান প্রার্থী পল কিং। গত ২৫ আগস্ট রোববার জ্যামাইকার হিলসাইডে ধানসিড়ি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বিদেশিদের আগমণ ঠেকাতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি কঠোর পরিশ্রমী ইমিগ্রান্টদের উচ্চ বেতনের চাকরির পথ সুগম এবং দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে আনার লক্ষ্যে কাজের সংকল্প ব্যক্ত করেন তিনি। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের জ্যামাইকা, কুইন্স ভিলেজ, রোজডেল ভিলেজ, সাউথ জ্যামাইকা, হলিস, রিচমন্ডহিল, ব্রডচ্যানেল, ক্যাম্ব্রিয়া হেইটস, হাওয়ার্ড বিচ, কিউ গার্ডেন, লোরেলটন, সেন্ট আলবেন্স, স্প্রিংফিল্ড গার্ডেন, জেএফকে এয়ারপোর্ট এবং ওজোনপার্কের অংশবিশেষ নিয়ে গঠিত কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট-৫ থেকে তিনি প্রার্থী হয়েছেন।
পল কিং বলেন, ইমিগ্রান্টদের সর্বশেষ অ্যামনেস্টি দেওয়া হয় ১৯৮৬ সালে এবং তা দিয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট রিগ্যান। এরপর ডেমক্র্যাটরা ইমিগেশন ইস্যুতে অনেক কথামালা ছড়িয়েছে, কিন্তু তারা আনডকুমেন্টেড ইমিগ্রান্টদের দুর্দশা লাঘবে আন্তরিকভাবে ন্যূনতম পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি। বরং অনেক ক্ষেত্রেই তারা কঠোর পদ্ধতি গ্রহণ করেছে। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে আমরা যদি জয়ী হতে পারি, এবং তাহলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প যদি জয়লাভ করেন তাহলে আমরা অবশ্যই ইমিগ্রেশনে ভঙ্গুর অবস্থা ঢেলে সাজানোর জন্য সোচ্চার ভূমিকা পাল করব।
সংবাদ সম্মেলনে রিপাবলিকান প্রার্থী পল কিংকে পরিচয় করিয়ে দেন কমিউনিটি লিডার শরাফ সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশি আমেরিকান রিপাবলিকান পার্টির প্রতিষ্ঠাতা-চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মেরাজ এবং সেক্রেটারি এহসান রহমান খোকন। বিশিষ্টজনদের মধ্যে আরও ছিলেন কমিউনিটি নেতা ওসমান গণি। পল কিং বলেন, আমি কংগ্রেসে লড়ছি বিরাট একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, প্রিয় পরিচিত এলাকাবাসীর ঘনিষ্ঠ একজন হিসেবে। কারণ, সময়ের বিবর্তনে আমেরিকান স্বপ্ন অনেকেরই ভেঙে চৌচির হয়েছে। এ অব্স্থার অবসান ঘটিয়ে আমাদের সন্তান, নাতি-পুতিদের জন্য বসবাসের উপযোগী একটি আমেরিকা গড়ার বিকল্প নেই। এবং তা হতে পারে বৈধ-অবৈধ সকলের জন্যই।
তিনি বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজাতে চাই। বর্তমানে কুইন্স এবং লং আইল্যান্ডের অনেক হাই স্কুলেই লেখাপড়ার মান উন্নত নয়। বিশেষ করে অংকে সকলেই কাঁচা। পল কিং বলেন, ডিগ্রি গ্রহণ করেও অনেকে প্রত্যাশিত চাকরি পাচ্ছেন না। ব্যবসা শুরু করবেন-এমন অর্থের সংস্থানও নেই অনেকেরই। ফলে আমেরিকান স্বপ্ন থমকে থাকছে বছরের পর বছর। আর এই অবিশ্বাস্য সংকট তৈরি হয়েছে রাষ্ট্রীয় নীতি-নির্ধারকদের ব্যর্থতার জন্য। তারা যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণে সক্ষম হননি। রিপাবলিকান নেতা বলেন, ট্যাক্সের অর্থ কল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে না। যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে ব্যবসার নামে ফায়দা লুটার ফাঁদ পাতা হলেও মূলত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি সাধারণ আমেরিকানরা।
পল কিং বলেন, দু’বছর পরপর নির্বাচন আসে, আপনারা একেকজনের প্রতিশ্রুতির বন্যায় অভিভূত হয়ে ভোট দেন। কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আমরা যদি এখনই সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হই তাহলে আমাদের নাতি-পুতিরা ভিক্ষার ঝুলি হাতে নিতে বাধ্য হবে। কারণ, শিগগিরই জাতীয় দেনার পরিমাণ ৫ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। আগে থেকেই ১১ মিলিয়নের অধিক আনডকুমেন্টেড বিদেশিদের সমস্যা সমাধানে দৃষ্টি না দিয়ে গত ৩ বছর সীমান্ত খুলে দেওয়ায় লাখ লাখ বিদেশি আমেরিকায় ঢুকে পড়েছে। এর ফলে সামাজিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।
সিটিজেন অথবা বৈধ ইমিগ্রান্টদের কাজ আরও কম পারিশ্রমিকে অবৈধভাবে ঢুকে পড়া বিদেশিরা লুফে নিচ্ছে। শুধু তাই নয়, বাইডেন প্রশাসন অবৈধভাবে আগত অনেক বিদেশিকে ফাইভ স্টার হোটেলে রাখছেন। তাদের খাবারের জন্য নগদ অর্থ সহায়তাও করা হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন ইতালি বংশোদ্ভূত আমেরিকান পল কিং। তিনি বলেন, ট্যাক্স প্রদানকারীদের চেয়ে বেআইনিভাবে সীমান্ত অতিক্রমকারীরা বেশি সুবিধা পাচ্ছে। এমন পরিস্থিতি রুখে দিতেই আগামী নির্বাচনে আমি বিজয়ী হতে বাংলাদেশি আমেরিকানদের সমর্থন চাই।
Posted ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh