নিউইয়র্কের ম্যানহাটানে ৫০ সেন্টের জন্য দোকান কর্মচারিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করায় এক যুবকের বিরুদ্ধে এবং ৯ বছর বয়সী কন্যাকে পিটিয়ে হত্যা করার জন্য এক নারীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। প্রথম ঘটনাটি ঘটেছিল সাত মাস আগে ২০২১ সালের ১৯ অক্টোবর। ইস্ট হারলেমে সেকেন্ড এভিনিউয়ে ১০২ ইস্ট স্ট্রিটের কাছে কে এন্ড বি গুরমেট ডেলিতে এক ব্যক্তি প্রবেশ করে দোকানি তাকে ৫০ সেন্ট বাকিতে সিগারেট না দেওয়ায় প্রথমে দোকান কর্মচারিকে গুলি করার হুমকি দেয়। ক্রুদ্ধ ভঙ্গিতে দোকানের বাইরে গিয়ে জানালায় ঘুষি মারতে থাকে। দোকান কর্মচারি আহমেদ আলমোলিকি (৩৪) ও তার সম্পর্কিত ভাই জাকারিয়া হোসেন বাইরে বের হয়ে আসে এবং তাকে ধাওয়া করে। সারভেইলেন্স ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায় গাঢ় রঙের হুডি পরা ঘাতক আলমোলকিকে দুই দফা ছুরিকাঘাত করে দৌড়ে পালায়।

আহত আলমোলকি হাসপাতালে মারা যান। পুলিশ সন্দেহভাজন ঘাতককে খুঁজে ফিরছিল। গত ১৭ মে মঙ্গলবার পুলিশ তাকে স্ট্যাটেন আইল্যান্ড থোকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাঁর নাম ক্রিস্টিয়ান ডিয়াজ (২৫)। পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা ও অস্ত্র রাখার অভিযোগ এনেছে। ডিয়াজের আগে কোনো গ্রেফতারের রেকর্ড না থাকলে হারলেমের বেশ কিছু স্টোর মালিক ও কর্মচারিরা ডিয়াজকে কলহপ্রবণ ক্রেতা হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর খোঁজ দেওয়ার জন্য পুলিশ পুরস্কার ঘোষণা করেছিল এবং মেয়র এরিক অ্যাডামসও ব্যক্তিগতভাবে এক হাজার ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছিলেন। প্রথমে ডিয়াজকে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি সনাক্ত করেন এবং তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন যে ঘাতককে যথাযথ বিচারের মাধ্যমে শাস্তি প্রদান করা হলে তিনি পুরস্কারের অর্থ গ্রহণ করবেন।

মায়ের হাতে শিশু কন্যা খুন : গত ১৫ মে রোববার ব্রুকলিনের ক্রাউন হাইটসে নয় বছর বয়সী কন্যাকে হত্যা করার জন্য নিহতের মা শেমেন কাটোর (৪৮) বিরুদ্ধে কিংস কাউন্টি ক্রিমিনাল কোর্টে হত্যা, অস্ত্র রাখা ও শিশুর কল্যাণ বিপদগ্রস্থ করা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। পুলিশ জানিয়েছে গত ১৫ মে সকালে শ্যামন কাটো তার ৯ বছর বয়সী কন্যা শ্যালোম গুইফারোকে বৈদ্যুতিক তার ও ঝাড়ু দিয়ে প্রহার করতে থাকেন। তিনি তার বড় মেয়েকেও আঘাত করেন এবং প্রায় দুই ঘন্টা ধরে দু’জনকে আঘাত করেন। মায়ের মারধোর থেকে বাঁচতে ছোট মেয়ে শ্যালোম হামাগুড়ি দিয়ে বিছানার নিচে লুকায়। তার মা শেমেন কাটো কন্যা শ্যালোমকে বিছানার নিচ থেকে টেনে বের করার চেষ্টায় বিছানা উঁচু করে এবং সেটি ছেড়ে দিলে বিছানা পতিত হয় শ্যালোমের মাথার ওপর এবং মারা যায়। শেনেন তার কন্যার লাশ লুকিয়ে ফেলে। প্রতিবেশিরা লিঙ্কন প্লেসের কাছে দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশকে জানালে পুলিশ রোববার দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠায়। শ্যালোমের শরীরের সর্বত্র আঘাতের দাগ ছিল এবং ক্ষতস্থান দিয়ে রক্ত ঝরছিল। পুলিশ রোববার শেমেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায় এবং প্রাথমিক জিজ্ঞাসবাদের পর ছেড়ে দেয়। শ্যালোমের ময়না তদন্তের পর পুলিশ শেমেন কাটোকে সোমবার পুনরায় গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনে।