বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
নিউইয়র্কে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির সর্ববৃহৎ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার-জেএমসি। জ্যামাইকা হিলসের ১৬৮ স্ট্রিটে অবস্থিত এই প্রতিষ্ঠানকে ঘিরে স্থানীয়ভাবে বাংলাদেশী মুসলিম অভিবাসীদেরকে নিয়ে গড়ে উঠেছে বিশাল একটি প্রতিবেশ ও ব্যবসায় বাণিজ্য। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার ও এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনার জন্য প্রয়োজন হয় বড় ধরণের অর্থের। নিয়মিতভাবে মুসুল্লিরা মসজিদে দান করে থাকেন।
এছাড়া প্রতিবছর আনুষ্ঠানিকভাবে আয়োজন করা হয় একটি ফান্ড রেইজিং। আগামী ৭ সেপ্টেম্বর, শনিবার বিকেল সাড়ে ৬টায় অনুষ্ঠিত হবে এবারের ফান্ড রেইজিং। ম্যারিয়ট লাগোর্ডিয়া এয়ারপোর্ট হোটেলে অনুষ্ঠেয় এই ফান্ড রেইজিংকে কেন্দ্র করে চলছে ব্যাপক প্রচারণা। এবারের ফান্ড রেইজিংয়ের মূল উদ্দেশ্য হলো সেন্টারটির বর্ধিত প্রকল্প বাস্তবায়ন। এই প্রকল্প অনুযায়ী বর্তমান দ্বিতল ভবনকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। এজন্য নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসনের প্রয়োজনীয় অনুমোদন ইতোমধ্যেই নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের নকশাসহ অন্যান্য বিষয়দিও করা হয়েছে চূড়ান্ত। জেএমসি পরিচালনা কমিটি এ নিয়ে স্থানীয় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মুসুল্লিদের সাথে বেশ কয়েকদফায় বৈঠক করে চতুর্থ তলা পর্যন্ত বর্ধিত করার ব্যাপারে উপনীত হয়েছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে।
প্রস্তাবিত এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারবেন মূল ভবনটিতে। তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় আয়তন বাড়বে আরো ৫ হাজার ৬৫০ বর্গফুট । ফলে বর্তমান ৯ হাজার ৮৪০বর্গফুট মিলে মোট আয়তন দাঁড়াবে ১৫ হাজার ৪৩৪ বর্গফুট। বর্তমান দ্বিতীয় তলা থেকে হিফজ স্কুল তৃতীয় তলায় সরানো হলে সেখানে অতিরিক্ত আরো ১৮০জন মুসল্লির নামাজের স্থান সংকুলান হবে। এছাড়া প্রথম তলা থেকে অফিস স্টোরেজ সরালে আরো ৬০ জন মুসল্লির নামাজের জায়গা বাড়বে। বর্তমান ভবনের দুই রুমের মাঝের দেয়াল ভেঙ্গে মিম্বার নিয়ে আসা হবে মাঝামাঝি স্থানে। ইমামের অফিস স্থানান্তর করা হবে চতুর্থ তলায়। নতুন তৃতীয় এবং চতুর্থ তলা নির্মাণ কাজে আনুমানিক আড়াই মিলিয়ন ডলার ব্যয় হবে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায় ১৯৯২ সালে বর্তমান ঠিকানার প্রাইভেট বাড়িটি ভেঙ্গে জেএমসির নতুন ভবন নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্টিত হয় জেএমসির নতুন ভবন। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে জেএমসি ভবন তথা আল মামুর মসজিদ ভবনের ঘোষণা দেয়া হয়। ভবনটি নির্মাণে প্রায় এক মিলিয়ন ডলার খরচ হয়।
পরবর্তীতে ভবনটি দ্বিতল করা এবং পাশাপাশি আরো একটি প্রাইভেট হাউজ ক্রয় করে মসজিদ ভবনটির পরিধি বাড়ানো হয়। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে বিভিন্ন প্রকল্পঃ আল মামুর স্কুল, জামিয়া কোরানিয়া একাডেমী, উইকেন্ড ইসলামিক স্কুল, জেএমসি লাইব্রেরী।
উল্লেখ্য আগামী বছরগুলোতে বর্তমান সময়ের মতো মসজিদের বাইরে নামাজ পড়া সম্ভব হবে না শীতের কারণে। সবকিছু মিলিয়ে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির সংকুলানের জন্য নির্মিতব্য প্রকল্প বাস্তবায়নে মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। সাধারণ মুসল্লিদের অনুদানের অর্থে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। এজন্যই ৭ সেপ্টেম্বরের ফান্ড রেইজিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসন্ন ফান্ড রেইজিংয়ের পুরো অর্থ ব্যয় করা হবে নতুন প্রকল্পে। ব্যাপক প্রস্তুতিও চলছে ফান্ড রেইজিং সফল করতে। ফান্ড রেইজিংয়ে অংশগ্রহণকারীদের অনুন্য ২৫০(দুইশত পঞ্চাশ) ডলার অনুদান জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের অনুকুলে প্রদান করতে হবে বলে জানিয়েছে জেএমসি কর্তৃপক্ষ। জেএমসি পরিচালনা কমিটি ফান্ডরেইজিং সফল করতে আহ্বান জানিয়েছে সকলের প্রতি। বিশেষ করে অনুরোধ জানিয়েছেন অনলাইনে রেজিষ্ট্রেশন করতে।
ফান্ড রেইজিংয়ে মূল বক্তা থাকছেন শেখ হাসান আবু নার। অন্যান্য বক্তারা হলেন, ডাঃ জাকির আহমেদ, ইমাম আবু জাফর বেগ সেন্টারটির অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। ফান্ড রেইজিং সফল করতে জেএমসি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডাঃ নাজমূল খান, নির্বাহী কমিটির প্রেসিডেন্ট ডাঃ মাহমুদুর রহমান ও সেক্রেটারী আফতাব মান্নান সহ অন্যান্যদেরকে নিয়ে শক্তিশালী একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। যারা ৭ সেপ্টেম্বর ফান্ড রেইজিংয়ে অংশ নিতে পারবেন না। তারা জেএমসি’র অনুকুলে চেক প্রদান করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তাবৃন্দ। উল্লেখ্য জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পরিচালনাধীন আল মামুর স্কুল ছাড়াও রয়েছে হাফিজী মাদ্রাসা ও ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য নিয়মিত উইকেন্ড স্কুল। নূতন প্রজন্মের মাঝে ইসলামী শিক্ষার ধারা ও সংস্কৃতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে জেএমসি।
Posted ১১:৫৫ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৯ আগস্ট ২০২৪
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh