বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২১
নতুন করে করোনা ভাইরাসের বিস্তৃতির কারণে নিউইয়র্কে ভাড়া বাড়িতে বসবাসকারী ভাড়াটেরা ভাড়া পরিশোধে ব্যর্থ হলে বাড়ি মালিকরা যাতে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত তাদেরকে উচ্ছেদ করার প্রক্রিয়া শুরু না করা সংক্রান্ত আইন পাস করায় অনেক বাড়ি মালিক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আশঙ্কা করছেন যে, নিউইয়র্ক স্টেটের আইনসভায় প্রণীত আইনের অপব্যবহার করে এক শ্রেনির ভাড়াটে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ না করার সুযোগ গ্রহণ করবে এবং এর ফলে বাড়ি মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হবেন। বিশেষ করে দু ইবা তিন পরিবারের বাড়ি অথবা ছোট আকারের অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের মালিকরা বলছেন যে, ভাড়াটেদের আর্থিক সংকট বিবেচনায় রেখে অ্যালবেনি গত মাসে যে আইন প্রণয়ন করেছে, সে আইনের আওতা এত ব্যাপক যে, যারা কাজ করছেন এবং বাড়িভাড়া পরিশোধ করার সামর্থ রয়েছে, তারাও মরাটরিয়ামের মেয়াদে ভাড়া পরিশোধ না করার সুযোগ গ্রহণ করবে, এবং এর ফলে বাড়ি মালিকরা তাদের মর্টগেজ, ট্যাক্স, বিল পরিশোধে ব্যর্থ হবেন। বাস্তবে তাই ঘটছে বলে ডেইলি নিউজকে বলেছেন ব্রুকলিনের ব্রাউনসভিলে উনিশ ইউনিটের এক অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের মালিক শ্যারণ রেডহেড। তিনি বলেন, যারা তার বিল্ডিংয়ে বাস করছেন তাদের সহায়তা প্রয়োজন, কিন্তু সকলের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।
তার মতে, “যেসব ভাড়াটে বেকার তারা পূর্ণ বা আংশিক ভাড়া পরিশোধ করছেন, কিন্তু এমন ভাড়াটে আছেন যারা আদৌ ভাড়া পরিশোধ করছেন না। তিনি বলেন, “আমার বিল্ডিংয়ে এমন একজন ভাড়াটে ভদ্রমহিলা আছেন, যিনি ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে কোন ভাড়া দেননি। অথচ তিনি দুটি ক্যাটারিং ব্যবসা পরিচালনা করেন। আমি প্রতি সপ্তাহে তার বিএমডব্লিউ গাড়িতে ঘরে তৈরি বেকারি সামগ্রী নিয়ে যেতে দেখি এবং তার স্বামী একজন ইউনিয়নভূক্ত কর্মচারি।” গত সপ্তাহের ভাড়াটে উচ্ছেদ নিরোধ আইনের লক্ষ্য প্রধানত ভাড়াটেদের রক্ষা করা। অবশ্য আইনে ক্ষুদ্র বাড়ি মালিকদের সহায়তা দানের সুযোগও রাখা হয়েছে, যাতে ব্যাংকগুলো মর্টগেজ পরিশোধের ব্যর্থতায় বাড়ি ফোরক্লোজারে না নিতে পারে। কিন্তু এ আইনে সকল বাড়ি মালিকের সুবিধা হয়নি।
ব্রুকলিনের আরেক বাড়িমালিক ক্লঅরেন্স হ্যামের অভিযোগ করেছেন যে তার এক ভাড়াটে দীর্ঘদিন ভাড়া না পরিশোধ না করার কারণে তার কাছে পাওনার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৬ হাজার ডলার। তিনি যে শুধু ভাড়া পরিশোধ করেননি তাই নয়, বরং অবৈধভাবে একাধিক রুম অন্যদেরকে ভাড়া দিয়েছেন। কিন্তু আইন তার হাত পা বেঁধে রেখে, যে কারণে তিনি তাকে উচ্ছেদের জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে পারছেন না। এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হযেছেন অনেক বাড়ি মালিক।রেন্ট-স্ট্যাবিলাইজেশন এসোসিয়েশনের সভাপতি জোসেফ ষ্ট্রাসবার্গ বলেছেন যে, ভাড়াটে উচ্ছেদ না করার আইন চাপিয়ে দেয়ার কারণে ছোট বাড়ি মালিকরা সত্যিকার অর্থেই বিপদে পড়েছে। কারণ একদিকে তারা ভাড়ার আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, এবং মরাটরিয়াম শেষে যখন তারা হাউজিং আদালতে যাবেন আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে আরো কয়েক মাস লেগে যাবে। এ সময়ের মধ্যে তারা আরো অধিক পরিমাণ আয় থেকে বঞ্চিত হবেন, যা খুব সহজে কাটিয়ে উঠা বাড়ি মালিকদের পক্ষে সম্ভব হবে না। তিনি বলেন, বহু ভাড়াটে ফুলটাইম কাজ করছে তা সবাই জানে, কিন্তু তারা যে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করছে না, তা একমাত্র বাড়ি মালিক ছাড়া আর কেউ জানে না।
Posted ৬:৩২ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh