বুধবার, ১ মে ২০২৪ | ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

যুক্তরাষ্ট্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা

  |   বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

যুক্তরাষ্ট্রে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা

যুক্তরাষ্ট্রে সংবিধানের প্রথম সংশোধনীটি যদি মুক্ত গণমাধ্যমের নিশ্চয়তার অর্থে হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই মার্কিন সরকার গণমাধ্যমের তথ্যের গোপন উৎসগুলো বের করার জন্য সাংবাদিকদের ফোন ও ই-মেইল রেকর্ড জব্দ করতে পারে না। অথচ রেকর্ড বাজেয়াপ্তের এই অস্বস্তিকর কৌশলটি ওবামা ও ট্রাম্প উভয় প্রশাসনের আমলেই ঘন ঘন ব্যবহার হয়েছে। এটা তথ্য ফাঁসের বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টিকে সহজ করে দেয়; কিন্তু সাংবাদিকদের কাজ এবং নেতাদের জবাবদিহি করা কঠিন করে তোলে।

এটা বরং সরকারি গোপনীয়তা ও তথ্য নিয়ন্ত্রণের অভিসন্ধিকে তুলে ধরে, যা গণতন্ত্রের জন্য অভিশাপ। সুতরাং এটি একটি ভালো কাজ হয়েছে যে প্রেসিডেন্ট বাইডেন অবশ্যই এ বিষয়ে পরিবর্তন আনার একটি আদেশ দিয়েছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে ফেডারেল প্রসিকিউটররা শ্রেণিবদ্ধ তথ্য ফাঁসের তদন্তের কারণ দেখিয়ে সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্টের সাংবাদিকদের ফোন ও ই-মেইল রেকর্ড সংগ্রহ করেছিলেন-সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই ঘটনাগুলো উদঘাটনের পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন এ আদেশ দেন। জব্দকৃত রেকর্ডগুলোর মধ্যে শুধু কর্মক্ষেত্রের ফোন নম্বর ও ই-মেইল অ্যাকাউন্টের লগই ছিল না, সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত ই-মেইল অ্যাকাউন্ট ও বাসার ফোন নম্বরের লগও ছিল।


বাইডেন গত মাসে সাংবাদিকদের ই-মেইল ও ফোন রেকর্ড জব্দ করার বিষয়ে বলেছিলেন, ‘এটি একেবারেই ভুল। আমি তা হতে দেব না।’ কিন্তু তার পরও দ্য টাইমস গত সপ্তাহে এক প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৭ সালে প্রায় চার মাস সময় ধরে ট্রাম্পের বিচার বিভাগ গোপনে যে চারজন টাইমস সাংবাদিকের ফোন রেকর্ডও বাজেয়াপ্ত করেছিল, এর তদন্ত বাইডেন প্রশাসনের অধীনেও অব্যাহত ছিল।গল্পটির আরো খারাপ দিক রয়েছে। দ্য টাইমস জানিয়েছে, জনাব বাইডেনের বিচার বিভাগ টাইমস সাংবাদিকদের ই-মেইল লগও পেতে চেয়েছিল। কোনো লগ অবশ্য জব্দ করা না হলেও টাইমসের সিনিয়র এক্সিকিউটিভরা তিন মাস একটি শ্বাসরুদ্ধকর আদেশের অধীন ছিলেন। কারণ তাঁরা এবং আইনজীবীরা জব্দের আদেশের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

ফক্স নিউজ ও অ্যাসোসিয়েটড প্রেসের সাংবাদিকদের সঙ্গে ওবামা যুগের বিতর্কের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যমান নীতিটি হালনাগাদ করা হয়েছে, যা দৃশ্যত সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। তবে ডিজিটাল যুগ বিষয়টিকে আরো জটিল করে তুলেছে। কারণ সরকার যে রেকর্ডগুলো চেয়েছে তা প্রায় সব সময়ই তৃতীয় পক্ষের হাতে থাকে, যেমন-টেলিফোন এবং ইন্টারনেট কম্পানি, যারা ব্যবহারকারীর তথ্য সুরক্ষার বিষয়ে অন্যদের চেয়ে বেশি সচেষ্ট। এ ক্ষেত্রে টাইমসের ই-মেইল সিস্টেম পরিচালনাকারী কম্পানি গুগল সরকারি আদেশ ফিরিয়ে দিয়ে ঠিক কাজটিই করেছে। এ ক্ষেত্রে আরো ভালো নিয়ম-কানুনের জন্যই কংগ্রেসের উচিত সোর্স প্রকাশ করা থেকে সাংবাদিকদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আইন পাস করা। না হলে একটি মুক্ত সমাজ যেসব তথ্যের ওপর নির্ভর করে সেসবের অবাধ প্রবাহ বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যাবে। বেশির ভাগ রাজ্যে অবশ্য এই তথাকথিত সাংবাদিক সুরক্ষা আইন (শিল্ড ল) রয়েছে।


আর কিছু রাজ্য এ ধরনের আইনের পরিবর্তে শুধু সাংবাদিকদের বিশেষ অধিকার দিয়ে থাকে, যেখানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার তথ্যের উৎস তদন্তের ক্ষমতাও বহাল থাকে। তবে রাজ্য আইনে যা-ই হোক, তা ফেডারেল প্রসিকিউশনের জন্য প্রযোজ্য নয়।একটি ফেডারেল সাংবাদিক সুরক্ষা আইনের জন্য কংগ্রেসে উত্থাপন করা বিলগুলো সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয়ের কাছ থেকেই সমর্থন পেয়ে আসছে।

এখানে মূল দাবিটা হচ্ছে, সাংবাদিকদের পরিণতির বিবেচনা না করে তাঁদের সংবাদ প্রকাশের লাগাম আলগা করে দেওয়া নয়, বরং হুইসেল ব্লোয়ারদের মতো দুর্বল সোর্সগুলোকে রক্ষা করা, যাতে তারা শুধু সরকারে অসদাচরণ বা অন্যান্য অন্যায্য কর্মকাণ্ড প্রকাশ করতে পারে। এ ধরনের আইনের সুস্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা সত্ত্বেও তা পাস করার সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এ বিষয়ে আদালতের সর্বশেষ রায়টি হচ্ছে ১৯৭২ সালের। প্রায় অর্ধশতাব্দী আগের ওই রায়ে আদালত বলেছিলেন, সাংবাদিকরা তথ্য প্রকাশের বিপরীতে কোনো বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার অধিকারী নন এবং ফৌজদারি অপরাধের বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া উচিত। এর ফলে সাংবাদিকদের সুরক্ষার বিষয়ে অধস্তন ফেডারেল আদালতের রায় নিয়ে জগাখিচুড়ি তৈরি হয়েছে এবং আইনি ব্যবস্থা সম্পর্কে একটি সাধারণ বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে। উপসংহারটা হচ্ছে, আমেরিকার বর্তমান প্রশাসনের বিচার বিভাগ যত দূর সিদ্ধান্তই নিক না কেন, গণমাধ্যমের জন্য প্রথম সংশোধনীর দেওয়া সুরক্ষাও তত দূর প্রসারিত হবে। সুতরাং সংবিধান স্বীকৃত স্বাধীনতার পরিধি নির্বাহী শাখার দয়ায় হওয়া উচিত নয়।


advertisement

Posted ৭:২৮ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ জুন ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

কাঁঠাল সমাচার
কাঁঠাল সমাচার

(1405 বার পঠিত)

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.