বুধবার, ১৫ মে ২০২৪ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
সাত মাসে ঢুকেছে ২ লাখ ২৭ হাজার অভিবাসী

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আদম ব্যবসা

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আদম ব্যবসা

ছবি : সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে আদম পাচার এখন বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়ে পরিণত হয়েছে। পাচারকারীরা যে শুধু মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করতে ইচ্ছুক লোকজনকে সীমান্ত অতিক্রম করতে সহায়তা করছে তা নয়, সুযোগ বুঝে বহু দূরের দেশ থেকে আগতদের সর্বস্ব লুণ্ঠন এবং নিপীড়ন চালিয়ে তাদের অর্থ ও জিনিসপত্র কেড়ে নিচ্ছে। বিশেষ করে ক্যালিফোর্নিয়া ও টেক্সাস সীমান্ত জুড়ে আদম পাচারকারী চক্রগুলো এমন জাল বিছিয়ে বসেছে যে তাদের মাধ্যম ছাড়া কারও পক্ষে সীমান্ত অতিক্রম করাকে অসম্ভব করে তুলেছে। এ প্রক্রিয়া চলছে দীর্ঘদিন থেকে। এসব চক্র যুক্তরাষ্ট্রে সীমান্ত অতিক্রম করিয়ে দেওয়ার জন্য ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলো থেকে আগতদের কাছ থেকে মাথাপিছু ৪,০০০ ডলার এবং যদি এশিয়া, আফ্রিকা ও পূর্ব ইউরোপিয়ান দেশগুলোর হয়, তাহলে জনপ্রতি ২০,০০০ পর্যন্ত হয়ে থাকে বলে জানিয়েছেন জর্জ ম্যাসন ইউনিভার্সিটির পাচার বিষয়ক বিশেষজ্ঞ গোডালুপে কোরিয়া-ক্যাবেরা।

বছরের পর বছর ধরে আদম পাচারকারী ছোট চক্রগুলো, যারা বিভিন্ন দেশ থেকে অভিবাসী পাচারে লোকজনকে তাদের নিজস্ব এজেন্টদের মাধ্যমে প্রলুব্ধ করে, তারা যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তের ওপারে মেক্সিকোর বড় বড় পাচারকারী অপরাধী চক্রগুলোর কাছে জিম্মি এবং এই বৃহৎ চক্রগুলোকে বড় অংকের অর্থ না দিয়ে কোনো বিদেশিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করাতে পারে না। তারা যে শুধু আদম পাচার করে তা নয়, যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের সঙ্গেও তারা জড়িত। মাদক পাচার তাদের কাছে অধিক লাভজনক।


২০১৯ সালে ইউএস ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের ডেপুটি ডাইরেক্টর প্যাট্টিক লেসলিটনার কংগ্রেস কমিটিকে বলেছেন কিছু কিছু অপরাধী চক্র যুক্তরাষ্ট্রে আগমণ করতে ইচ্ছুক বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের পাচার করাকে অপ্রতিরোধ্য ও লাভজনক ব্যবসায়ে পরিণত করেছে। এই চক্রগুলো তাদের উপায় উপকরণে আধুনিক, তারা পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে, পাচারের রুটে তাদের নজরদারির ব্যবস্থার কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাত থেকে বাঁচতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তদন্ত ফলাফল অনুযায়ী ২০১৮ সালে সীমান্তে আদম পাচারের যে ব্যবসা ৫০০ মিলিয়ন ছিল, এখন তা আনুমানি ১৩ মিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আদম পাচার বিষয়ক গবেষকদের মতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আদম পাচার ব্যবসার পালে হাওয়া লেগেছে গত দশ বছর যাবত এবং ক্রমে তারা পুরো সীমান্তজুড়ে তাদের জাল বিছিয়ে ফেলেছে। তারা মেক্সিকোর কিছু ভয়াবহ ও সহিংস মাদক পাচারকারী চক্রের সঙ্গেও তারা জড়িত। গত মাসে স্যান অ্যানোনিওতে ট্রেইলার ট্রাকের মধ্যে ৫৩ জন মাইগ্রেন্টের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা আদম পাচারকারীদের নৃশংস পাচার নেটওয়ার্কের অংশ ছিল। এ ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র তার সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। কিন্তু তাতে কতটা ইতিবাচক ফল পাওয়া যাবে সে ব্যাপারে সন্দেহ রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের আশায় যারা বিভিন্ন দেশ থেকে এসে মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী শহরগুলোতে জড়ো হয়, সেখানেও তারা নিরাপদে থাকতে পারে না। স্থানীয় গুন্ডাদের চাঁদাবাজির শিকার হয় এবং নারী ধর্ষণ ও অপহরণের ব্যাপক ঘটনা ঘটনা। এখন এ ধরনের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তবর্তী সিটিগুলোতেও ঘটছে বলে ফেডারেল তদন্তকারী ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো রিপোর্ট করেছ্। আদম পাচারের অভিযোগে ফেডারেল কর্তৃপক্ষ ২০১৪ সালে ২,৭৬২ জনকে গ্রেফতার করেছিল, এখন গ্রেফতারকৃত আদমপাচারকারীর সংখ্যা ৫,০৪৬ জনের বেশি।


করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসন জনস্বাস্থ্য বিষয়ক টাইটেল ৪২ আরোপ করেছিল, যার আওতায় কেউ অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করলে তাকে অবিলম্বে সীমান্তের অপর পারে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। কিন্তু এসব বিদেশি করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হ্রাস পেলে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার আশায় মেক্সিকোর সীমান্তবর্তী শহরগুলোতেই অবস্থান করছিল। ২০২১ সালের শুরু থেকে সীমান্তে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের প্রবল ঢেউ শুরু হয় এবং ১৭ লাখ বিদেশি সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা চালায়। এই বিরাট সংখ্যা পাচারকারীদের জন্য রমরমা ব্যবসার সুযোগ এনে দিয়েছিল।

সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছে ২ লাখ ২৭ হাজার অভিবাসী : পানামা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০২৩ সালের এ পর্যন্ত যে সংখ্যক অভিবাসী পানামা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেছে, তা ২০২২ সালের সংখ্যার একেবারে কাছাকাছি চলে এসেছে। শীর্ষ কর্মকর্তা এ কথা জানিয়েছেন।পানামার নিরাপত্তামন্ত্রী জুয়ান ম্যানুয়েল পিনো সাংবাদিকদের বলেন, ২০২৩ সালের আজ পর্যন্ত পানামা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী অভিবাসীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ২৭ হাজার।


যে হারে লোকজন যাচ্ছে, তাতে চলতি মাসেই ২০২২ সালের রেকর্ড অতিক্রম হতে চলেছে। ২০২২ সালে পানামা হয়ে মোট দুই লাখ ৪৮ হাজার অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে আসে। পানামা ও কলম্বিয়াকে পৃথক করা কর্দমাক্ত জঙ্গল ড্যারিয়েন গ্যাপের একটি সীমান্ত চেকপয়েন্টে অভিবাসী অতিক্রম গণনা করা হয়। অভিবাসীরা পায়ে হেঁটে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে এ পথ ব্যবহার করে থাকে। পিনো বলেন, ২০২২ সালে যে সংখ্যক অভিবাসী পানামা হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গেছে, চলতি বছরের পাঁচ মাসেরও বেশি সময় বাকি থাকতেই প্রায় সে সংখ্যাতে পৌঁছে গেছে। তিনি বলেন, বর্তমানে যে হারে অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছে, সে হার বজায় থাকলে এ বছর দেশটির মধ্য দিয়ে যাওয়া অভিবাসীর সংখ্যা চার লাখে দাঁড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Posted ১২:৪১ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.