বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকীতে প্রতি বছরের মত এবারও ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে দোয়া মাহফিল ও তবারক বিতরণের আয়োজন করে জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী। তবে এবারের আয়োজন অতীতের সব আয়োজনকে ছাড়িয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধুর শাহাদত বার্ষিকী পালনের স্থান হিসাবে জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিট নিধর্ ারিত ছিল সারা দিন ।

এ জন্য অনুমতিও নেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের । দুপুরের পর নবান্ন রেস্টুরেন্টের সামনে বিশাল ডিজিটাল ব্যানার স্থাপন করে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ প্রচার করা হয়। বিকালে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসীর সভাপতি শাকিল মিয়া। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আল, নমির সঞ্চালনায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন অনুষ্ঠানের প্রধান পৃষ্ঠপোষক বারী হোম কেয়ারের প্রেসিডেন্ট ও সিইও আসেফ বারী টুটুল ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হাসিনা বারী মুনমুন, নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের এশিয়ান অ্যাডভাইজার ফাহাদ সোলায়মান, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক মীর নিজামুল হক, সদস্য সচিব সোহেল গাজী, অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান মামুন মিয়াজী প্রমুখ।

এরপর অনুষ্ঠিত হয় দোয়া-মাহফিল। দোয়া পরিচালনা করেন ইমাম কাজী কাইয়্যুম। এসময় ১৫ আগস্ট নিহতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়। দোয়া মাহফিল শেষে ৭৩ স্ট্রিটে দিনভর খাবার বিতরণ করা হয় শতশত মানুষের মধ্যে। একইসঙ্গে চলে একাত্তরের ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর মহাকাব্যিক ভাষণের সম্প্রচার। বিভিন্ন সময় মূলধারার জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। দল-নিরপেক্ষ এ আয়োজনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিস্মরণীয় নেতৃত্বের প্রশংসা করেন নিউইয়র্ক স্টেট এবং সিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা।

নিউইয়র্ক স্টেটের অ্যাসেম্বলিম্যান জেসিকা গঞ্জালেজ অনুষ্ঠানে এসে প্রদত্ত বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর আত্মার শান্তি কামনা করে বলেন, বাঙালি জাতিই শুধু নয়, গোটাবিশ্বের অবহেলিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির দিশারী ছিলেন তিনি।

নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলম্যান শেখর কৃষ্ণান বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে বলেন, স্বাধীনতার প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু ছিলেন আপোসহীন একজন নেতা। দীর্ঘ ত্যাগের সুমহান ইতিহাস রচনা করেছেন বঙ্গবন্ধু। যতদিন এ বিশ্বে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির অস্তিত্ব থাকবে ততদিনই বঙ্গবন্ধুর প্রতি মানুষ শ্রদ্ধায় অবনত হবে। নিউইয়র্ক সিটি মেয়রের এশিয়ান অ্যাডভাইজার ফাহাদ সোলায়মান বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। এজন্যে চিরদিন তাকে শ্রদ্ধা জানাবো। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে আরও অনেকের অবদান রয়েছে, তাদেরও সম্মান জানাতে হবে।

বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আসেফ বারি টুটুল বলেন, জাতীয় নেতাদের সম্মান জানানো প্রতিটি বাঙালির ঈমানি দায়িত্ব।‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’ সভাপতি শাকিল মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক মো. আলম নমি জানান, প্রায় ৫ হাজার মানুষের মাঝে তবারক হিসাবে গরুর মাংস ভুনা, ভাত, পানির বোতল ও ডেজার্ট বিতরণ করা হয়। অমুসলিমদের জন্য ছিল খাসি ও মুরগীর মাংসের তরকারি।

উল্লেখ্য, এক যুগেরও অধিক সময় ধরে ১৫ আগস্ট এমন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’র ব্যানারে। এবারের এ আয়োজনে নেতৃত্ব দেন ‘জ্যাকসন হাইটস এলাকাবাসী’র সভাপতি সাকিল মিয়া, সেক্রেটারি মোহাম্মদ আলম নমী, আহ্বায়ক মীর নিজামুল হক, সদস্য-সচিব সোহেল গাজী। হোস্ট কমিটির পক্ষে আরও ছিলেন চেয়ারম্যান মামুন মিয়াজি, চেয়ারপার্সন বিপ্লব সাহা এবং কো-চেয়ারপার্সন সাখাওয়াত বিশ্বাস। পৃষ্ঠপোষকতায় ছিলেন জেবিবি-এর সভাপতি হারুন ভূইয়া এবং সেক্রেটারি ফাহাদ সোলায়মান, মহসিন ননী, রিয়েল এস্টেট ইনভেস্টর নুরুল আজিম, জেড আর চৌধুরী লিটু, আহসান হাবিব, যুগ্ম সদস্য-সচিব হাজী এনাম প্রমুখ।