বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১
করোনাকালে নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন এলাকায় ছুটে চলেছে হাঙ্গার ট্রাক। বিশেষ করে প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজের পর স্থানীয় মসজিদ গুলোর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় ট্রাকটিকে। ট্রাকটিকে ঘিরে মানুষের ভীড়। আর তাদের মাঝে গরম খাবার প্যাকেট ব্যাগে ঢুকিয়ে বিতরণ করছেন একদল তরুণ। প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে ঘন্টার পর ঘন্টা ধৈর্য্য ধরে তারা খাবার তুলে দিচ্ছেন মানুষের হাতে।
খাবার গ্রহীতাদের মধ্যে পথচারী সহ রয়েছে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ। আর এক কাজটি তারা করছেন করোনা মহামারির প্রথম ঢেউয়ের মাঝামাঝি সময় থেকে। সে সময়টায় এসব তরুণ গ্রোসারী সামগ্রীর বক্স পৌছে দিতেন অনেকের বাড়ীতে । জীবনে ঝুঁকি নিয়ে মানুষের সেবায় তারা নিয়োজিত করেন নিজেরদেরকে। এখনো করোনার দ্বিতীয় ঢেউকালে তারা এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
মানুষের হাতে গরম খাবার সময় মতো পৌছে দিতে তারা কিনেছেন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ট্রাক । যার ভেতর অনেকটা কিচেনের সুবিধা রয়েছে। শুধুমাত্র খাবার বিতরণের জন্য ক্রয় করা হয়েছে ট্রাকটি। এই ট্রাক ক্রয় এবং সমুদয় খাবার সরবরাহ করে থাকে নিউইয়র্ক সিটির বাংলাদেশী মালিকানাধীন লাইসেন্সড হোম কেয়ার এজেন্সী ডিএইচ কেয়ার। সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে ডিএইচ কেয়ার এই সেবামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। প্রতিষ্ঠানটির একদল তরুণ ও জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিল-২৪ এর ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী দিপ্তী শর্মা সহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ সহায়তা প্রদান করে আসছে এ মহতি কাজে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা প্রায়শই এই কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেও ডিএইচ কেয়ার হাঙ্গার ট্রাকের মাধ্যমে গত ১৫ জানুয়ারি, শুক্রবার দুপুরে জ্যামাইকার ইকনা মসজিদের সামনে খাবার বিতরণ করে। এসময় বিপুল সংখ্যক মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে খাবার সংগ্রহ করেন। খাবার ছাড়াও প্রতিটি ব্যাগে এক বাক্স মাস্ক দেয়া হয় প্রত্যেককে। আগামীতেও ট্রাক্স অব্যাহত রাখবে খাবার বিতরণ কার্যক্রম।
ডিএইচ কেয়ারের অন্যতম স্বত্বাধিকারী শাহারিয়ার রহমানের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠানটির একদল তরুণ এসব খাবার বিতরণ করেন। তাদেরকে বিশেষভাবে সহযোগিতা করেন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটির প্রেসিডেন্ট বিশিষ্ট কমিউনিটি এ্যাক্টিভিস্ট ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার। উল্লেখ্য নিউইয়র্ক সিটিতে মহামারি করোনাকালে শুধু বাংলাদেশী কুম্যনিটি নয় তাদের এ হাত প্রসারিত হয় করোনায় যারা সম্মুখ যুদ্ধে লড়ছেন সেসব স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিও। হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের চেম্বারে এসময় পৌছে দেয় তারা সাহায্য সামগ্রী। কম্যুনিটির বয়স্ক মানুষদের নিয়মিত সেবাদান করে আসছে ডিএইচ কেয়ার। করোনাকালে একদিনও ঘরে বসে থাকেনি তারা। “মানুষ মানুষের জন্য” এ শ্লোগান সামনে রেখে জীবনের মায়া পেছনে ফেলে রাস্তায় নেমে আসে।
নিউইয়র্কে করোনা মহামারীতে নিম্ন আয়ের মানুষদের পাশে দাঁড়িয়েছে ডিএইচ কেয়ার’র পরিচালকগণ। ডিএইচ কেয়ার পরবর্তীতে নিউইয়র্ক শহরের বিভিন্ন স্থানে ভ্রাম্যমান ফুডভেন্ডারের মাধ্যম হালাল খাবার বিতরণ অব্যাহত রাখে। এছাড়া বিভিন্ন হাসপাতালের সামনে তারা চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে খাবার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন হাসপাতালে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে খাবার সরবরাহ করা হয়েছে চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতি উৎসাহ প্রদানের লক্ষ্যে। ডিএইচ কেয়ার (উঐঈধৎব) বাংলাদেশী মালিকানাধীন একটি লাইসেন্স্্ড হোম কেয়ার এজেন্সী। জ্যামাইকার ১৭২-১৫ হিলসাইড এভিন্যুতে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়। এছাড়া রিগোপার্ক ও ওজোনপার্কে রয়েছে আরো দু’টি অফিস। ডিএইচ কেয়ার’র মূল কাজ হলো সিডিপ্যাপ’র মাধ্যমে বয়স্ক মানুষের সেবার সুযোগ সৃষ্টি করা। অত্যন্ত সুনামের সাথে একাজটি করছে ডিএইচ কেয়ার। প্রায় ৪০ জনের একটি টিম কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটির জন্য। ডিএইচ কেয়ার’র সাথে ৭১৮-৪৫৯-০১৮০ নাম্বারে যেকেউ যোগাযোগ করতে পারেন।
Posted ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ জানুয়ারি ২০২১
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh