শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

হিন্দু সম্প্রদায়ের সাংবাদিক সম্মেলনে মৌলবাদীদের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের অভিযোগ

নিউইয়র্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১

হিন্দু সম্প্রদায়ের সাংবাদিক সম্মেলনে মৌলবাদীদের সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের অভিযোগ

জ্যাকসন হাইটসের ওম শক্তি মন্দিরে গত ২২ অক্টোবর সন্ধ্যায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ শারদীয় দুর্গোৎসব চলাকালে বাংলাদেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপর মৌলবাদী ও উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের অভিযোগ এনে বাংলাদেশে অবিলম্বে ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনর্বহাল করে দেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানান। দীনেশ মজুমদার ও নিত্যানন্দ কিশোর ব্রক্ষ্মচারীর পরিচালনায় সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিষ্ণু ঘোষ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন অধ্যাপক নবেন্দু বিকাশ দত্ত, শিতাংশু গুহ. ড. দ্বীজেন ভট্রাচায্য, বিদ্যুৎ সরকার, ভজন সরকার, ডা প্রভাত দাশ, বিষ্ণু গোপ প্রমুখ।

সাংবাদিক সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয় যে, দুর্গোৎসব চলাকালে দেশের ছাব্বিশটি জেলায় সুপরিকল্পিতভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর একটানা ছ’দিন ব্যাপী বীভৎস সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। সন্ত্রাসীরা গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীরপাড় পূজামণ্ডপে হংস্র অক্রমণ দিয়ে শুরু করে নোয়াখালীর ইসকন মন্দির, চৌমুহনী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং ১৮ই অক্টোবর পীরগঞ্জের জেলে পল্লী ভষ্মীভূত করা পর্যন্ত খুন,যখম, নারী ও শিশু ধর্ষণ, মন্দির ও দেব-দেবীর প্রতিমা ভাঙচুর, বাড়িঘর ও ব্যবসা লুটপাট করে অগ্নি সংযোগ করার যে নারকীয় তাণ্ডব চালিয়েছে সেটা ১৯৪৬-এর অক্টোবরে নোয়াখালীতে, ১৯৬৪ সালে খুলনা, ঢাকা ও দেশের অন্যার‌্য অঞ্চলে, ১৯৭১ সালে, ১৯৯২ সালে, ২০০১ থেকে ২০০৫ সালে সারা দেশে,২০১২-’১৩ সালে রামুতে, এবং তৎপরবর্তীকালে নাসির নগর, সাঁথিয়া, শাল্লা, মুরাদনগর প্রভৃতি স্থানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি বর্বরতার ভয়াবহ স্মৃতি স্মরণ করিয়ে দেয়। ছয় দিনে ধর্মীয় মৌলবাদী ও সন্ত্রাসীরা নোয়াখালীর ইসকন মন্দির সহ দেশের সহ বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপের পুরোহিত ও ভক্ত সহ সাত জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে, তিনজন মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে,পূজামন্ডপ, প্রতিমা ধ্বংস করছে, ১০০র মত হিন্দু বাড়ীঘর লুটপাট করে ভষ্মীভূত করেছে। ওই ধর্মবাজদের ধর্ষনের পৈশাচিকতায় প্রাণ হারিয়েছে একটি দশ বছরের নাবালিকা, মারা গেছেন নানুয়ার দিঘীর পাড়ে আক্রমণের শিকার একজন,আরও কতজন মারা যাবেন সেটা এখনও বলা যায়না। গৃহহীন অবস্থায় শত শত হিন্দু পরিবার সম্ভাব্য অগামী আক্রমণের আশঙ্কায় দিশেহারা।


হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর এই নৃশংস সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসী হামলার রিপোর্ট করেছে নিউ ইয়র্ক টাইমস ও গার্ডিয়ান সহ অসংখ্য দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যম, প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সভ্য দেশের দূতাবাস, ইউনাইটেড নেশনস এবং হিউমেন রাইটস ওয়াচ সহ অনেক মানবাধিকার সংস্থা। এবারকার নৃশংসতার অজুহাত তৈরি করা হয়েছে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন অবমাননার নাটক সাজিয়ে, যেমনটা অতীতেও করা হয়েছে। ধর্ম অবমাননার জিগির তুলে হিন্দুদের উপর পরিকল্পিত এই জঙ্গী সন্ত্রাসী হামলা বাংলাদেশে এখন রুটিন ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর উদ্দেশ্য, বাংলাদেশকে অমুসলমান শূন্য করা।

লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় যে সংখ্যালঘু নির্যাতকদের কোন দিনই বিচার ও শাস্তি হয়নি। সাহাবুদ্দিন কমিশন রিপোর্টে চিহ্নিত কয়েক হাজার সংখ্যালঘু নির্যাতকদের একজনেরও বিচার হচ্ছে না? আশ্চর্যের ব্যাপার, বরাবরের মতই গত ক’দিনের হামলার জন্য হাজার হাজার ধর্মীয় মৌলবাদী ও জঙ্গী প্রস্তুতি নিল কিন্তু ট্রেনিং প্রাপ্ত গোয়েন্দা বিভাগ বা আইন রক্ষাকারী সংস্থাগুলো কিছুই আঁচ করতে পারল না, সেটা কি করে হয় ! সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা বিধানে সরকারের অনীহা এবং বিচারহীনতার সরকারী নীতির কারণেই হিন্দুদের উপর সাম্প্রদায়িক এই হামলা নিরন্তরভাবে চলছে। কোন কোন সরকার প্রত্যক্ষভাবে,আর কোন কোন সরকার তাদের বিচার না করার মাধ্যমে পরোক্ষভাবে এই বর্বরতাকে সমর্থন করে সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগে বাধ্য করছে। সংখ্যালঘুদের উপর নিরন্তর সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনাবলীর প্রেক্ষাপটে “বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল উদাহরণ” বলে যে সরকারী দাবী সেটা আজ বিশ্বের সভ্য সমাজকে বিশ্বাস করানো কঠিন হয়ে পড়েছে।


সাংবাদিক সম্মেলনে অবিলম্বে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে অপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান, মৌলবাদী-সন্ত্রাসীদের হাতে হতাহত, গৃহহীন সংখ্যালঘু পরিবারসমূহকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ ও বাসস্থান পুনর্ণিমাণের ব্যবস্থা এবং নিহতদের পরিবারগুলোর থেকে একজন করে সরকারী চাকরি দিয়ে তাঁদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থা করা, আহতদের বিনা খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত, বিধ্বস্ত, ও ধ্বংসপ্রাপ্ত সকল মন্দির ও মণ্ডপসমূহ পুনর্ণিমান করার ব্যবস্থা করা, বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে সাম্প্রতিক ঘটনা সহ অতীতের সকল সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনাবলীর একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা, অবিলম্বে সংখ্যালঘু কমিশন, হিন্দু, বৌদ্ধ, ও খ্রিষ্টান ফাউণ্ডেশন, ও একটি সংখ্যালঘু মন্ত্রনালা গঠন করা হোক; এবং একটি হেইট স্পীচ -ক্রাইম আইন ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণান করা হোক ও অবিলম্বে ১৯৭২-সালের সংবিধান পুনর্বহাল করে দেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য অবশ্য প্রয়োজনীয় প্রথম পদক্ষেপটি গ্রহন করার দাবী জানান হয়।


advertisement

Posted ৩:১৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৮ অক্টোবর ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.