বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০
অর্থনৈতিক মন্দা ও করোনা ভীতির মাঝেও গাড়ি বিক্রি বেড়েছে হিলসাইড হোন্ডায়। নূতন ইমিগ্র্যান্ট ও ওয়ার্ক পারমিটধারীদেরকে দেয়া হয়েছে বিশেষ সুযোগ। ক্রেডিট স্কোরের বালাই না থাকায় এই শ্রেনীর ক্রেতারা গাড়ি কিনতে ভীড় করছেন হিলসাইড হোন্ডায়। করোনা ভাইরাস মহামারিকালে বিপর্যস্থ হয়ে পড়ে নিউইয়র্কের জনজীবন । লক ডাউনের সাথে সাথে থমকে যায় ব্যবসায় বাণিজ্য। টানা তিন মাসের অধিক সময় ঘরবন্দী থাকে মানুষ। এখনো নূতন স্বাভাবিকতা অপেক্ষামান সবকিছু। কিন্তু জীবন তো থেমে নেই। নিউইয়র্ক সিটিতে চলমান জীবন মানেই চার চাকার যান। যত মানুষ তত গাড়ী। তাই করোনা পরবর্তী সময়ে নূতন করে চলার শুরুতেই ধূম পড়েছে গাড়ি কেনার। যাদের আগে গাড়ি ছিলো না তারা এখন কিনছেন নূতন গাড়ি। অনেকে আবার লীজ নিচ্ছেন। গাড়ী কেনার দৌড়ে পিছিয়ে নেই নিউইয়র্কবাসী বাংলাদেশীরাও। তাই তারা ভীড় করছেন গাড়ির দোকানে।
বিশেষ করে জ্যামাইকার হিল সাইড হোন্ডায়। বাংলাদেশীদের অত্যন্ত পছন্দের হিলসাইড হোন্ডার শোরুম। জ্যামাইকা ১৩৯-০৭ হিলসাইড এভিন্যুর চমৎকার এ লোকেশনের প্রতি কুইন্স, ব্রুকলীন ও ব্রঙ্কসের বাংলাদেশীদের রয়েছে বিশেষ আকর্ষন। হিলসাইড হোন্ডায় কর্মরত অভিজ্ঞ ফাইন্যান্স পরিচালক, সেলস ম্যানেজার ও একদল স্মার্ট সেলসম্যান রয়েছে বাংলাদেশী যারা গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে আসছেন বরাবর। এসব কর্মকর্তার উপর বাংলাদেশী গ্রাহকদের রয়েছে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস। গাড়ি ক্রয়ের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। কোন ক্রেতাই এক্ষেত্রে চান না প্রতারিত হতে। আর এসব কারণেই তারা ছুটে যান হিলসাইড হোন্ডায় স্বদেশীদের কাছে। তাছাড়া একই লোকেশনে দীর্ঘদিন ধরে সততার সাথে ব্যবসায় করে আসছে হিলসাইড হোন্ডা।
এই প্রতিষ্ঠানে দু’দশকের অধিক সময় ধরে কর্মরত কম্যুনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ রায়হান জামান যিনি প্রতিষ্ঠানটির ফাইন্যান্স ডাইরেক্টর। করোনাকালে হাতে গুনা দু’চারটি ব্যবসায় ছাড়া সবকিছুতেই যখন মন্দাবস্থা তখন গাড়ি বিক্রি কিভাবে বাড়ছে। এমন প্রশ্নের জবাবে রায়হান জামান বলেন, নানাবিধ কারণেই করোনাকালে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে।
শুধু হোন্ডা নয় সব গাড়ির বাজারই এখন রমরমা। গাড়ির দামও এখন অনেক বেশী আগের তুলনায়। তারপরও মানুষ গাড়ি কিনছে। গাড়ি ক্রয়ের হার বেড়েছে বাংলাদেশী পরিবারেও। যেহেতু বাংলাদেশী কম্যুনিটিতে হিলসাইড হোন্ডা একটি বিশ্বস্থ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত তাই আমাদের শো রুমে আসছেন তারা। আর আমরাও তাদেরকে দিচ্ছি নূতন নূতন সুযোগ সুবিধা। তার মতে অনেক পরিবার আগে পাবলিক পরিবহন ব্যবহার করতো। করোনার কারণে এখন তারা পাবলিক পরিবহন পরিহার করছে। আগ্রহী হয়ে উঠেছে গাড়ি কেনার প্রতি। আবার অনেক পরিবারে একাধিক ব্যক্তি বেকার ভাতা পাচ্ছেন। এককালীন প্রাপ্ত এ অর্থ কাজে লাগাতে গাড়ি ক্রয় করছেন বা লীজ নিচ্ছেন। আবার নূতন ইমিগ্র্যান্ট যাদের কোন ক্রেডিট রেকর্ড নেই তাদেরকেও বিশেষ সুযোগ দেয়া হচ্ছে গাড়ি ক্রয়ের ক্ষেত্রে। এমনকি শুধুমাত্র ওয়ার্ক পারমিট আছে এমন ব্যক্তিরাও গাড়ি কিনতে পারছেন অনায়াসে। আমরা তাদেরকে সেব্যবস্থা করে দিচ্ছি।
গাড়ির চাহিদা সম্পর্কে রায়হান জামান বলেন, করোনাকালে প্রথম তিন মাস গাড়ি প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ছিলো সম্পুর্ন বন্ধ। এসময়টা গাড়ি তৈরি না হওয়ায় চাহিদার তুলনায় বাজারে গাড়ির সংখ্যা খুবই কম। এছাড়া গাড়ি থাকলেও অন্যান্য খুচরা অংশের প্রভাব প্রকট। চীনের তৈরী যন্ত্রাংশ এখানো বাজারে পর্যাপ্ত পরিমানে পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে বাজারে তৈরী গাড়ির অভাব রয়েছে চাহিদার অনুপাতে। ফলে গাড়ির চাহিদা যেমন বেড়েছে তেমনি পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গাড়ির মূল্য। এদিকে থেকে হিলসাইড হোন্ডা অনেকটাই ভালো অবস্থানে আছে বলে জানান অভিজ্ঞ কর্মকর্তা। হিলসাইড হোন্ডার ওয়্যার হাউজে বিপুল সংখ্যক গাড়ি মওজুত থাকায় প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়িক দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। বাংলাদেশী গ্রাহকদেরকে হিলসাইড হোন্ডার সেবা গ্রহণের আহ্বান জানান রায়হান জামান।
হিলসাইড হোন্ডার অপর কর্মকর্তা সেলস ম্যানেজার মোহাম্মদ জন চৌধুরী। প্রায় দু’দশক ধরে অত্যন্ত সুনামের সাথে কাজ করছেন প্রতিষ্ঠানটিতে। তিনি বলেন, হিলসাইড হোন্ডা শুধু একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানই নয়। এটি এখন মানুষের সেবায় এগিয়ে এসেছে। হিলসাইড হোন্ডা সত্যিকারার্থে দুঃসময়ের বন্ধু বলে মন্তব্য করেন তিনি। মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, নানাবিধ কারণে যারা গাড়ি কেনার সাহস করেননি এতোদিন অথবা গাড়ি ক্রয়ের জন্য যোগ্য বিবেচিত হননি তারাও এখন গাড়ি কিনতে পারছেন হিলসাইড হোন্ডা থেকে। লীজ নিতে পারছেন উবারের জন্য। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ওয়ার্ক পারমিট থাকাটাই যথেষ্ট। কোন ধরণের ক্রেডিট স্কোরের প্রয়োজন নেই। এছাড়া ফাইন্যান্সের ক্ষেত্রে কোন ধরণের সমস্যা থাকলে তা সমাধানেরও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা রয়েছে হিলসাইড হোন্ডায়। বিভিন্ন মডেলের গাড়ি সরবরাহ করার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা থাকায় দূর দূরান্ত থেকে অনেক গ্রাহক হিলসাইড হোন্ডায় আসছেন বলে জানান মোহাম্মদ চৌধুরী। শুধু নূতন গাড়ি বিক্রিই নয় এখানে অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান দ্বারা রয়েছে গাড়ি মেরামত করার জন্য সুব্যবস্থা আছে পার্টসের দোকান। মোট কথা গাড়ি ক্রয় করার পরও গ্রাহকরা নিশ্চিত থাকতে পারেন তাদের সেবার বিষয়টি নিয়ে। হিলসাইড হোন্ডার আমন্ত্রণ জানান মোহাম্মদ চৌধুরী। এজন্য সপ্তাহে ৭দিনই খোলা থাকে হিলসাইড হোন্ডা।
Posted ৯:৪১ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৭ আগস্ট ২০২০
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh