সোমবার, ৬ মে ২০২৪ | ২৩ বৈশাখ ১৪৩১

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

হোয়াইট হাউজের সামনে প্রবাসী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ

নিউইয়র্ক :   |   বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১

হোয়াইট হাউজের সামনে প্রবাসী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ

হোয়াইট হাউজের সামনে প্রবাসী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিক্ষোভ

বাংলাদেশে হিন্দুদের বাড়ি, মন্দির ও মণ্ডপে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে হোয়াইট হাউজের সামনে পেনসেলভেনিয়া এভিনিউতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছে প্রবাসী বাংলাদেশী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান কমিউনিটি তথা সর্বস্তরের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়। ‘ইউনাটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’র ব্যানারে গত ১৯ নভেম্বর শুক্রবার আয়োজিত এই সমাবেশে নিউইয়র্ক সহ বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের সর্বস্তরের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসহ আদিবাসী সম্প্রদায়ের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। তাদের সাথে শিশু-কিশোর-কিশোরীও ছিলেন। এসময় তারা বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় পতাকা সহ বিভিন্ন দাবী-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার, পোষ্টার, প্লেকার্ড বহন করে। সমাবেশ থেকে হিন্দুসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন ও পুলিশী হয়রানি বন্ধের দাবি জানানো হয়। সমাবেশ চলাকালীন সময়ে সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা হোয়াইট হাউস, ষ্টেট ডিপার্টমেন্ট, বাংলাদেশ ও ভারতীয় দূতাবাসে পৃথক পৃথক স্বারকলিপি প্রদান করেন বলে জানানো হয়েছে।

‘ইউনাটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’-এর প্রতিনিধি দলের অন্যতম নেতা শিতাংশু গুহ জানান, প্রথমে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের ডেপুটি চীফ অব মিশন মিজ ফেরদৌসী শাহরিয়ার ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাবিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবরে লিখিত স্মারকলিপি প্রদান করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের ষ্টেট ডিপার্টমেন্টের দুই বিভাগের দু’জন পরিচালক যথাক্রমে মি. স্কট আরবাম ও মিস মরীণ হ্যাগার্ডের সাথে সাক্ষাৎ করে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. ব্লিঙ্কেন বরাবরে অপর একটি স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। এছাড়াও ভারতীয় দূতাবাসে গিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বরাবরে আরো একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। প্রতিনিধি দলের সদস্যদেও মধ্যে ছিলেন সমাবেশের মূল উদ্যোক্তা এবং ‘ইউনাটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’-এর সমন্বয়কারী শ্রীমান নিত্যানন্দ কিশোর দাস ব্রক্ষাচারী, অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, শিতাংশু গুহ, রূপকুমার ভৌমিক, প্রিয়লাল কর্মকার, ভজন সরকার, রামদাস ঘরামী, এন্থনী পিয়াস গোেেমজ, প্রদীপ মালাকার ও জীবক বড়ুয়া।


সম্প্রতি কুমিল্লায় একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন পাওয়ার পর ওই ঘটনার জের ধরে ঢাকা, কুমিল্লা, ফেনি, কিশোরগঞ্জ, রংপুর, চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দির ও পূজামণ্ডপে হামলার প্রতিবাদে আয়োজিত এই সমাবেশে নিউইয়র্ক ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী, পেনসিলভানিয়া, কানেকটিকাট, ম্যাসাচুসেটস, ম্যারিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া এবং ওয়াশিংটন ডিসির প্রবাসী হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানসহ আদিবাসী সম্প্রদায়ের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন। নিউইয়র্ক সিটির বিভিন্ন স্থান থেকে ১৩টি বাস এবং ৩০টির মতো প্রাইভেট গাড়ীতে প্রায় ৮০০ প্রবাসী অংশ নেন এই সমাবেশে-এমন দাবী সংশ্লিস্টদের। বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই সমাবেশ চলে।

সমাবেশে তারা আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা ছাড়াও বিভিন্ন শ্লোগান সহ তাদের দাবী-দাওয়া সম্বলিত নানা শ্লোগানে হোয়াইট হাউস এলাকা মুখরিত করে তোলেন। তারা ঢাক-ঢোল আর শাখা বাজিয়ে খন্ড খন্ড মিছিলও করেন। সমাবেশকারীরা ‘ইউনাটেড হিন্দুস অব ইউএসএ’ এর ব্যানার ছাড়াও বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, সর্বজনীন পূজা উদযাপন পরিষদ ইউএসএ, আমেরিকান বাংলাদেশী হিন্দু ফাউন্ডেশন ইউএসএ, ব্রঙ্কস পূজা কমিটি ইনক, বাংলাদেশ পূজা সমিতি অব নিউইয়র্ক, শ্রীদ্ভগবত গীতা সংঘ ইন্ক ইউএসএ, বাংলাদেশ বুদ্ধিষ্ট কমিউনিটি ইনক, রামকৃষ্ণ সেবা সংঘ ইউএসএ, বেদান্তা এসোসিয়েশন নিউইয়র্ক ইনক, হরিচাঁদ গুরু চাঁদ ইন্টারন্যাশনাল মিশন ইনক, শ্রীকৃষ্ণ ভক্ত সংঘ ইউএসএ, গুরু চক্র পরিবার ইউএসএ ইনক প্রভৃতি ব্যানারে অংশ নেন। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ ছাড়াও ব্যানার-ফেস্টুনে তাদের শ্লোগান ও দাবী-দাওয়ার মধ্যে ছিলো- ‘হিন্দু লাইভস মেটার ইন বাংলাদেশ’, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সহ সকল সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের উপর ধর্মীয় নির্যাতন আইন করে বন্ধ করো’, ‘সেভ হিন্দুস, সেভ টেম্পল ইন বাংলাদেশ’, ‘স্টপ কিলিং’, ‘এনাফ ইজ এনাফ ডোন্ট কিল হিন্দুস ইন বাংলাদেশ’, ‘লায়ার ড. মোমেন’ প্রভৃতি।


সমাবেশে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদ ইউএসএ’র সভাপতি নবেন্দু বিকাশ দত্ত ও সুবীর বড়ুয়া, মানবাধিকার নেতা শিতাংশু গুহ সহ নিত্যানন্দ কিশোর দাস, ডা. প্রভাষ দাস, বিদ্যুৎ সরকার, শ্যামল ধর, ভজন সরকার, দীনেশ মজুমদার, শুভ রায়, গোপাল সাহা, রনজিৎ রায়, রুপকুমার ভৌমিক, ভবতোষ মিত্র, গোবিন্দ জি বানিয়া, প্রিয়লাল কর্মকার, রামদা ঘরানি, প্রদীপ মালাকার, আশিষ ভৌমিক, প্রবীর রায়, বিষ্ণু গোপ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সমাবেশে অংশগ্রহণকারী উল্লেখযোগ্য অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে ইসককন জিবিসি ইউএসএ’র অনুত্তম দাস, ডা. সমীর সরকার, স্বামী দেবপ্রিয় নন্দগিরী, গোবিন্দজী বানিয়া, ডা. নিহার সরকার, সুশীল সিনহা, প্রাণেশ হালদার, রঞ্জিত সাহা, সুভাষ সাহা, পিয়াস সেন মুন, অজিত চন্দ, কুমার বণিক, উমেশ পাল, প্রিয়তোষ দে, উত্তম সাহা, প্রদীপ ভট্টাচার্য, বিপ্লব শীল, প্রদীপ ঘোষ, শম্পা বণিক, দেবাশিষ সাহা, ঝলক রায়, চম্পা সরকার, হিমান রায়, সবিতা দাস, রবীন্দ্র পাল, প্রদীপ সূত্রধর, নারায়ণ রায়, নিতাই দেবনাথ, অরুণ বিকাশ পাল, গোপাল সাহা, রতন কুমার দাস, রাম দেবনাথ, নতুন প্রজন্মেও রিু রায়, অন্তরা দাস, নিকিতা, প্রিন্সেস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। বিশ্বে বাংলাদেশের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়েছে, সংখ্যালঘুদের রক্ষায় জাতিসংঘ বিবৃতি দিয়েছে। এমন বাংলাদেশ আমরা কখনই চাইনি। এই বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাংলাদেশ নয়।

বক্তারা বলেন, ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার বীজ বপন করেছিলেন। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান-এসব পরিচয়ের থেকেও আমাদের বড় পরিচয় হচ্ছে আমরা বাংলাদেশের মানুষ। আমরা ১৯৪৭-এর দেশভাগের সময় দেশ ত্যাগ করিনি, একাত্তুরেও দেশ ছেড়ে যাইনি। বাংলাদেশ আমাদের দেশ, কেনই বা আমাদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বক্তারা বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের অতি সাম্প্রতিক একটি বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে তারা ড. মোমেনের পদত্যাগ দাবি করেন এবং তাদের দাবী-দাওয়া পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এছাড়াও সমাবেশে বক্তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন আজ অবধি, অব্যাহত থাকার পেছনে তিনটি কারণ সনাক্ত করেন। এক, ক্ষমতায় যাওয়া ও থাকার স্বার্থে প্রতিটি রাজনৈতিক দলের স্বাধীনতাবিরোধী ধর্মীয় মৌলবাদী ও উগ্রপন্থী চক্রের সঙ্গে বিভিন্ন রকমের অশুভ, অনৈতিক ছাড়দিয়ে অঁতাত করা, দ্বিতীয়ত, কোন দিনই কোন সংখ্যালঘু নির্যাতকের বিচার না করে সহিংসতার মাধ্যমে অমুসলমানদের দেব-দেবী, উপাসনালয়, বাড়িঘর, দোকানপাট ধ্বংস করে, সহায় সম্পত্তি দখল করে, তাদের নারী ধর্ষণ করে, তাদেও বলপূর্বক ধর্মান্তরিত করে, দেশত্যাগে বাধ্য করে, প্রয়োজনে হত্যা কওে দেশটিকে সংখ্যালঘু শূণ্য করতে প্রশ্রয় দেয়া এবং, তৃতীয়ত, সালাফী-মওদুদী ইসলাম, অর্থাৎ আই.এস. ব্র্যান্ডের ইসলামের বিস্তাওে সহায়তা করা। সমাবেশে বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উল্লেখিত সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধানকল্পে ১৯৭২ সালের সংবিধানপুন: প্রতিষ্ঠা কওে দেশে সেকুলার ডেমোক্র্যাসির ভিত মজবুত এবং অবিলম্বে একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে জজ সাহাবুদ্দীন কমিশন রিপোর্ট গেজেট আকারে প্রকাশ করে, সেই তালিকা ধরে সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার প্রক্রিয়া তড়ান্বিত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। সমাবেশ থেকে ঘোষণা দেয়া হয় যে, যতদিন পর্যন্ত বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ না হবে এবং প্রতিটি সংখ্যালঘু নির্যাতককে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না দেয়া হবে ততদিন পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যহত থাকবে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ইউএনএ

advertisement

Posted ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

advertisement
advertisement
advertisement

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

85-59 168 Street, Jamaica, NY 11432

Tel: 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.