বাংলাদেশ রিপোর্ট : | বৃহস্পতিবার, ০৫ মে ২০২২
নিউইয়র্কের মুসলিম কমিউনিটিতে হঠাৎ করেই চালু হয়েছে চাঁদরাত উদযাপন সংস্কৃতি। বিশেষ করে সিটির বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা ও ব্রঙ্কসে। শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেলে ঈদুল ফিতরের আগের রাতে এখন ঘটা করে উদযাপন করা হচ্ছে চাঁদরাত। কয়েক বছর আগেও এমনটি দেখা যায়নি। চাঁদ রাতে আগে মুসলিম তরুণীদেরকে রাস্তায় টেবিল ফেলে অন্যদেরকে মেহেদী লাগাতে দেখা গেছে। কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে মাইক লাগিয়ে ভিন্ন মাত্রার গান বাজনা করতে দেখা যায়নি। শুধু তাই নয় মধ্যরাত পর্যন্ত চলমান এ উৎসব ইসলামী রীতি নীতি ও ভাবধারার সাথে কতোটা সঙ্গতিপূর্ণ তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে রমজানের এক মাস সিয়াম সাধনার শেষে ঈদুল ফিতরের পূর্ব রাত্রে এ ধরণের গান বাজনা করা অনইসলামিক বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় আলেম সমাজ ও ইসলামি চিন্তাবিদগণ। ইমামগণ এবার বিভিন্ন মসজিদে প্রকাশ্যে অভিভাবকদেরকে অনুরোধ করেছেন তারা এবং তাদের সন্তানরা যাতে চাঁদরাতের উৎসবে অংশগ্রহণ না করেন।
আলেমগণ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন চাঁদরাত সংস্কৃতি নিয়ে। তাদের মতে ইসলামি বিধানে চাঁদরাতের কোন উল্লেখ্য নেই। ফলে ফলে চাঁদরাত উৎসব নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। এ প্রসঙ্গে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের ইমাম মাওলানা মির্জা আবু জাফর বেগ বলেন, চাঁদরাতের নামে এধরণের উৎসব উদযাপন মুসলিমদের জন্য সম্পূর্ণ হারাম। ঈদের পূর্ব রাত বরকতের। দোয়া ও মাগফেরাতের রাত। এ রাতে দোয়া কবুল হয়। তাই এ ধরণের অনুষ্ঠান মুসলমানদের বর্জন করা উচিত।
তারপরও নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা ও ব্রঙ্কসে অনুষ্ঠিত হয়েছে চাঁদরাত উৎসব। মধ্যরাত পর্যন্ত চলেছে গান বাজনা ও আতশবাজি। চাঁন্দরাত উর্দু শব্দ। চাঁদরাত মূলত উদযাপন করে আসছে পাকিস্তান ও ভারতীয় মুসলমানরা। তবে অবশ্যই রাস্তা বন্ধ করে মাইক লাগিয়ে বাহারি গান গেয়ে নয়। আকাশে চাঁদ উঠলে ঈদের পূর্ব রাত্রে এসব অঞ্চলের মুসলিম পরিবারগুলোর মেয়েরা মেহেদি লাগানো সহ পারস্পরিক উপহার বিনিময় করে। চলে মিষ্টান্ন সহ বিভিন্ন ধরণের খাবারের আয়োজন। এখনো এসব পরিবারে এ ধরণের রেওয়াজ বিদ্যমান। রমজানের ধর্মীয় ভাব গাম্ভীর্য অনুসরণ করেই চলে তাদের উৎসব।
সম্প্রতি বাংলাদেশেও শুরু হয়ে গেছে ভিন্ন ধাঁচের চাঁদ রাত সংস্কৃতি। যা রূপ নিয়েছে আনুষ্ঠানিকতায়। নিউইয়র্ক সিটির রাস্তায় এখন অর্থের বিনিময়ে মেহেদি লাগাতে দেখা যাচ্ছে। আগে পরিবারের মেয়েরা ঈদের পূর্ব রাতে বাসায় বসে মেহেদি পড়তো। ঈদের নির্মল আনন্দ ভাগাভাগি করতো সৌখিনতার বশে। সেখানে ব্যবসায়িক কোন উদ্দেশ্য কাজ করে না। ঈদের আনন্দ সকল মুসলিম নারী-পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ ধনী দরিদ্র সবার জন্য। সমতা ও সার্বজনীনতাই ঈদের মূল মন্ত্র। ঈদের যেকোন আনন্দ উৎসব ইসলামি রীতি-নীতি মাফিক হওয়াই বাঞ্ছনীয়।
Posted ৭:১৭ পূর্বাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ০৫ মে ২০২২
Weekly Bangladesh | Weekly Bangladesh