শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫ | ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

Weekly Bangladesh নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত

অবৈধ ইমিগ্রান্টদের গ্রেফতার করবে টেক্সাস স্টেট সরকার

বাংলাদেশ রিপোর্ট :   |   বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

অবৈধ ইমিগ্রান্টদের গ্রেফতার করবে টেক্সাস স্টেট সরকার

মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশকারী ইমিগ্রান্টদের গ্রেফতার করবে টেক্সাস স্টেট সরকার। সীমান্ত অতিক্রম করে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী সন্দেহভাজন বিদেশি ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও ডিপোর্ট করার উদ্দেশ্যে টেক্সাস স্টেট সরকার সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অনুমতি দিয়ে একটি বিলে স্বাক্ষর করেছেন টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট। গভর্নর গ্রেগ বলেছেন, এই আইন ‘টেক্সাসে অবৈধভাবে বিদেশি প্রবেশের উত্তাল ঢেউ বন্ধ করবে’।

টেক্স্রাসের নতুন এ আইন ইমিগ্রেশনের ক্ষেত্রে ফেডারেল ডেমোক্রেট সরকারের প্রতি এক ধরনের চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে রিপোর্ট করা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, টেক্সাস এমন একটি আইন প্রণয়ন করেছে, যার ফলে সীমান্ত পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে বিদেশি নাগরিকদের অনুপ্রবেশকে বেআইনি এবং এ ধরনের কাজ কারাদণ্ডের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।

এসবি ৪ নামে এ আইনের কার্যকারিতা ২০২৪ এর মার্চ মাস থেকে শুরু হবে। উল্লেখ্য, মেক্সিকোর সঙ্গে টেক্সাসের সীমান্তের ১,২৫৪ মাইলের একটি অংশ ঈগল পাস ও ডেল রও’র মধ্যে ফেডারেল এজেন্টরা কেবল গত অক্টোবর মাসেই ৩৮ হাজার অবৈধ বিদেশিকে সীমান্ত অতিক্রমের সময় গ্রেফতার করেছে।

চলতি বছরের নভেম্বরে টেক্সাসের রিপাবলিকান-নেতৃত্বাধীন স্টেট অ্যাসেম্বলি ও সিনেট উভয় হাউসে এটি পাস হয়। বাস্তবে এই আইন বলে স্কুল ও হাসপাতাল ছাড়া অন্য সকল স্থানে অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করেছে বলে সন্দেহভাজন যে কাউকে থামাতে ও গ্রেফতার করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে।

গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট বিলটিতে স্বাক্ষর করার পর আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন অব টেক্সাস গত সোমবার বলেছে, আইনটি ‘ফেডারেল ইমিগ্রেশন আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। এছাড়া এ আইনে জাতিগত বর্ণবাদের ইন্ধন জোগানোর মতো উপাদান রয়েছে। তারা আইনটির কার্যকারিতা রহিত করার আদেশ চেয়ে আদালতে মামলা করার হুমকি দিয়েছে। টেক্সাসে রিপাবলিকানদের একটি ক্ষুদ্র অংশ, যারা স্টেট সরকারের নতুন পদক্ষেপের বিরোধী, তারাও বলেছে যে এ আইনটি জাতিগত বিদ্বেষ সৃষ্টি করবে।

ক্রমবর্ধমান অবৈধ ইমিগ্রেশন এবং প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সীমান্ত নীতি নিয়ে আমেরিকানদের চরম উদ্বেগের মধ্যেই টেক্সাস সরকার ইমিগ্রেশন বিরোধী কঠোর পদক্ষেপটি সামনে এনেছে। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি বলছে, অবৈধ ইমিগ্রান্টদের গ্রেফতার ও তাৎক্ষণিকভাবে ডিপোর্ট করার জন্য স্টেট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে এখতিয়ার দিয়ে প্রণীত টেক্সাসের নতুন আইন কিছুটা বিতর্কিত। কারণ, আমেরিকান ফেডারেল সুপ্রিম কোর্টের আগের একটি রায় রয়েছে যে, শুধুমাত্র ফেডারেল সরকারই ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত কোনো আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করতে পারে।

বিদ্যমান ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী, অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ফেডারেল ইমিগ্রেশন আইনে অপরাধ হিসেবে পরিগণিত হলেও এ ধরনের বিদেশিদের এসাইলাম আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে এবং তাদেরকে ইমিগ্রেশন বিচারকের সামনে এসাইলাম আবেদনের পক্ষে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও রাখা হয়েছে।

ইমিগ্রেশর বিচারকের রায়ের ভিত্তিতেই নির্ধারণ করা হয়ে থাকে যে অবৈধভাবে সীমান্তকারীদের মধ্যে কে বৈধতা লাভ করবে এবং কে ডিপোর্টেশনের উপযোগী। ফেডারেশ ইমিগ্রেশন আইনে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবে ইমিগ্রেশন আদালতে দেওয়ানী মামলা হিসেবে বিবেচিত। সীমান্ত অতিক্রম করে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ কোনো ফৌজদারি অপরাধ নয়। তবে টেক্সাসের নতুন আইন ইচ্ছাকৃতভাবে লংঘন করলে সম্ভাব্য শাস্তির মধ্যে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা ২ হাজার ডলার পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। এছাড়া গ্রেফতারকৃতদের যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত থেকে মেক্সিকোতে ফেরত পাঠানোর আদেশও দিতে পারেন বিচারক।

টেক্সাসের সদ্য পাস হওয়া আইনটিকে সমসাময়িককালে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্টেট কর্তৃক পাস করা জোরালো ইমিগ্রেশন আইন। উল্লেখ্য, বিশ্বের বহু দেশের নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করেন, যাদের মধ্যে অনেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে এই দেশটিতে প্রবেশ করে আইনি প্রক্রিয়ায় বৈধতা লাভ করে যুক্তরাষ্ট্রে আছেন। কিন্তু অবৈধভাবে বসবাস করছেন প্রায় দেড় কোটি বিদেশি নাগরিক। বিদেশিদের অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের প্রবাহ বন্ধ করতে টেক্সাসের আইনি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিচার বিভাগকে আহ্বান জানিয়েছে ২০জনের বেশি ডেমোক্রেট কংগ্রেসম্যান। যদিও টেক্সাস সরকার কীভাবে আইনটি প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করছে তা স্পষ্ট নয়। এছাড়া অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে পুনঃপ্রবেশের শাস্তি হিসেবে ২০ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে।

তবে তা এখনো স্পষ্ট নয়। নিউইয়র্ক টাইমসের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে যে, টেক্সাসের নতুন আইনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে যে, ইমিগ্রেশন বিষয়ে ফেডারেল সরকার ও টেক্সাসের মধ্যে আইনি লড়াই অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে।

সীমান্তে ইমিগ্রান্ট সঙ্কট বাইডেনের পুন:নির্বাচনে বাধা হতে পারে

যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্তে ক্রবর্ধমান ইমিগ্রান্ট সঙ্কট আগামী বছর অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের পুন:নির্বাচন প্রচারাভিযানের কো-চেয়ার টেক্সাসের ডেমোক্রেট প্রতিনিধি ভেরোনিকা এসকোবার। গত মঙ্গলবার প্রকাশিত পলিটিকোর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে ুপ্রবেশকারী ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং অবৈধ ইমিগ্রেশন নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার কারণে আমেরিকানদের মধ্যে সাধারণভাবে যে হতাশার সৃষ্টি হয়েছে, তা ২০২৪ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেটদের চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভেরোনিকা বলেছেন, “জনগণ চরমভাবে হতাশ। তারা শৃঙ্খলঅ দেখতে চায়। তারা দেখতে চায় যে সরকার পরিস্থিতি সামাল দিক। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ঠিক এই মুহূর্তে ডেমোক্রেটরা ক্ষোভে-দু:খে জ্বলছে এবং এহেন পরিস্থিতি জনগণকে ভাবতে বাধ্য করছে যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কোনোভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।”

ইউএস কাস্টমস এন্ড বর্ডার প্রটেকশনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী তাদের এজেন্টরা ২০২৩ সালের ১১ মাসে মেক্সিকো সীমান্তে ২৪ লাখ ৭০ হাজার বিদেশির মুখোমুখি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু অক্টোবর মাসেই তারা ২ লাখ ৪০ হাজারের চেয়ে বেশি ইমিগ্রান্টকে নথিভূক্ত করেছে। এই বিপুল সংখ্যক ইমিগ্রান্টের একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে এবং অবশিষ্ট ইমিগ্রান্টের এসাইলাম আবেদন গ্রহণ করে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে সীমান্তের অপর পারে মেক্সিকোতে অবস্থান করতে বলা হয়েছে। তাদের অনে যেসব স্টেট ও সিটির অর্থনীতি চাপের মধ্যে রয়েছে, ইমিগ্রান্টদের এই বিপুল প্রবাহ সেইসব স্টেট ও সিটির জন্য ইমিগ্রান্ট পরিস্থিতি সামলানো ইতোমধ্যে কঠিন হয়ে পড়েছে। সীমান্তবর্তী স্টেটগুলোর গভর্নরগণ অনেক ক্ষেত্রে নবাগত ইমিগ্রান্টদের তাদের স্টেটের বাইরে পাঠিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। টেক্সাসের রিপাবলিকান গভর্নর গ্রেগ অ্যাবোট গত প্রায় দুই বছর যাবত তার স্টেটে নবাগত ইমিগ্রান্টদের ঠাঁই না দিয়ে সরকারি খরচে তাদেরকে পাঠিয়ে দিয়েছেন ডেমোক্রেট নিয়ন্ত্রিত স্টেটগুলোতে। টেক্সাস থেকে গত বছরের মে মাস থেকে এ পর্যন্ত দেড় লাখের বেশি নবাগত ইমিগ্রান্টকে নিউইয়র্ক সিটিতে পাঠানো হয়েছে।

ভেরোনিকা এসকোবার বিচলিত যে, সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ডেমোক্রেটরা যথার্থই বিচলিত। নিউইয়র্ক ও ইলিনয়ের মতো স্টেটগুলোর বড় বড় সিটিগুলোতে নবাগত ইমিগ্রান্টদের ভিড় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যে, খোদ ডেমোক্রেটরাই ইমিগ্রান্টদের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের সুরে কথা বলতে শুরু করেছেন। তিনি বলেন, মৌলিক সমস্যা হচ্ছে যে, জনগণ ইমিগ্রান্ট পরিস্থিতির সহজ সমাধান চায়, কিন্তু ইমিগ্রেশন ইস্যু যেমন জটিল, এর সমাধানও জটিল। সমাধানের সহজ কোনো উপায় নেই।

Posted ১:০৩ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

Weekly Bangladesh |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০৩১  
Dr. Mohammed Wazed A Khan, President & Editor
Anwar Hossain Manju, Advisor, Editorial Board
Corporate Office

86-47 164th Street, Suite#BH
Jamaica, New York 11432

Tel: 917-304-3912, 718-523-6299 Fax: 718-206-2579

E-mail: [email protected]

Web: weeklybangladeshusa.com

Facebook: fb/weeklybangladeshusa.com

Mohammed Dinaj Khan,
Vice President
Florida Office

1610 NW 3rd Street
Deerfield Beach, FL 33442

Jackson Heights Office

37-55, 72 Street, Jackson Heights, NY 11372, Tel: 718-255-1158

Published by News Bangladesh Inc.